শিশু মৃত্যুর ঘটনায় তদন্তকারী দলের কাছে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে মুখ খোলায় অসুস্থ শিশু-সহ এক মহিলাকে পরদিনই ছুটি দিয়ে হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। শনিবার ঘটনাটি ঘটে বালুরঘাট হাসপাতালে। ওই মহিলার নাম পূর্ণিমা পাহান। শ্বাসকষ্টে ভোগা তাঁর আড়াই বছরের শিশু সন্তানকে নিয়ে গত মঙ্গলবার থেকে ওই ওয়ার্ডে শিশুকে নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। বুধবার রাতে চিকিৎসার অবহেলায় হিলির বাসিন্দা সাবিত্রী মার্ডির ৬ মাসের শিশুপুত্রের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জনতার বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে হাসপাতাল চত্বর। বিক্ষোভ ও পথ অবরোধের জেরে তুমুল উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের সাহায্য নিয়ে হাসপাতাল সুপারকে নিরপেক্ষ তদন্তের আশ্বাস দিয়ে অবস্থা সামলাতে হয়। জেলাশাসকের নির্দেশে পরদিন সুপার বুদ্ধদেব মন্ডল তদন্ত রিপোর্ট পাঠান। ওই রিপোর্ট একপেশে বলে অভিযোগ ওঠে। তদন্ত রিপোর্টে নানা অসঙ্গতি থাকায় জেলাশাসক তা ফেরত পাঠিয়ে ফের প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করে পূর্ণতদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। গত শুক্রবার সাবিত্রী দেবীর মৃত শিশু সুফলের ওয়ার্ডেই থাকা পূর্ণিমা দেবীর বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেন তদন্তকারীরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, পূর্ণিমা দেবী তাঁদের কাছে অভিযোগ জানান ওই রাতে সাবিত্রী দেবী তার বাচ্চার অবস্থার অবনতি দেখে কান্নাকাটি করছিলেন। কিন্তু ওই সময় কোনও চিকিৎসক ও নার্সকে শিশুর চিকিৎসা করতে দেখা যায়নি। পূর্ণিমা দেবীর ওই বয়ানের পরই চিকিৎসকেরা তাঁর শিশু গুরুতর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বলে লিখে মালদহ হাসপাতালে ‘রেফার’ করে ছুটি দিয়ে দেন বলে অভিযোগ। সাবিত্রী দেবীর সন্তান মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসক অচিন্ত্য বিশ্বাসকে বাঁচাতে তাঁর সহকর্মী চিকিৎসক সমীরণ মিশ্র এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জেলাশাসকের কাছে রবিবার অভিযোগ পৌঁছলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। সমীরণবাবু মুখ খুলতে চাননি। হাসপাতাল সুপার বলেন, “উর্ধ্বতন কর্তাদের নির্দেশে কথা বলা বারণ।” জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী বলেন, “অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করে দেখতে বলেছি। এমন হওয়া উচিত নয়।” বালুরঘাট ব্লকের চকহাই গ্রামের বাসিন্দা পূর্ণিমা দেবী বলেন, “ওই দিন যা দেখেছি, সেটাই বলেছি। এ বার আমি কোথায় যাব, কিছুই বুঝতে পারছি না।” |