রাঢ় বঙ্গের প্রাচীন জনপদ সোমড়া। প্রাচীনতার বহু নিদর্শন রয়েছে এখানে। বৈদ্যপ্রধান গ্রামটিতে রামশঙ্কর ছিলেন ঢাকার দেওয়ান। তিনি ১৬৭৭ শকাব্দে নবরত্নশোভিত মন্দির তৈরি করে ‘মহাবিদ্যা’ নামে জগদ্ধাত্রী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। এটিই বঙ্গের প্রথম জগদ্ধাত্রী মন্দির। সোমড়ার সুখড়িয়া গ্রামটি আদর্শ গ্রাম রূপে পরিচিত। ইতিহাস বলে, ভাগীরথীর তীরে এ অঞ্চলটি তন্ত্র সাধনার ক্ষেত্র ছিল। গ্রামের মাঝে গঙ্গার তীরে প্রাচীন বটগাছের তলায় প্রতিষ্ঠিত মন্দিরে সিদ্ধকামের দেবী ‘সিদ্ধেশ্বরী মাতা’ রয়েছেন। ওই প্রাচীন মন্দিরটি স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় সংস্কৃত হয়ে এক দর্শনীয় রূপ পেয়েছে।
সোমড়ার সুখড়িয়া গ্রামে সংস্কৃত সিদ্ধেশ্বরী মন্দির। ছবি: কাজল মল্লিক।
উলার মুস্তৌফি বংশের বীরেশ্বর মুস্তৌফি ১৭৩৫ শকাব্দে নির্মাণ করেন ‘আনন্দময়ী মন্দির’। পঁচিশটি চূড়া বিশিষ্ট সত্তর ফুট উঁচু মন্দিরে বেদির উপর মহাদেব মাথার উপর হাত রেখে দু-পা ভাঁজ করে শায়িত। বুকের উপর পদ্মাসনে মা-কালী। রানি রাসমণি এই মন্দিরের টেরাকোটার কাজ দেখে আপ্লুত হন। এর অনুকরণেই গড়ে তোলেন দক্ষিণেশ্বরের মন্দির। পাশেই নিস্তারিণী কালী মন্দির। ১২৪৫ বঙ্গাব্দে নির্মিত। শ্বেতপাথরের পদ্মফুলের উপর শায়িত শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে দেবী নিস্তারিণী। আর একটু এগিয়ে ‘হরসুন্দরী কালী’ মন্দির। স্টিমার ঘাটের কাছে মধ্যপাড়ায় সংস্কার করা মন্দিরে আছেন প্রায় সাতশো বছরের প্রাচীন শিব ‘ভুজঙ্গভূষণ’। সব মিলিয়ে সোমড়ায় প্রাচীনতার অনেক নিদর্শন আছে। সঙ্গে আছে গঙ্গাবক্ষে ‘সবুজ দ্বীপ’। হুগলি জেলাপরিষদের অধীনে বলাগড় পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে সবুজ দ্বীপকে সুন্দর করে তুললে এই প্রাচীন সোমড়া এক অনবদ্য পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।
অশোক কুমার কর্মকার। সোমড়া, হুগলি
অবহেলায় জয়রামবাটি
বাঁকুড়া জেলার সীমান্তে অবস্থিত জয়রামবাটি মা সারদাদেবীর জন্মস্থান। এখানে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন নির্মাণ করেছে বিশাল মন্দির। জয়রামবাটিতে আছে নরনারায়ণ মন্দির, সারদাদেবী পূজিত সিংহবাহিনীর মন্দির, পবিত্র মায়ের দিঘি ইত্যাদি। সংলগ্ন সিহড় গ্রামে মায়ের মাতুলালয়। এখানে আছে বিখ্যাত শান্তিনাথের মন্দির, যেখানে তিন বছরের সারদা নামসংকীর্তন শুনতে আসা শ্রীরামকৃষ্ণদেবকে ভাবী স্বামী রূপে দেখিয়েছিলেন। কিন্তু এই মহাতীর্থ নানা সমস্যায় জর্জরিত। জয়রামবাটিতে আসার এক মাত্র পাকা রাস্তাটির অবস্থা শোচনীয়। কামারপুকুর থেকে বৈতল পর্যন্ত রাস্তাটিতে অসংখ্য গর্ত আছে। বৃষ্টি হলে এ সব গর্তে জল জমে যায়। অনেক সময় বিকল হয়ে যাওয়া বাস-লরির জন্য রাস্তাটাই বন্ধ হয়ে যায়। অধিকাংশ দূরপাল্লার বাস আরামবাগ থেকে ভায়া জয়রামবাটি হয়ে কোতুলপুর না যাওয়াতে সাধারণ মানুষ ও তীর্থযাত্রীদের অসুবিধে হয়। বাসে করে জয়রামবাটি আসতে হলে নামতে হয় মায়ের ঘাট স্টপেজ-এ। হাজার হাজার মানুষ এখানে আসেন। অথচ নেই পানীয় জলের উপযুক্ত ব্যবস্থা এবং শৌচাগার। মায়ের ঘাট থেকে মন্দিরে যেতে মিনিট দশেক পাকা রাস্তায় হেঁটে যেতে হয়। রাতে এই রাস্তায় আলোর ব্যবস্থাও নেই। এই পবিত্র তীর্থস্থানের এ রকম বেহাল অবস্থা হওয়া কখনই কাম্য নয়। বিদেশিরা আসেন এখানে দর্শন করতে। তাঁরা কোন ধারণা নিয়ে যাচ্ছেন বলুন তো?
সুব্রত মাজি। সিহড়, বাঁকুড়া
পাণ্ডারাজ বন্ধ হোক
তারকেশ্বর মন্দিরে প্রতি দিন অসংখ্য মানুষ আসেন। কিন্তু ভক্তি-শ্রদ্ধার জায়গায় এঁরা পাণ্ডাদের দ্বারা প্রতারিত হন। পাণ্ডারা পূজার সংকল্প করানোর জন্য যেমন খুশি দক্ষিণা নেয়। অথবা তাদের নির্ধারিত দোকান থেকে প্রসাদ ও অন্যান্য জিনিস কিনতে বাধ্য করে। এর ফলে মানুষের মনে বিরূপ ধারণা জন্মায়। পাণ্ডারাজ বন্ধ করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ির মতো ব্যবস্থা করে তারকেশ্বরের মর্যাদা বৃদ্ধি করা হোক।
প্রেমনাথ বেরা। । আমতা, হাওড়া
ঘেঁটু উৎসব
ফাল্গুন সংক্রান্তিতে পশ্চিমবাংলায় এখনও ঘেঁটু উৎসব হয়। এটি আসলে শিব-পার্বতীর পুজো। ঝুড়ির উপর এক পাশে গোবরের সাহায্যে কড়ি দিয়ে চোখ-মুখ ও দেহের অবয়ব দান করে বিগ্রহ তৈরি করে এই পুজো করা হয়। ঝুড়ির ভেতর ঘেঁটু ফুল সাজিয়ে দেওয়া। দুই দিন ধরে এই উৎসব হয়। হাওড়ার বিভিন্ন অঞ্চলে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ঘেঁটু ফুল সংগ্রহ করে। এরাই ঘেঁটু পূজারি। গৃহস্থের ঘরে ঘরে ঘুরে এরা ঘেঁটু পূজার গান গায়। সারিবদ্ধ ভাবে বালক-বালিকাদের হাতে ‘ঘেঁটু পূজা’র লাইন দেখলে মনে হয় ঘেঁটু পূজার মিছিল চলেছে।
শ্রীমন্ত পাঁজা। পাঁচলা, হাওড়া
নতুন বিপদ
ইদানিং এক নতুন সমস্যা দেখা দিয়েছে। গ্যাসের উনুন এসে যাওয়ায় ঘুঁটের প্রয়োজন হয় না। গোবর পথেই পড়ে থাকে। তাতে মাঝেমধ্যে পা পড়ে গিয়ে আছাড় খায় পথিক। বর্ষাকাল বা লোডশেডিং হলে অবস্থা আরও করুণ হয়। পুরসভার সাফাইকর্মীরা পথঘাট, পরিষ্কার করলেও গোবরগুলো তুলে নিলে এই নতুন বিপদ থেকে পথচারীরা রেহাই পাবেন।
কৃপাপদ বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমান
এই বিভাগে চিঠি পাঠান সম্পূর্ণ নাম ও ঠিকানা উল্লেখ করে। আমাদের চিঠি, সম্পাদকীয় বিভাগ,
আনন্দবাজার পত্রিকা প্রাঃ লিঃ,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১
অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website
may be copied or reproduced without permission.