|
|
|
|
রক্ষণাবেক্ষণ নেই ফালাকাটার হাটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ফালাকাটা |
বছরের পর বছর ধরে আবেদন নিবেদন করেও ফালাকাটা হাটের প্রয়োজনীয় সংস্কার না-হওয়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার কারণে একপশলা বৃষ্টি হলেই গোটা হাট জলকাদায় ছেয়ে যায়। হাট, মাছবাজার থেকে সবজিবাজার সর্বত্র নোংরা কাদাজল পেরিয়ে লোকজন বাজার করতে বাধ্য হন। পানীয় জল থেকে শৌচালয়ের তেমন কোনও ব্যবস্থা নেই। শতবর্ষ প্রাচীন এই হাটে কৃষকরা আজ বসার জায়গা পান না। দিনের পর দিন প্রশাসনের চোখের সামনে হাটের জায়গা বেআইনি ভাবে দখল করে দোকান ঘর তৈরি হওয়ায় বসার জায়গা না পেয়ে বহু কৃষক অন্যান্য হাটের দিকে চলে যাচ্ছেন। হাটে কৃষকের ভিড় কমে যাওয়ায় মার খাচ্ছেন ফালাকাটা শহরের ব্যবসায়ীরা। দ্রুত হাটটির আমূল সংস্কার না হলে বড় ধরনের আন্দোলনে নামার কথা ভাবছে কয়েকটি সংগঠন। জেলা পরিষদের সভাধিপতি দীপ্তি দত্ত বলেন, “হাট দখলদার মুক্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। হাটে আসা লোকজন নিকাশি নালায় ব্যাপক হারে আবর্জনা ফেলার কারণে সেগুলি বুজে গিয়েছে। নালা নিয়মিত পরিষ্কার করার টাকা বরাদ্দ না থাকার পাশাপাশি নালার উপর স্ল্যাব তৈরির জন্য বরাদ্দ না থাকায় সমস্যা হয়। হাটের বেহাল অবস্থায় উদ্বিগ্ন ফালাকাটার বিধায়ক অনিল অধিকারী। তিনি বলেন, “কৃষকরা হাটে এসে যাতে পণ্য বিক্রি করতে পারেন তা দেখা প্রয়োজন। নিকাশি নালাগুলি সংস্কার ও পরিষ্কার করা প্রয়োজন।” ফালাকাটার বাসিন্দারা জানান, একসময় সপ্তাহে দুই দিন বসা ফালাকাটা হাটের উপর নির্ভর করে থাকতেন এলাকার ব্যবসায়ীরা। আশেপাশের গ্রামগঞ্জ থেকে আসা কৃষকরা পণ্য বিক্রি করার পরে প্রয়োজনীয় জিনিস ফালাকাটার দোকানগুলি থেকে কিনতেন। মঙ্গল ও শুক্রবার হাটের দিন জনসমাগমে গমগম করত। এক দশক ধরে যে ভাবে প্রশাসনের উদাসীনতায় হাটের কৃষকদের জন্য বরাদ্দ জায়গা দখল হয়েছে তাতে তাঁদেরই অন্যান্য হাটের দিকে চলে যেতে হচ্ছে। কৃষক নির্ভর হাটের আজ ম্যাড়ম্যাড় অবস্থা। হাটের জায়গা জবরদখল হবার কথা স্বীকার করে ফালাকাটা হাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক ভরত সরকার বলেন, “ফালাকাটা হাটের অবস্থা নিয়ে উদাসীন জেলা পরিষদ। বহু বার হাট সংস্কারের জন্য বলেছি। লাভ হয়নি।” গুয়াবরনগর গ্রামের কৃষক গজেন বর্মন বলেন, “খোলা আকাশের নিচে হলেও একসময় ফালাকাটা পণ্য নিয়ে বেচাকেনা করতে পারতাম। এখন সে জায়গা দখল হয়েছে। রাস্তার ধারে বসতে হয়। ঘিঞ্জি এলাকায় ভ্যানরিকশা ঢোকে না। কয়েক বছর ধরে ওই হাটে না গিয়ে ধূপগুড়িতে যাচ্ছি।” ফালাকাটার বাসিন্দা শিক্ষক রমাপ্রসাদ নাগ বলেন, “ফালাকাটা হাটের অবস্থা ভয়ঙ্কর। নিয়মিত আমাদের জলকাদা পেরিয়ে বাজার করতে হয়। যাতায়াতের জন্য অনেকে আলাদা জুতো ব্যবহার করছেন।” |
|
|
|
|
|