বসিরহাটে যুব কংগ্রেস নেতা পরিমল সর্দার খুনে জড়িত অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত অশোক বৈরাগী এবং উৎপল সর্দার তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে কংগ্রেসের দাবি। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় বসিরহাট, স্বরূপনগর হাড়েয়ার বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি বসিরহাট, ভ্যাবলা ও অনন্তপুর স্টেশনে অবরোধ করেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকেরা। তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছেন, ধৃত ওই যুবক তাঁদের কর্মী নন।
শনিবার সন্ধ্যায় বসিরহাট স্টেশন সংলগ্ন টাকি রোডে দুষ্কৃতীরা বোমা মেরে, গুলি করে খুন করে পরিমলকে। ওই রাতেই স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই দু’জনকে ধরা হয়। উত্তর ২৪ পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস (সদর) জানিয়েছেন, নিহতের পরিবারের তরফ থেকে ১২ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। পুলিশের অনুমান, এলাকা দখল এবং প্রোমোটারি নিয়ে রেষারেষিতে খুন হয়েছেন বসিরহাট স্টেশন সংলগ্ন ২ নম্বর রাজীব কলোনির বাসিন্দা পরিমল। |
বসিরহাটে যুব কংগ্রেসের নেতা খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য। রবিবার বিধান ভবনে এ কথা জানান তিনি। তৃণমূলই এই খুনের পিছনে রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কৌশিক মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই খুনের প্রতিবাদে আজ, সোমবার রাজ্য জুড়ে ‘কালা দিবস’ ও ‘ধিক্কার দিবস’ পালন করা হবে, বিকেলে কলকাতায় প্রতিবাদ-মিছিলও হবে। রবিবার কৌশিকবাবু ছাড়াও প্রদেশ কংগ্রেস নেতা কনক দেবনাথ, শুভঙ্কর সরকার, নির্মলেন্দু ভট্টাচার্য প্রমুখ বসিরহাটে আসেন। ময়না-তদন্তের পরে দেহ নিয়ে মিছিল হয়। শুভঙ্করবাবুর অভিযোগ, “রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে। তৃণমূলের লোকজন আমাদের নেতা-কর্মীদের উপরে হামলা করছে। বাম আমলেও এ সব হয়েছে। এই কি পরিবর্তন!’’ পরিমলের বাবা দুলালবাবুও বলেন, “ছেলে মানুষের জন্য কাজ করত। সেটাই তৃণমূলের ছেলেদের সহ্য হচ্ছিল না। তাই ওকে খুন করা হল।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “এখন অনেকেই নিজেদের তৃণমূূল কর্মী বলে দাবি করছেন। ওই ঘটনায় দলের কেউ যুক্ত নন।” তাঁর দাবি, “আমরাও চাই অপরাধীরা শাস্তি পাক। দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুন হতে হয়েছে ওই কংগ্রেস নেতাকে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বসিরহাট দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের যুব কংগ্রেস সম্পাদক পরিমল স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরির পাশাপাশি এলাকায় প্রোমোটারিতেও যুক্ত ছিলেন। সমাজসেবামূলক নানা কাজও করতেন। এলাকায় কর্তৃত্ব বজায় রাখা এবং প্রোমোটারি নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পরিমল ও তাঁর অনুগামীদের রেষারেষি চলছিল। দু’দলই অবশ্য সে কথা মানেনি। ধৃত অশোক বৈরাগী মাস ছয়েক আগে নিজের ঘরে গুলিবিদ্ধ হন। সেই ঘটনায় পরিমল ও তাঁর অনুগামীদের জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে।
এ দিন দেহ নিয়ে মিছিলের সময়ে
স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে, এই অভিযোগে এ দিন বসিরহাট থানায় গিয়ে আইসি-র অপসারণেরও দাবি তোলেন বাসিন্দারা। |