|
|
|
|
ঘরে ফেরানোর চেষ্টা ধাক্কা খেল মানিকপাড়ায় |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
শাসক দল তৃণমূলের তরফে ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরানোর চেষ্টা ধাক্কা খেল প্রথম দিনই। রবিবার এই ঘটনা ঘটে ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া অঞ্চলের মুড়াবনি-শালপাতড়া গ্রামে। উপযুক্ত থাকার জায়গা (বেশির ভাগ পরিবারের বাড়িই ক্ষতিগ্রস্ত) ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা না-হওয়া পর্যন্ত রাতে গ্রামে থাকার ঝুঁকি নিতে রাজি নন ঘরছাড়ারা। তৃণমূলের ঝাড়গ্রাম ব্লক (গ্রামীণ) সভাপতি অনিল মণ্ডলের দাবি, “ঘরছাড়াদের গ্রামে থাকার ‘সাহস’ যোগাতে দলের তরফে এ দিন এলাকায় মোটর বাইক মিছিল করা হয়েছে।” ঘরছাড়া পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে এই মিছিল এলাকা পরিক্রমা করে মুড়াবনি-আখড়াশোল গ্রামে শেষ হয়।
স্থানীয় তৃণমূলের একাংশের তরফে এদিন সকাল থেকে দাবি করা হয়, পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরানো হচ্ছে। আরও দাবি করা হয়, ঝাড়গ্রামের বিডিও সুদীপনারায়ণ ওঝার উপস্থিতিতে ঘরছাড়ারা গ্রামে ফিরবেন। যদিও বিডিও-র বক্তব্য, “ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরাতে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। প্রশাসনিক উদ্যোগে এ ধরনের কোনও কর্মসূচির কথা আমার জানা নেই।” এমনকী দলীয় এই কর্মসূচি সম্পর্কে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও বিন্দুবিগর্স জানতেন না বলে দাবি করেছেন। দলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “দলীয় উদ্যোগে ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরানোর ব্যাপারে আমাকে কেউ কিছু জানাননি। খোঁজ নিচ্ছি।”
২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে মুড়াবনি গ্রামের তৃণমূল কর্মী খোন্দকার মেহফুজ আলি ও তাঁর সঙ্গী নির্মল নায়েককে ‘পুলিশের চর’ তকমা দিয়ে খুন করেছিল মাওবাদীরা। আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ে ৫০টি পরিবার। গত বছর মার্চে ঘরে ফিরেছিলেন মুড়াবনির আমেনা বিবি। বৌদি মোমেনা বেওয়ার বাড়িতে ওঠেন। ওই দুই মহিলাকে তুলে নিয়ে যায় মাওবাদী-কমিটির লোকেরা। দিন পাঁচেক পরে রামরামার জঙ্গলে তাদের পচাগলা দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তারপর আর গ্রামে ফেরার সাহস পাননি ঘরছাড়ারা। গত ৯ মার্চ পুলিশ-প্রশাসনের কাছে গ্রামে ফেরার আর্জি জানিয়ে স্মারকলিপি দেন তাঁরা। নিহত মেহফুজ আলির স্ত্রী কানিজ ফাতেমা এ দিন গ্রামে এসেছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িঘরের অবস্থা দেখতে। তিনি বলেন, “তৃণমূলের উদ্যোগে ঘরছাড়াদের ফেরানোর কথা আমার জানা নেই। আমি নিজেই বাড়িঘরের অবস্থা দেখতে কয়েক ঘন্টার জন্য গ্রামে গিয়েছিলাম।” |
|
|
|
|
|