আসন্ন পুর-নির্বাচনে, ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত রাখার পরিকল্পনা করেছিল নাগাল্যান্ড সরকার। কিন্তু, নাগা ‘হো হো’ গুলির (উপজাতি পরিষদ) আপত্তিতে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণের বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যদিও প্রবল প্রতাপান্বিত হো হো-কর্তাদের ফতোয়া অগ্রাহ্য করেই নাগা মহিলাদের সংগঠন ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি অন উওমেন রিজার্ভেশন’ জানিয়ে দিয়েছে, পুর নির্বাচনে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত সব ক’টি আসনেই প্রার্থী দেওয়া হবে।
এপ্রিল মাসে নাগাল্যান্ডে পুর ভোট হওয়ার কথা। ২০১০ সালেই নাগাল্যান্ড বিধানসভায় মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণের বিলটি পাশ হয়ে গিয়েছে। সেই মতো পুর নির্বাচনে মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষিত রাখার কথা ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু, শক্তিশালী নাগা হো হো সাফ জানিয়েছে, নাগা সমাজ ও ঐতিহ্যের পরিপন্থী এই আইন তারা মানবে না। হো হো সভাপতি ভিভিলেতুও কিয়েউহুয়ো বলেন, “সংবিধানের ৩৭১ (ক) ধারা অনুযায়ী, নাগারা প্রচলিত সামাজিক রীতি ও উপজাতীয় নিয়ম মেনে চলার অধিকারী। সে ক্ষেত্রে, জোর করে সংরক্ষণ আইন চাপানো হচ্ছে কেন? আমরা নারী অধিকারের বিরোধী নই। নাগা সমাজে, ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো, মেয়েরা অত্যাচারিতাও নন। তাঁরা স্বাধীন। মেয়েরা ভোটে দাঁড়ান। জিতে আসুন। সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।”
নাগা ‘হো হো’র বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছে ‘ইস্টার্ন নাগা পিপল্স অরগানাইজেশন’। কিফিরে, লোংলেং, মন, তুয়েংসাং জেলার নাগারাও সংরক্ষণের বিরোধী। আও উপজাতি পরিষদ হো হোর বক্তব্য, সরকার, আইন সংশোধন করুক। সংরক্ষণের মতো বিষয় নাগা ঐতিহ্যের সঙ্গে মোটেই খাপ খায় না।
তবে, নাগা মাদার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা রোজমেরি জুভিচুর দাবি, “মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের বিষয়টি আন্তর্জাতিক। আদালত ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, ৭৪ নম্বর সংশোধনী অনুযায়ী, সংরক্ষণের অধিকার ৩৭১(ক) ধারার উপরে। পুর নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত রাখা প্রশাসনিক বিষয়। এর সঙ্গে, নাগা ঐতিহ্য বা সামাজিক রীতির সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।” আসন্ন নির্বাচনে, অন্তত ৭৮ জন মহিলা প্রার্থী হতে চলেছেন। কিন্তু, খোদ কোহিমার গ্রামসভা জানিয়েছে, সংরক্ষণ নীতি প্রত্যাহার না করলে, তারা, নির্বাচন হতেই দেবে না। |