|
|
|
|
|
|
রবিবাসরীয় গল্প |
মানুষ কারে কয় |
কৃষ্ণা মজুমদার |
মুদিখানার হরেন সাহা বলল, ‘নুন নাই গো, কাল রাতে পলাশদারা পুরো বস্তা তুলে নিয়ে গিয়েছে।’ বলেই অদ্ভুত ভাবে তাকাল রথীন। ঘুরে গেল ওর চোখ বাকি চার জনের মুখ ছুঁয়ে। এলাকার মুদি হরেন সাহার কথাটা শুনেই ওদের চার জনের চোখ দপ করে জ্বলে উঠে আবার নিভে গেল। মাথা নিচু করল সুচাঁদ। তীক্ষ্ণ চোখে দেখছে নীলেশ রথীনকে। বাবুলাল দু’হাতের পাতায় মুখ ঢাকল। উত্তম ফস করে দেশলাই জ্বেলে বিড়ি ধরাল। একমুখ ধোঁয়া পাক খেতে খেতে মিশে গেল বাতাসে। এ ভাবে একটু সময় চলে গেলে নীলেশ বলল, কেসটা কী বল তো রথীন, হঠাৎ নুনের কথা?
হো হো করে হেসে উঠল রথীন, আবার হঠাৎ থেমেও গেল। নুন-কেসটা গ্রামের সবাই জানে। তবু চার পাশটা ভাল করে দেখে নিয়ে বলল, সবই তো জানিস,
কেন ন্যাকা সাজছিস। ক’দিন না হয় বর্ধমানে হস্টেলে থাকছিস। ভিটে তো এই গ্রামেই, নাকি?
তো? |
|
তো কী? হারামির বাচ্চারা সরবেতা উজাড় করে বস্তা বস্তা নুন তুলে নিল নারকেল গাছে দেবে বলে? বলল উত্তম মাহাতো।
ওরা বসে আছে গ্রামের পুব প্রান্তে এক ভাঙাচোরা শীতলা মন্দিরের চাতালে, জাম-কাঁঠালের ছায়ায়। উত্তম মাহাতোর বাড়ি এ দিকটায়। দুটো সাইকেল আর একটা স্কুটার গাছের ছায়ায় দাঁড় করানো। স্কুটারটা রথীনের। মেদিনীপুর কলেজের কমার্স গ্র্যাজুয়েট রথীন। সচ্ছল পরিবার ওদের। বাবা-দাদা রেলে চাকরি করে। পুকুর-বাগানসহ কিছু ধানজমিও আছে। রথীন প্রয়োজনে সে সব দেখাশোনা করে।
নীলেশ বাড়ির একমাত্র ছেলে। বর্ধমান ইউনিভার্সিটি থেকে বাংলায় এম এ করছে। ওর বাবা হলদিয়াতে স্কুল শিক্ষক।
সুচাঁদ কলকাতার এক ডাক্তারের গাড়ি চালায়। বাড়িতে মা-দাদা-বউদির সংসার। ডাক্তারবাবু ক’দিনের জন্য বিদেশে যাওয়ায় তার ছুটি। গ্রামে এসেছে তাই।
এদের মধ্যে বাবুলাল একটু ছন্নছাড়া। খুব ছোটবেলায় বাবাকে হারিয়েছে। মা ধান ঝাড়ে, গোবর কুড়োয়, শাক-পাতা তোলে। কখন কোথায় থাকে বাবুলাল ঠিক নেই। কাটোয়ার দিকে কোনও এক আখড়ায় বাউল শেখে। ভারী মিষ্টি গলা। এ অঞ্চলে কোনও অনুষ্ঠান হলে ডাক পড়ে ওর। গান গেয়ে কখনও-সখনও দু’চার টাকা রোজগার হয়।
নীলেশ কপালে ভাঁজ ফেলে বলল, তা তুই হঠাৎ এ ভাবে বললি কেন? আমরা তো কিছুই করতে পারছি না!
জানি না রে, মনে হল বললাম। একটু পরেই আবার বলে উঠল ও, শোন, বাগানে লোক খাটছে, দাদার মনে হল নারকেল গাছগুলোর গোড়ায় নুন-খোল দেবে। হরেন সাহার দোকানে গিয়েছিল এক বস্তা নুন কিনতে। তখন হরেন সাহা
বুঝলাম, তোর দাদা বাড়িতে এসে কথাগুলো বলেছে।
হাতে হাতে বিড়ি। আলো-আঁধারিতে ধোঁয়ার কুণ্ডলী পাক খেয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। মন্দিরের পিছনে থমকে আছে সকাল দশটার রোদ। কালো শান বাঁধানো মন্দির চাতাল। ভাঙাচোরা খড়ের ছাউনি। ভিতরে মাটি ধুয়ে যাওয়া কাঠামোর মা শীতলা। চাল থেকে হঠাৎ কখনও লাফিয়ে পড়তে পারে বিষাক্ত সাপ, কিংবা মুখ বাড়াতে পারে মেঝের ফাটল থেকে। পিছনে কিছুটা জঙ্গল, তার ও-পাশে আমবাগান। ডাইনে-বাঁয়ে ধানখেত, আলপথ। জায়গাটা নির্জন। একটা সরু পায়ে চলা পথ বাদে জঙ্গলে ঘেরা।
হঠাৎ কিছু ভাবল নীলেশ। চোখ দুটো উজ্জ্বল হয়ে উঠল ওর। হাতের বিড়ি ছুড়ে ফেলে বলল, অপূর্ব!
কী? প্রায় সমস্বরে বলল বাকিরা।
পারবি, যা বলব?
কী বলবি তো? বলল রথীন।
একটা নিউক্লিয়াস! ‘নুন নাইগো, কাল রাতে পলাশদারা পুরো বস্তা তুলে নিয়ে গেছে।’ একটা নাটক! আমরা সবাই জানি। মুখ খুলতে পারি না। এ বার মুখ খুলব, নাটকের আঙ্গিকে?
ভুলে যাস না, মাসে মাসে তোলা দিয়ে বেঁচে আছি আমরা! বলে রথীন।
ঠিক তাই, এই রেজিমেন্টেড পার্টির অত্যাচার আর সহ্য করা যাচ্ছে না। পরিবর্তন চাই, একটা পরিবর্তন!
তো স্ক্রিপ্ট কে লিখবে?
নো স্ক্রিপ্ট। আমরা সবাই এই নাটকের কুশীলব। আমরা সবাই এই অত্যাচারের, দাদা-ইজমের শিকার। সুতরাং...
উত্তম, সুচাঁদ, বাবুলাল চুপ করে দাঁড়িয়ে। চোখে-মুখে কৌতূহল ওদের। নীলেশ বলে, কী রে, তোরা কী বলিস?
স্ক্রিপ্ট ছাড়া, আবার শাসক দলের খুন-ধর্ষণ-মাস্তানি নিয়ে নাটক একটু যেন দিশেহারা ভাব ওদের চোখে-মুখে। বাবুলাল বলে ওঠে, কিন্তু গান থাকবে তো? সত্যি বলছি, ফাটিয়ে দেব!
অবশ্যই গান থাকবে। চারণ কবির মতো ঝাড়বি একটা স্বদেশি।
আর মহিলা শিল্পী? বলিস তো নিয়ে আসব একটা বাউলনি?
না, না, ব্যাপারটা এত হাল্কা না। মনে রাখিস, আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাস ওদের ইচ্ছার অধীন। এতটুকু বিরোধিতা করেছ কী, তুমি মাটির নীচে নুনে ঢাকা লাশ!
উত্তম কাঁধ ঝাঁকিয়ে দু’পা এগিয়ে এসে বলে, বল না কী করতে হবে?
বলে নীলেশ, কিছু না। শুধু তোর ভিতরের যন্ত্রণার কথা, অস্তিত্বের সঙ্কটের কথা, আর যা চোখে দেখছিস, মঞ্চে দাঁড়িয়ে দৃঢ় গলায় বলে যেতে হবে। এ ভাবে আমরা পৌঁছে যাব গ্রামবাসীদের কাছে। তাদের শোনাতে হবে পরিবর্তনের বার্তা।
নীলেশের কথা শেষ হতেই ফিক করে হেসে ফেলে উত্তম। পেশিবহুল কালো চেহারা। একমাথা কোঁকড়া চুল। গোল মুখের নিখুঁত সাদা দাঁতের হাসি বড় সরল। বলল নীলেশ, হাসলি যে? একটা সিরিয়াস কথা বলছি আমি।
না, মানে, তুই তো দেখছি কমরেডদের মতোই ঝাড়ছিস।
এ কথায় সবাই হেসে উঠলে, নীলেশ একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। বলে ও, কী করব বল, কয়েক যুগ ধরে এই ভাষাই তো গেলানো হচ্ছে আমাদের।
একটা সরকার পঁচিশ বছর ধরে নিরঙ্কুশ ক্ষমতায়। ক্ষমতাসীন দল নিজেদের বলে থাকে কমিউনিস্ট, কৃষক-শ্রমিকের দল! গরিবের পার্টি! অথচ এরাই...।
পঞ্চায়েত থেকে কেবল মাত্র নিজেদের লোককে সরকারি কাজ বিলি করছে। তা-ও সারা বছরে বারো-চোদ্দো দিন। অথচ কাজ দেখিয়ে টাকা তোলা হয়ে যাচ্ছে। একই পুকুর বার বার সংস্কার হচ্ছে।
নেতা-পুলিশ-বিত্তবান এই ত্রয়ীর অশুভ আঁতাত নিশ্বাস ফেলছে সাধারণ মানুষের ঘাড়ের ওপর। যারাই একটু বিরোধিতা করছে, অন্য পার্টি করছে, তাদেরই কপালে জুটছে ভয়ঙ্কর শাস্তি, এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত!
পঞ্চায়েত স্তর থেকে এক সমান্তরাল শাসনতন্ত্র চালাচ্ছে ওরা। রাস্তা, পানীয় জল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ইত্যাদির উন্নয়নের নামে লুটেপুটে খাচ্ছে সব।
নেতাদের হাতে প্রচুর টাকা, প্রচুর ক্ষমতা। আছে গুন্ডা বাহিনী। আছে অস্ত্রভাণ্ডার।
কোথাও আদর্শের ছিটে-ফোঁটা নেই, নেই মানবিক মূল্যবোধ।
প্রচুর খুন-ধর্ষণ করে তামাম বিরোধী আওয়াজকে রোলারে গুঁড়িয়ে দিয়ে আসুরিক রাজত্ব চালাচ্ছে ওরা!
বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোটে কায়েম রাখছে শাসন ক্ষমতা।
সত্যিসত্যিই এক নাটকের মহড়া হতে থাকে। নাটক কেউ লেখেনি। মুখেমুখে গড়ে ওঠে নাটকের সংলাপ। মন্দিরের চাতাল যেন একটা মঞ্চ। অভিনেতারা ঘুরে-ফিরে নিখুঁত অভিনয় করে যাচ্ছে। কিংবা তারা নিজেদের অস্তিত্বের সংকট নিয়ে বলতে থাকে নিজেদের কথা। ওরা এটা পারে কারণ, ওরা দীর্ঘ অপশাসন আর অত্যাচারের শিকার।
সুচাঁদ থামলে মঞ্চের বাঁ দিক থেকে বাবুলাল প্রবেশ করে। গান ধরে ও। তাৎক্ষণিক কথা ও সুরে সে গান অবাক করে ওদের। যেন হাতে দোতারা, এমন ভঙ্গিতে নেচে নেচে
বাউল-সুরে গায় ও ওরে মানুষ কারে কয়
মানুষ যথা দুখের সাথে ভাবের ঘরে রয়।
ওরে মানুষ কারে কয়।
পদ্মপাতায় জল যেমন, পরান টলটলায়।
ওরে মানুষ কারে কয়
পার্টিতন্ত্র দেখলি কেবল
মানুষ খুঁজে মারিস ছোবল
বোমা-বন্দুক-গুলি-মাইন তোদের হাতে রয়।
ওরে মানুষ কারে কয়।
এ বার বলি শোন রে তোরা দেওয়ালের আছে কান,
শোন রে পলাশ, আছে মানুষ, নেবে তোদের জান।
করবি কী তাই বল,
তোরা সর্বহারার দল,
রক্ত শুষে, রক্ত চেটে করে ক্ষমতা দখল,
পরিবর্তন আসবে শোন, পাস নে তোরা ভয়।
ওরে মানুষ কারে কয়।
বাবুলালের গান শেষ হতেই বলে ওঠে ওরা, (কোরাস) তা হলে! তা হলে!
বাবুলাল মনে রেখো সবাই, সরবেতা নানান আন্দোলনের শরিক। ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল সরবেতার মানুষ।
রথীন আজ চব্বিশ সেপ্টেম্বর, দু’হাজার দুই। বাইশে সেপ্টেম্বর পাঁচ জন গ্রামবাসীকে খুন করেছে ওরা। গরুর গাড়িতে সেই সব লাশ নিয়ে যাওয়া হয় তাসের বাঁধে। ভোর রাতে গর্ত খুঁড়ে বস্তা বস্তা নুন ঢেলে পুঁতে ফেলে ওরা মৃতদেহগুলি।
নীলেশ গ্রামের পর গ্রাম দখলে নেমেছে ওরা। অস্ত্র আসছে বিহারের মাফিয়াদের কাছ থেকে, মুঙ্গের থেকে।
সুচাঁদ লক্ষ্য একটাই, বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করা।
ডায়লগটা বলেই সুচাঁদ কেমন বেঁকে বসে। বলে ও, ধুস! একতরফা হয়ে যাচ্ছে। নেতা, মন্ত্রী আসবে, ক্যাডার বাহিনী আসবে, তবে না নাটক জমবে!
চিন্তায় পড়ে সবাই। এ কথা সত্যি। ওরা তো আর চুপ করে বসে থাকবে না! এ সব ভাবতে গিয়ে একটু সময়ও চলে গেল। তখন চার পাশটা কেন গুমোট লাগছে। গাছের পাতা নড়ছে না। একটা পাখিও ডাকছে না। কিছু একটা করতে পারার আনন্দ ক্রমশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নীলেশদের মনের অবস্থার সঙ্গে মিলে একটা কালো মেঘ ঢেকে ফেলেছে সূর্যটাকে। ঠিক এই সময়, ওদের অবাক করে পাঁচ জন অস্ত্রধারী গুন্ডা মন্দির-চাতাল ঘিরে ফেলে। পরনে জিন্স-এর প্যান্ট, গেঞ্জি। সবাই বাইরের, অচেনা। হিসিয়ে ওঠে অস্ত্রধারীরা। ওদের চোখের হিংস্র ভাষা বড় ভয়ঙ্কর! ওরা বাবুলালের পিঠে বন্দুকের নল ধরল। বাবুলাল কাতর গলায় বলে উঠল, আমার মাকে একটু দেখিস তোরা!
উত্তম আর পারল না। দু’পা এগিয়ে গিয়ে বলে উঠল, এ সব কী হচ্ছে?
মুহূর্তে এক জন উত্তমের কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে বলল, একদম চোপ, আর একটা কথা বললে তোদের সব ক’টাকে মায়ের ভোগে পাঠিয়ে দেব!
এর পর বন্দুকের নলের মাথায় গুন্ডারা বাবুলালকে নিয়ে গেল পিছনের আমবাগানের দিকে। যাওয়ার সময় শাসিয়ে গেল, পলাশদার দুর্গে দাঁড়িয়ে বিরোধিতার চেষ্টা করলে জ্যান্ত মানুষকে কঙ্কাল বানিয়ে দোব!
ঘটনার আকস্মিকতায় ও আগ্নেয়াস্ত্রের সামনে অসহায় ওরা চার জন যন্ত্রণায় ছটফট করছে। বন্ধুর পরিণাম কী হতে পারে জানে ওরা। উঠে দাঁড়ায় নীলেশ, রথীন, উত্তম, সুচাঁদ। দু’হাতের পাতায় মুখ ঢাকে নীলেশ। রথীনের শক্ত চোয়াল বেয়ে ঝরছে চোখের জল। সুচাঁদ হঠাৎ ‘বাবুলাল’ বলে চিৎকার করে উঠে, পাগলের মতো কাঁদতে লাগল। উত্তম মন্দিরের দেওয়ালে হেলান দিয়ে শরীর এলিয়ে দিলে মেঝেতে পড়ে গেল। পরেই দাঁতে দাঁত চেপে বলে উঠল, শালা, কিচ্ছু করতে পারলাম না!
এই সময় গাড়ির শব্দে মুখ তুলে দেখে ওরা, সামনের রাস্তা দিয়ে ধুলো উড়িয়ে যাচ্ছে পুলিশের জিপ। পিছনে আরও একটা জিপ। গাছপালার আড়াল থেকে দেখা গেল সেই জিপে এলাকার কিছু খুচরো নেতার মুখ।
এ বার ওরা চার জন একে অপরের চোখে চোখ রাখল। চোখের রং লাল। যেন এক প্রতিজ্ঞার মুখোমুখি ওরা। বলে নীলেশ, প্রত্যেক বার সব রকম অত্যাচারের কষ্টগুলোকে পার করে আমরা আরও আরও খাঁটি মানুষ হয়ে উঠছি। তাই আমাদের নাটক চলবে!
সবার মুখে সেই প্রত্যয়। মঞ্চের সামনের দিকে এগিয়ে আসে নীলেশ।
এই মাত্র আপনারা যা দেখলেন, তা মোটেই নাটক না। আসলে ওরা টের পেয়ে গিয়েছে, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ওরা।
ইতিহাসের নিয়মেই এক দিন কবর থেকে উঠে আসবে খুন করে পুঁতে রাখা মানুষগুলির কঙ্কাল। সেই সব কঙ্কালের হাত সাঁড়াশির মতো টিপে ধরবে পলাশ-অনন্তদের গলা। সে-দিনের আর বেশি দেরি নেই।
এই সময় কাছেই কোথাও মাটি কাঁপিয়ে পর পর বোমা ফাটে, গুলির শব্দ হয়। বারুদের গন্ধে বাতাস ভারী হতে থাকে। আর সেই ভারী বাতাসের মাথায় চেপে ভেসে বেড়াতে থাকে বাবুলালের গান ওরে মানুষ কারে কয়...! |
ছবি: সায়ন চক্রবর্তী |
|
|
|
|
|