ইস্টবেঙ্গল- ২ (পেন, টোলগে-পেনাল্টি)
চিরাগ কেরল- ০ |
শুক্রবারের পর পেন ওরজির নতুন নামকরণ করতেই পারেন লাল-হলুদ সমর্থকেরা শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা বিপদে পড়লে পেনই দলের ভরসা!
দলের সর্বোচ্চ গোলদাতার ‘নেমপ্লেটে’ তাঁর নাম লেখা নেই! লাল-হলুদ জনতার ভিড়ে টোলগে ওজবের আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তার আড়ালে প্রায় সময়ই ঢাকা পড়ে যান ছোট্টখাট্টো নাইজিরিয়ান! ক্যামেরার ঝলকানি, অটোগ্রাফ শিকারিদের ছোটাছুটি নিঃশব্দে সব আলো পাশে সরিয়ে রেখে বেরিয়ে যেতেই বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু যখনই দলের আকাশে বিপদের কালো মেঘ জমাট বাঁধে, সবার আগে পেন ওরজি-ই উদ্ধার করেন ইস্টবেঙ্গলকে। কোচিতেও তার ব্যাতিক্রম হল না।
পৈলান অ্যারোজ ম্যাচের কুখ্যাত আত্মতুষ্টির চাদর এক ঝাপ্টা মেরে খুলে ফেললেন পেন। অতি-গুরুত্বপূর্ণ ডেম্পো ম্যাচে যেমন এক গোলে পিছিয়ে পড়া ইস্টবেঙ্গলকে দিশা দেখিয়েছিলেন, চিরাগ কেরলের বিরুদ্ধে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তাটাও দেখালেন তিনিই। প্রথমার্ধে ভাসুম-নওবারা যে জঘন্য ফুটবল খেললেন, তাতে মর্গ্যানের দল গোল খেয়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকত না। ওপারার নেতৃত্বাধীন রক্ষণে তখন বড় বড় ফাটল ক্রমশ দেখা দিচ্ছে। তবে লাল-হলুদের ছোট বক্সের আশেপাশে অঘটনের ছায়া অনবরত ঘুরঘুর করলেও সেটা গোলকিপার সন্দীপ নন্দীকে পেরোতে পারেনি।
মাঝমাঠের দুরবস্থা ঢাকতে পারলেন না সুশান্ত ম্যাথু কিংবা হরমনজিত খাবড়া। একজন ডিফেন্সিভ ব্লকারের অভাবে ভুগল ইস্টবেঙ্গল। সাধারণত দলে যে কাজটা করে থাকেন মেহতাব হোসেন। তবে পেন বাড়তি দায়িত্ব নিতেই বিরতির পর বদলে গেল মর্গ্যান-ব্রিগেড। গতি বাড়িয়ে সেন্টার লাইন থেকে যে ‘অফ দ্য বল’ দৌড়গুলো দিলেন, তাতেই কেল্লাফতে। ডান দিক থেকে নওবার কম্পাস-মাপা পাস সযত্নে গোলে পাঠালেন পেন। চিরাগের ছ’ফুট তিন ইঞ্চির দুই বিদেশি স্টপার তখন শুধুই দর্শক। গভীর রাতে কোচি থেকে পেন ফোনে বললেন, “সমর্থকদের ক্রিসমাসের উপহার দিলাম।” |
মর্গ্যানও সমর্থন করলেন পেনের দাবি। বললেন, “কোচির মাঠের মাঝখানে চার-পাঁচটা ক্রিকেট পিচ আছে। অনেকটা জায়গা এবড়ো খেবড়ো। বল নিয়ে দৌড়তে ছেলেদের অসুবিধা হচ্ছিল।” জয়ের সরণিতে ফেরার দিনেও মর্গ্যানের জন্য খারাপ খবর থাকছে। কার্ড সমস্যায় গোয়ায় গুরুত্বপূর্ণ সালগাওকর ম্যাচে ওপারাকে পাচ্ছেন না তিনি। হাঁটুতে চোটের জন্য অনিশ্চিত নওবাও। যদিও পরের ম্যাচে মেহতাব ফিরছেন, নির্মল ছেত্রীও যোগ দিচ্ছেন গোয়ায়।
ম্যাচের স্কোরলাইন যখন ১-০ থাকবে প্রায় নিশ্চিত দেখাচ্ছে, তখন ইনজুরি টাইমের অন্তিম লগ্নে গোলের ব্যবধান বাড়ালেন টোলগে। পেনাল্টি থেকে গোল করে ডেম্পোর র্যান্টি মার্টিন্সের আরও কাছে পৌছে গেলেন তিনি। ১১ গোল করে র্যান্টি এখন শীর্ষে। টোলগে ৯ গোল করে দ্বিতীয়। চিরাগকে হারিয়ে আই লিগে ‘সেকেন্ড বয়’ ইস্টবেঙ্গলও (১১ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট)। ফেডারেশনের ওয়েবসাইট সেই তথ্যই দিচ্ছে। তবে ফিফার নিয়মে ইস্টবেঙ্গল আর চার্চিলের পয়েন্ট সমান হওয়ায় দু’নম্বর জায়গাটা চার্চিলেরই। কারণ দু’দলের লড়াইয়ে চার্চিল হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। শীর্ষে ডেম্পো। ১১ ম্যাচে ২৪ পয়েন্টে। এ দিকে, পুণেতে পৈলান অ্যারোজকে ২-০ হারিয়ে প্রয়াগ ইউনাইটেডকে টপকে গেল এয়ার ইন্ডিয়া।
|
ইস্টবেঙ্গল: সন্দীপ, নওবা (পাইতে), ওপারা, সৌমিক, গুরবিন্দর, ভাসুম (সঞ্জু), পেন, হরমনজিৎ, সুশান্ত, বলজিৎ (লেন), টোলগে। |