প্রখর রোদ সত্ত্বেও কাঁপুনি ধরিয়ে প্রথা ভাঙল শীত
যেন এক অন্য রকম শীত!
সকাল সাতটায় মেঘ কেটে আকাশে সূর্য উঠেছিল। ঝকঝকে আকাশে বেলা যত গড়িয়েছে, রোদের তেজ তত বেড়েছে। তার সঙ্গে বেড়েছে ঠান্ডাও! রবিবার দুপুরের চড়া রোদে পিঠ দিয়েও কাঁপুনি ধরেছে শরীরে!
কিন্তু এমনটা তো হওয়ার কথা নয়! আলিপুর আবহাওয়া অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রবিবার আরও কমে দাঁড়িয়েছে ১২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ এ দিন ঘন কুয়াশা ছিল না। দিনের কোনও সময়েই আকাশে মেঘ জমেনি। তবু তীব্র সূর্যালোককে হার মানিয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও নেমে গিয়েছে এ সময়ের স্বাভাবিকের ৫ ডিগ্রি নীচে!
আকাশে মেঘ থাকলে সাধারণত দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বাড়তে পারে না। কিন্তু আকাশে গনগনে সূর্য থাকা সত্ত্বেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কী ভাবে এত নামল?
মায়ের কোলে শীত উপভোগ। রবিবার বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথের ব্যাখ্যা, “উত্তরপ্রদেশ-বিহারে গত ক’দিন ধরে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়েছে। উত্তুরে হাওয়া বইছে খুব জোরে। পরিষ্কার আকাশ পেয়ে সেই জোরালো উত্তুরে বাতাস দক্ষিণবঙ্গে ঢুকে পড়েছে। তার জেরেই প্রখর রোদেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে গিয়েছে।” এমনটা যে সচরাচর ঘটে না, সেটাও পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন আবহবিদেরা।
এবং এই বিরল ঘটনার জেরে রাতে তো বটেই, ভরদুপুরেও ভাল মতো টের পাওয়া গিয়েছে শীতের কামড়। এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২২.৬ ডিগ্রির উপরে উঠতেই পারেনি। আলিপুরে মজুত তথ্য অনুযায়ী, গত দশ বছরে ডিসেম্বর মাসে পরিষ্কার আকাশ থাকাকালীন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কখনও এতটা নামেনি। ডিসেম্বরে কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকার কথা ২৭ ডিগ্রি। উত্তুরে হাওয়ার প্রভাবে শনিবারেও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৩.৪ ডিগ্রি। শুধু কলকাতা নয়, দক্ষিণবঙ্গের সর্বত্র সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পাল্লা দিয়ে নেমেছে।
উষ্ণতার খোঁজে। প্রবল ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে ভরসা আগুনই। ছবি: বিল্বনাথ চট্টোপাধ্যায়
এ দিন বর্ধমানের পানাগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৫.৭ ডিগ্রি। যা কি না ছুঁয়ে ফেলেছে ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিকে। বীরভূমের শ্রীনিকেতনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে দাঁড়িয়েছে ৭ ডিগ্রি। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় উত্তরবঙ্গে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে বলে আলিপুর-সূত্রের খবর। দিল্লির মৌসম ভবন জানাচ্ছে, ঘন কুয়াশা ও তীব্র উত্তুরে হাওয়ার প্রভাবে বিহার ও উত্তরপ্রদেশে দিন-রাতের তাপমাত্রা প্রায় এক হয়ে গিয়েছে। সূর্যের দেখা মিলছেই না।
তবে দক্ষিণবঙ্গের পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন। মেঘ নেই। ঘন কুয়াশা নেই। জলীয় বাষ্পের পরিবর্তে পরিমণ্ডলে ঢুকেছে কনকনে উত্তুরে বাতাস। তাই দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে শৈত্যপ্রবাহ বইছে। উত্তরবঙ্গে অবশ্য বাতাসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জলীয় বাষ্প। তাই উত্তরবঙ্গের সমতলে এবং পাহাড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গে শৈত্যপ্রবাহ কত দিন চলবে? গোকুলবাবু জানাচ্ছেন, “আগামিকাল, মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের বাতাসে কিছুটা জলীয় বাষ্প ঢুকতে শুরু করবে। তাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে।”
তবে বড়দিনের সময়ে দক্ষিণবঙ্গের তাপমাত্রা ফের নামতে শুরু করবে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা।

হিম-পরশ
স্থান সর্বোচ্চ সর্বনিম্ন
আলিপুর ২২.৬ ১২.১
দমদম ২২.৫ ১১.০
শ্রীনিকেতন ২২.০ ৭.২
পানাগড় ২০.০ ৫.৭
মালদহ ১৯.৩ ১০.৭
* তাপমাত্রা, ডিগ্রি সেলসিয়াসে



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.