মমতা-ব্রাত্য কথা
যাদবপুর-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল সমর্থক গ্রেফতার
ছাত্রভর্তি ঘিরে যাদবপুর বিদ্যাপীঠ চত্বরে গোলমালের ঘটনা ‘কড়া হাতে’ মোকাবিলার পথে এগোচ্ছে রাজ্য সরকার। রূপক চট্টোপাধ্যায় নামে এক তৃণমূল সমর্থককে রবিবার পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ডিসি (এসএসডি) বিশ্বরূপ ঘোষ জানিয়েছেন, প্রধান শিক্ষককে নিগ্রহ করার অভিযোগে ওই যুবককে ধরা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ দিন ঘটনার বিষয়ে জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরে যাদবপুরের ঘটনা সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “কাজটা ঠিক হয়নি। আমরা শিক্ষাক্ষেত্রে এ ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা বরদাস্ত করব না।” এই ঘটনায় দলের কেউ দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধেও দলীয় স্তরে ‘ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায় জানিয়েছেন।
মুকুলবাবুর সাফ কথা, “যাদবপুরের ঘটনায় এফআইআরে যাদের নাম থাকবে, তারা গ্রেফতার হবেই। এর মধ্যে কাউকে আড়াল করার প্রশ্ন নেই।” কিন্তু তৃণমূলের যে তিন জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ঘটনায় ‘মদত’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই ব্যাপারে দল কী করবে? মুকুলবাবু বলেন, “দলের কেউ যদি অনৈতিক কাজ করে, তার বিরুদ্ধে দল নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে। আমরা ঘটনাটি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছি।” এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলবেন মুকুলবাবু।
একই সঙ্গে, স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে সরকারি নির্দেশিকা অমান্য করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন মুকুলবাবু। তাঁর কথায়, “আমার কাছে খবর আছে, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও রাজ্য সরকারের নির্দেশিকা অমান্য করছেন। সেটাও ভাল নয়।” শিক্ষামন্ত্রীরও বক্তব্য, “এখানে প্রধানশিক্ষকও শিক্ষার অধিকার আইন ঠিকমতো মানছেন না।” বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ব্রাত্যবাবু বলেন,“যদি স্কুলের নাম এক হয় এবং একই চত্বরে যদি স্কুল হয়, তবে প্রাথমিক বিভাগ থেকে উত্তীর্ণ ছাত্রদের সরসারি মাধ্যমিক বিভাগে ভর্তি করাতেই হবে এবং সে ক্ষেত্রে বাকি কোনও আসন ফাঁকা থাকলে সেখানে লটারিতে ভর্তি করতে হবে। এই নির্দেশ কিন্তু মানা হয়নি।”
লটারি না-করে সরাসরি পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির দাবিকে কেন্দ্র করে শনিবার ওই স্কুলে বিক্ষোভ দেখান এক দল অভিভাবক। অভিযোগ, এলাকার কিছু বহিরাগত যুবক প্রধান শিক্ষক রাজেন মণ্ডলের ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। ‘মারধর’ করা হয় প্রধান শিক্ষক-সহ একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকাকেও। রাজেনবাবুর অভিযোগ, “এক দল তৃণমূল সমর্থকের প্ররোচনাতেই এই ঘটনা ঘটেছে।” যদিও ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্তের বক্তব্য, “স্কুল কর্তৃপক্ষ সরকারি নিয়ম না-মানায় পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে ওঠে। দাবি জানাতে গেলে উল্টে আমাদেরও অপমান করে। স্কুল কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনায় উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।”
এই পরিস্থিতিতে ওই স্কুলের প্রাথমিক বিভাগের চতুর্থ শ্রেণি থেকে উত্তীর্ণ ১০০ জন ছাত্রের কী হবে, তা নিয়ে এখনও ধন্দ কাটেনি অভিভাবক মহলে। তাঁদের দাবি, স্কুল শিক্ষা দফতরের সচিব বিক্রম সেনের পাঠানো নির্দেশ মানতে হবে। ওই নির্দেশিকায় বলা আছে, পরিচালন সমিতি পৃথক হলেও একই বাড়িতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিভাগ থাকলে চতুর্থ শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্রেরা সরাসরি ভর্তি হতে পারবে। কিন্তু স্কুল শিক্ষা সচিবের ওই নির্দেশ মানতে নারাজ যাদবপুর বিদ্যাপীঠ স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রধান শিক্ষক রাজেনবাবু এ দিন বলেন, ওই প্রাথমিক স্কুলটি বেসরকারি সংস্থা দ্বারা পরিচালিত। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের সঙ্গে কোনও যোগ নেই। ওদের দায়িত্ব আমরা কেন নেব?” তিনি বলেন, “বিষয়টি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতিও জানেন। মঙ্গলবার পর্ষদ অফিসে আমরা যাব।”
ওই ছাত্রদের ভর্তির উপায় বার করতে আজ, সোমবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন পর্ষদ সভানেত্রী চৈতালি দত্ত। তিনি বলেন, “সরকারি যে নির্দেশ স্কুলে পাঠানো হয়েছে, এ বারের মতো তা মেনে নেওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলব।” স্কুল শিক্ষা সচিবের পাঠানো ওই নির্দেশ প্রসঙ্গে চৈতালিদেবীর বক্তব্য, “স্কুলের সমস্যা জেনে নিয়ে ওই সার্কুলার পাঠানো উচিত ছিল। এখন অভিভাবকদের হাতে সার্কুলার পৌঁছে যাওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের ক্ষোভ বেড়েছে।” পঞ্চম শ্রেণিতে সরাসরি ভর্তির কী ব্যবস্থা হবে, তা নিয়ে চৈতালিদেবী এ দিন জানান, সরকারি নির্দেশ যা গিয়েছে, মানতে হবে। স্কুলকেও তা-ই বলা হবে। আইনি জটিলতা থাকলেও দূর করতে হবে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.