বাঁকুড়া থেকে খেতমজুরের কাজ করতে মন্তেশ্বরে এসে মৃত্যু হয়েছে এক প্রৌঢ়ের। শনিবার রাতে রাস্তায় অচেতন অবস্থায় তাঁকে পড়ে থাকতে দেখে এলাকার লোকজন বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিলেন। রবিবার সকালে দেখা যায়, তাঁর মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, দিনভর প্রচুর চোলাই খেয়েই অচেতন হয়েছিলেন শঙ্কর মুর্মু (৫৫) নামে ওই ব্যক্তি। এ দিনই কালনা মহকুমা হাসপাতালে মৃতদেহের ময়না-তদন্ত হয়। এ দিকে, এই ঘটনার পরে এলাকায় চোলাইয়ের ঠেক ভাঙার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঁকুড়ার রানিবাঁধের বাজকাটা গ্রাম থেকে মাসখানেক আগে শঙ্কর-সহ দশ জন খেতমজুরের কাজ করতে মন্তেশ্বরের আসুরি গ্রামে আসেন। শুক্রবার কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে অন্য ৯ সদস্য ফিরে গেলেও শঙ্কর থেকে যান। রূপচাঁদ মুর্মু নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়িতে থাকছিলেন তিনি। রবিবার বিকেলে রূপচাঁদ জানান, গ্রামে দীর্ঘ দিন ধরে বাসুদেব বাগ নামে এক জন চোলাইয়ের কারবার করছে। সেখানে শঙ্করের নিয়মিত যাতায়াত ছিল। শনিবার সারা দিন শঙ্কর সেখানে চোলাই খান বলে দাবি রূপচাঁদের। রাত ১০টা নাগাদ তাঁকে অচেতন অবস্থায় বাড়ির কাছে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকার কয়েক জন তুলে নিয়ে গিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেন। রবিবার সকালে ডাকাডাকি করে আর কোনও সাড়া মেলেনি তাঁর।
মন্তেশ্বরের তৃণমূল নেতা বিনয় ঘোষেরও দাবি, “মজুরের কাজ করে পাওয়া টাকায় প্রচুর মদ খেয়েছিল শঙ্কর। তার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “শুধু আসুরি গ্রামে নয়, মিহি, বরন্ডালা, বামুনপাড়া, করন্দা-সহ নানা জায়গায় চোলাইয়ের ঠেকের রমরমা রয়েছে। গত দু’বছরে চোলাই খেয়ে অনেকের মৃত্যুও হয়েছে ওই সব এলাকায়। আবাগারি দফতরের নিষ্ক্রিয়তাই এমন পরিস্থিতির কারণ।” আবগারি দফতরের কালনা শাখার ওসি বিষ্ণুপদ রায় অবশ্য বলেন, “আসুরি গ্রামের ঘটনার কথা শুনিনি। ওই সব এলাকায় চোলাইয়ের ঠেকের কথাও জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” এ দিকে, শনিবার পূর্বস্থলীর বিদ্যানগর এলাকায় বেশ কিছু ভাটিতে অভিযান চালিয়ে বহু লিটার চোলাই ও উপকরণ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। একটি ভাটি থেকে একটি কীটনাশকের প্যাকেটও উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। |