আমরি-কাণ্ডের জেরে উত্তরবঙ্গের সর্বত্র অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পাশপাশি নোটিশ জারির সাতদিনের মধ্যে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার কাজ না শুরু করা হলে সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোমের লাইন্সেস বাতিল করে দেবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। শনিবার দুপুরে পূর্ত দফতরের শিলিগুড়ির বাংলোতে বৈঠকের পরে জানান বিধায়ক তথা বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি জানান, শিলিগুড়িতে ৫২টি নার্সিংহোম রয়েছে। এর মধ্যে ১২টি নার্সিংহোমের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা রয়েছে। বাকি ৪০টি নার্সিংহোমের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই।
এ দিন রুদ্রনাথবাবু বলেন, “আমরা সময়সীমা বেঁধে দেব। তিনদিনের মধ্যে নোটিশ জারি করা হবে। সাতদিনের মধ্যে কী কারণে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নার্সিংহোমে রাখা হয়নি তা জানতে চাওয়া হবে। তার পরের সাতদিনের মধ্যে অগ্নিনির্বাপক কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখা হবে। যদি তাতে খামতি থাকে নার্সিংহোমের লাইন্সেস বাতিল করে দেওয়া হবে।”
নার্সিংহোম, শপিংমল ও বহুতল বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সের মালিকদের নোটিশ পাঠিয়ে সাতদিনের মধ্যে অগ্নিনিবার্পক ব্যবস্থার রিপোর্ট জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভা। শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দমকল বিভাগের জেলার ইন-চার্জকে সঙ্গে নিয়ে মালদহ শহরের কয়েকটি নাসিংহোম, শপিংমল ঘুরে দেখেন ইংরেজবাজার পুরসভার চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। তিনি বলেন, “সাতদিনের মধ্যে শহরের নার্সিংহোম, শপিংমল, বাণিজ্যিক কমপ্লেক্সের মালিকদের কাছে অগ্নিনিবার্পক ব্যবস্থার রিপোর্ট জমা দেওয়ার নিদের্শ পাঠানো হচ্ছে। যাদের অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকবে না পুরসভা তাদের ট্রেড লাইসেন্স, ফুড লাইসেন্স বাতিল করে দেবে।” প্রথমে মুকদমপুরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে হানা দেন চেয়ারম্যান। সেখানে অগ্নিনিবার্পক ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে সম্তোষপ্রকাশ করলেও পাশে আরেকটি নার্সিংহোমে হানা দিয়ে সেখানকার অগ্নিনিবার্পক ব্যবস্থা দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন চেয়ারম্যান ও দমকল বিভাগের কর্তারা। বহুতল ওই নার্সিংহোমে কোনও জলাধারের ব্যবস্থা নেই বলেও জানানো হয়। শুধু তাই নয়, নিজে রোগী সেজে একটি স্ট্রেচারে শুয়ে পড়ে চেয়ারম্যান নার্সিংহোমের কর্তাদের বলেন, “ধরুন নার্সিংহোমে আগুন লেগেছে। আমি অসুস্থ আমাকে কিভাবে নীচে নামাবেন?” হতচকিত হয়ে পড়েন নার্সিংহোমের কর্মী থেকে শুরু করে কর্তারা। নার্সিংহোমের প্যাসেজ এতটাই সরু, চেয়ারম্যানকে কিছুতেই নামাতে পারলেন না নার্সিংহোমের কর্মীরা। শেষপর্যন্ত হেঁটে নামলেন চেয়ারম্যান। রায়গঞ্জ শহরের একাধিক নার্সিংহোম আগ্নিনির্বাপক বিধি মানছে না বলে অভিযোগ করল দমকল বিভাগ।
রায়গঞ্জ দমকল বিভাগের ওসি নিতাইচন্দ্র মন্ডল বলেন, “শহরের একাধিক নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ অগ্নি নির্বাপন বিধি মানছে না। আমরা নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ গুলিকে সতর্ক করব। তার পরেও কেউ বিধি মেনে না চললে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |