কালচিনি ব্লকের লতাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নীত করার দাবিতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছে কংগ্রস। দলের কালচিনি ব্লক সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, “ওই দাবিতে আগামী ২২ ডিসেম্বর স্থানীয় বিডিও অফিসে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে।” কংগ্রেসের ওই দাবি প্রসঙ্গে জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার বলেন, “বর্তমানে জলপাইগুড়ি জেলায় চারটি গ্রামীণ হাসপাতাল আছে। লতাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতলে উন্নিত করার দাবি পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।” কংগ্রেস নেতৃত্বের অভিযোগ, আলিপুরদুয়ার মহকুমার কালচিনি ব্লক বামফ্রন্টের দীর্ঘ শাসন কালে স্বাস্থ্য পরিষেবায় অবহেলিত ছিল। ব্লকের জনসংখ্যা দুই লক্ষ ৭৮ হাজার। অথচ তাঁদের কাছে পরিষেবা পৌছে দিতে লতাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু সেখানে চিকিৎসা হয় না। লতাবাড়িতে গেলে রোগীকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হয়। ভারত-ভুটান সীমান্তের জয়গাঁ এলাকায় স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই সেখানকার বাসিন্দাদের চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয় লতাবাড়ি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এখান থেকে রেফার করার পরে জয়গাঁর বাসিন্দাদের রোগী নিয়ে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে মহকুমা হাসপাতালে যেতে হয়। ব্লকের এগারোটি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকায় একুশটি চা বাগান রয়েছে। বেশিরভাগ চা বাগানে চিকিৎসা পরিষেবার বেহাল দশা। সেখানকার শ্রমিক ও বনবস্তির বাসিন্দাদের পক্ষে গাড়ি ভাড়া করে আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতলে পৌছনো সম্ভব হয় না। ফলে বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু হয়। কংগ্রেস নেতৃত্ব জানান, উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য লতাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নিত করা জরুরি। ওই দাবিতে ব্লক জুড়ে আন্দোলনের কর্মসূচী নেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা বাবলু মজুমদার বলেন, “সম্প্রতি দলের কর্মী সম্মেলনে নতুন সরকারের কাছে লতাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতালে উন্নিত করার আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্লক জুড়ে ওই আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে গ্রামীণ হাসপাতলে উন্নিত করতে হলে সেখানকার রোগীর সংখ্যা সহ বেশ কিছু তথ্য প্রয়োজন। সাধারণত দুই তিনটি ব্লক নিয়ে একটি গ্রামীন হাসপাতাল থাকে। বর্তমানে জলপাইগুড়ি জেলায় চারটি গ্রামীন হাসপাতাল আছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা বলেন “কালচিনি ব্লকের লতাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বর্তমানে চার জন চিকিৎসক আছেন। গ্রামীণ হাসপাতাল হলে সেখানে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ, ফিজিশিয়ান, অ্যানস্থেটিক সহ সাত-আট জন চিকিৎসক থাকবেন। হাসপাতলে রোগীদের জন্য ৬০টি শয্যা, এক্সরে, ইসিজি, অপারেশন থিয়েটার, লেবাররুম সহ নানা সুবিধে থাকবে। |