|
|
|
|
সরকারি সিদ্ধান্ত কার্যকর করার দাবি |
টিউশন বন্ধে পুর-উদ্যোগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
সরকারি স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রাইভেট টিউশন বন্ধ না করলে তাঁদের বেতন বন্ধের জন্য জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে চিঠি দেবে শিলিগুড়ি পুরসভা। বেঙ্গল প্রাইভেট টিউটর্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিটিএ) তরফে স্মারকলিপি পেয়ে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরসভার ডেপুটি মেয়র (শিক্ষা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) রঞ্জন শীলশর্মা। বুধবার ডেপুটি মেয়র বলেন, “সরকারি নির্দেশনামা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মানতেই হবে। আর তা কার্যকরী হচ্ছে কী না তা দেখার দায়িত্ব আমাদেরই। কারা প্রাইভেট টিউশন করছেন, সেই বিষয়ে একটি তালিকা পেয়েছি। তদন্ত করে ওই ধরণের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের যাতে বেতন বন্ধ করে দেওয়া হয় তা বিদ্যালয় পরিদর্শককে বলব।” বিপিটিএ-র রাজ্য সম্পাদক সুজয় কুমার বর্মন বলেন, “আমরা সরকারের কাছে চাকরি চাইনা। শুধু চাই পেশার স্বীকৃতি এবং মর্যাদা। আর সরকারি আইনটা যাতে কাযর্করী হয় তা দেখুক। অনেকক্ষেত্রেই অভিভাবকদের কিছু সমস্যা থাকে। আমরা তাঁদের সঙ্গেও আলোচনা করতে চাই। ডেপুটি মেয়রকে সব জানানো হয়েছে।” সুজয়বাবু জানান, কেউ বিনামূল্যে টিউশন পড়ালে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু তা হচ্ছে না। প্রশাসন, পুরসভার এবং শিক্ষা দফতরকে এটা বন্ধ করতে হবে। আমরা আন্দোলন করছি। এখনও কাজ হয়নি। এবার অনশন, ধর্না, পরিদর্শকের দফতর বন্ধের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সংগঠনের সদস্যরা জানাচ্ছেন, শিলিগুড়ি শহরের ১৭৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এরা সকলেই সরকারি আইন ভেঙে প্রাইভেট টিউশন করছেন। শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুল, বরদাকান্ত বিদ্যাপীঠ, তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়, হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয়, বিবেকানন্দ স্কুল, নেতাজি বয়েজ, ঘোঘমালি হাইস্কুল, নীলনলিনী হাইস্কুল-সহ আরও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকার নাম ওই তালিকায় রয়েছে। বিপিটিটিএ-র অভিযোগ, এরা সকলেই স্কুলে বেতনের পাশাপাশি বাড়িতে প্রাইভেট টিউশন থেকে মোটা টাকা বেআইনিভাবে আদায় করছেন। ইতিমধ্যে কয়েকজন আগামী শিক্ষাবর্ষের জন্য অগ্রিম টাকা নেওয়াও শুরু করেছেন। অথচ অতিরিক্ত আয়ের জন্য আয়করও দিচ্ছেন না। এ ছাড়া ইউনিট টেস্টের প্রশ্ন বলে দেওয়া, পরীক্ষায় উত্তর বলে দেওয়া মত কাজও করছেন। ছেলেমেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে টাকা দিয়ে পড়ানোর কথা অভিভাবকদের বড় অংশ অস্বীকার করছেন। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কোনও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সমস্ত কাজকর্ম বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরের মাধ্যমে হলেও তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার রয়েছে স্কুলের পরিচালন সমিতির। রাজ্য সরকারের তরফে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারের তরফে আইন করে স্কুলগুলির পরিচালন সমিতিকে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা যাতে গৃহশিক্ষকতা না করেন তা সুনিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই আইনে প্রয়োজনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে একটি মুচলেকা নেওয়ার পদ্ধতিও রয়েছে আইনে। বিদ্যালয় পরিশর্দক কোনও অভিযোগ পেলে তা সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে থাকেন। সরকারি আইন কার্যকরী করার দাবিতে এবার জেলাওয়ারি বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতরে ধর্ণা, তালা ঝোলানো এবং অনশনে নামারও প্রস্তুতি নিচ্ছে বিপিটিএ। চলতি মাসেই জলপাইগুড়ি জেলা দিয়ে আন্দোলন শুরু হবে। |
|
|
|
|
|