|
|
|
|
নতুন করে তৈরি হবে রোহিণীর রাস্তা, টোল বসানোর চিন্তা প্রশাসনে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি |
৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের হাল থেকে ‘শিক্ষা’ নিয়ে শিলিগুড়ি-কার্শিয়াং রোহিণীর রাস্তা পাকাপোক্ত ভাবে সারাতে হিসেব কষে পা ফেলছেন দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা সারানোর মতো টাকা থাকলেও সে পথে হাঁটা হবে না। কারণ, ফি বছর হিলকার্ট রোড মেরামতে কয়েক কোটি টাকা খরচ হয় এবং ৬ মাসের মধ্যেই অনেক জায়গা আবার বেহাল হয়ে পড়ে। দেড় বছর আগে কার্শিয়াঙের পাগলাঝোরা ও তিনধারিয়ায় বিশাল ধসের পর থেকে এখনও হিলকার্ট রোড বন্ধ রয়েছে। তাই দার্জিলিং যাওয়ার জন্য রোহিণীর রাস্তার উপরেই সব চাপ পড়েছে। মাত্রাতিরিক্ত যানবাহনের চাপে রাস্তাটি এখন চলাচলের অযোগ্য। সে জন্য প্রায় ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রোহিণীর রাস্তা স্রেফ সারানোর কথা না-ভেবে তা নতুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিল্ড-অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার (বিওটি) পদ্ধতিতে ওই কাজ করার জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। |
|
বেহাল রোহিণীর রাস্তা। বিশ্বরূপ বসাক |
ইতিমধ্যেই কয়েকটি সংস্থা তা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দরপত্র চূড়ান্ত হলে ওই সংস্থা রাস্তাটি নতুন করে বানাবে। তার পরে চুক্তির সময়সীমা শেষ না-হওয়া পর্যন্ত রাস্তায় যাতায়াতকারী যানবাহন থেকে ‘টোল ফি’ আদায় করে খরচ ও লভ্যাংশ তুলবে। সময়সীমা ফুরোলে রাস্তাটি সরকারকে হস্তান্তর করবে নির্মাতা সংস্থা। তবে হস্তান্তরের আগে রাস্তা খারাপ হলে তা সঙ্গে সঙ্গে সারানোর ব্যাপারে দায়বদ্ধ থাকবে নির্মাতা সংস্থা।
এই ব্যাপারে দার্জিলিং গোর্খা পার্বত্য পরিষদের প্রশাসক অনিল বর্মা বলেন, “রাস্তা সারানো হল। কয়েক কোটি টাকা খরচ হল। ক’মাস পরে ফের তা বেহাল হয়ে গেল। এমন চলতে পারে না। তাই বিওটি-র মাধ্যমে রোহিণীর রাস্তা তৈরি করার উপরে জোর দেওয়া হয়েছে। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৫ ডিসেম্বর। কোনও নির্মাতা সংস্থার প্রস্তাব পছন্দ হলে আমরা চুক্তি করব। আশা করব তিন-চার মাসের মধ্যে নতুন রাস্তা তৈরি হয়ে যাবে।” কিন্তু, কোনও নির্মাতা সংস্থার প্রস্তাব যদি পছন্দ না-হয় তা হলে কী হবে? প্রশাসক জানান, সে ক্ষেত্রে পার্বত্য পরিষদের তরফে রাস্তাটি বানিয়ে টোল আদায় করা হতে পারে।
বস্তুত, রোহিণীর রাস্তা নতুন করে তৈরির পরে টোল-ট্যাক্স বসালে তা নিয়ে আপত্তির কিছু দেখছেন না পর্যটন মহলের অনেকেই। কারণ, দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটন কেন্দ্রে যাতায়াতের সময়ে টোল ফি দেওয়াটা বাধ্যতামূলক। তাতে রাস্তা ভাল রাখার ব্যাপারে নির্মাতা সংস্থার দায়বদ্ধতা বেশি থাকে বলে পর্যটন ব্যবসায় যুক্ত অনেকের অভিমত। যত দিন পর্যন্ত রোহিণীর রাস্তা নতুন করে তৈরি না-হয়, ততদিন মিরিক-সুখিয়াপোখরি হয়ে দার্জিলিঙে যাবে যানবাহন। ইতিমধ্যেই বেসরকারি পরিবহণ সংস্থাগুলি তা জানিয়ে দিয়েছে। তাতে সময় গড়ে ২ ঘণ্টা বেশি লাগলেও সুদূরপ্রসারী লাভের কথা মাথায় রেখে কষ্ট সহ্য করতে রাজি পাহাড়ের মানুষও। তবে ঘুরপথে পাহাড়ে জন্য ছোট গাড়িতে মাথা পিছু ১৪০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। রোহিণী কিংবা হিলকার্ট রোড খোলা থাকলে ওই ভাড়ার পরিমাণ ৮০ থেকে ১০০ টাকা। বেসরকারি পরিবহণ সংগঠনের এক কর্তা জানান, আপাতত ভাড়া বাড়ানো হলেও নতুন রাস্তা তৈরি হলে টোল ফি দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। |
|
|
|
|
|