প্রশ্নের মুখে তৃণমূল জেলা পরিষদ
শিলান্যাসের ন’মাস পরেও কাজ শুরু হয়নি
কাজের ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ হয়েছিল মাস চোদ্দো আগে। আর শিলান্যাস হয়েছিল ঠিক বিধানসভা নির্বাচনের আগে। কিন্তু ঘটা করে শিলান্যাসের ৯ মাস পরেও পূর্ব মেদিনীপুরের তিনটি সেতুর কাজ শুরু করতে পারল না তৃণমূল পরিচালিত জেলা পরিষদ। ময়নার প্রজাবাড়ে কাঁসাই নদীর সেতু, চণ্ডীপুরের চকপাটনায় দুনিয়া খালের সেতু, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের মহাশ্বেতায় সোয়াদিঘি খালের সেতু তৈরির কাজ এখনও শুরু করতে না পারার জন্য জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের ‘অদক্ষতা’ ও ‘উদ্যোগের অভাব’ই দায়ী বলে অভিযোগ। যদিও জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ঠিকাদারের দোষে কাজ এগোয়নি। শীঘ্রই নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরু করা হবে।
আনুমানিক ৯ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা প্রকল্পব্যয়ে ময়নার প্রজাবাড়ে কাঁসাই নদীর সেতু, ২ কোটি ৯ লক্ষ টাকায় চণ্ডীপুরের চকপাটনায় দুনিয়া খালের সেতু, ১ কোটি ৬৩ লক্ষ টাকায় শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের কৃষ্ণগঞ্জে ও ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকায় মহাশ্বেতায় সোয়াদিঘি খালের সেতু তৈরির প্রকল্প নিয়েছিল জেলা পরিষদ। আরআইডিএফ (পঞ্চদশ) তহবিল থেকে ওই সব সেতু নির্মাণের জন্য প্রথম পর্যায়ে টাকা বরাদ্দ হয়। ঠিকাদার নিয়োগের পরে ওয়ার্ক-অর্ডারও দেওয়া হয়েছিল ২০১০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর। চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার আগেই তমলুকের তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীকে এনে শিলান্যাস অনুষ্ঠান করে জেলা পরিষদ। কিন্তু এখনও প্রজাবাড়, চকপাটনা, মহাশ্বেতায় সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়নি। কৃষ্ণগঞ্জে সেতু তৈরির কাজ শুরু হলেও মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই সেতুর মাত্র ৫ শতাংশ কাজ হয়েছে বলে জেলা পরিষদ সূত্রেই জানা গিয়েছে। এ দিকে, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। বাস্তবে তা যে আর সম্ভব নয়, একান্তে তা মেনে নিচ্ছেন জেলা পরিষদের প্রতিনিধিরাও।
জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন সিপিএম সভাধিপতি নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, “আমাদের আমলেই ওই সব সেতু তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। ২০০৮ সালে জেলা পরিষদে ক্ষমতায় আসার পরে তৃণমূল সেই প্রকল্পের শিলান্যাসটুকু ছাড়া আর কিছুই করে উঠতে পারেনি। তৃণমূল নেতৃত্বের অদক্ষতার জন্যই কাজ এগোয়নি। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করাও সম্ভব নয়।” তিনটি সেতুর কাজ শুরু না হওয়ার কথা মেনে নিয়েই জেলা পরিষদের সভাধিপতি গান্ধী হাজরা বলেন, “ঠিকাদারের গাফিলতির কারণেই কাজ শুরু করা যায়নি। ঠিকাদার পরিবর্তন করে নতুন ঠিকাদার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।” জমি নিয়ে সমস্যার কারণেও ময়নার প্রজাবাড়ে সেতু তৈরির কাজ পিছিয়েছে বলে জানিয়েছেন সভাধিপতি। তবে তাঁর দাবি, “আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানসূত্র বেরিয়েছে। চলতি সপ্তাহেই কাজ শুরুর চেষ্টা চলছে।” এ দিকে, আরও দু’টি সেতুর কাজ শুরু হলেও অত্যন্ত ঢিমেতালে চলছে বলে অভিযোগ। ২০০৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৎকালীন বামফ্রন্ট পরিচালিত জেলা পরিষদ আরআইডিএফ (ত্রয়োদশ) প্রকল্পেই রূপনারায়ণ নদীবাঁধে তমলুক থেকে কোলাঘাটগামী গ্রামীণ সড়কে মথুরি ও নুন্নান খালের উপরে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করেছিল। ১ কোটি ৮৬ লক্ষ টাকার ওই প্রকল্পে সেতু তৈরির সময়সীমা ছিল দেড় বছর। কিন্তু সাড়ে তিন বছরেও ওই প্রকল্পের অর্ধেক কাজও হয়নি। মথুরি খালের সেতু তৈরির কাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আর নুন্নান খালের সেতুর কাজ শুরুই হয়নি।
এ ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকেই দুষছে জেলা পরিষদ। কিন্তু গাফিলতি থাকা সত্ত্বেও ওই ঠিকাদারকেই পরবর্তী কালে কেন ময়নার প্রজাবাড় ও মহাশ্বেতায় সেতু তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছিল, তার সদুত্তর মেলেনি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.