অভিযোগ পেয়ে তদন্তে প্রশাসন
অতিরিক্ত ধান চাইছে চালকল
হায়ক-মূল্যে ধান বিক্রি করতে আসা চাষিদের কাছ থেকে চালকলগুলি বেআইনি ভাবে কুইন্টাল-প্রতি অন্তত ৭ কেজি করে অতিরিক্ত ধান চাইছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনে। চাষিদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) শুভাঞ্জন দাস বলেন, “চালকলগুলি অতিরিক্ত ধান চাইছে বলে অভিযোগ এসেছে। তদন্ত হবে।” তাঁর কথায়, “অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট চালকল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।” এমনিতেই এখন বাজারে ধানের দাম নেই। সরকারি কোষাগারের টানাটানিতে সহায়ক-মূল্যে ধান কেনাও সে ভাবে শুরু হয়নি। জেলার কয়েকটি এলাকায় নামমাত্র ধান কেনা হয়েছে। এর উপর চাষিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ধান চাওয়ার ঘটনায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়েছে।
গত মাসে জেলায় এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে ধান কেনা শুরু করেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা এ বার ১৮০ হাজার মেট্রিক টন। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত ধান কেনা হয়েছে মাত্রই ৮ হাজার মেট্রিক টন! কেন এই পরিস্থিতি? প্রশাসন সূত্রে খবর, ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট হলেও প্রয়োজনীয় টাকার ব্যবস্থা করেনি সরকার। ফলে, ধান কেনা যাচ্ছে না। আগেও অবশ্য এই পরিস্থিতি হত। কিন্তু তখন চালকলগুলিই নিজেদের টাকায় ধান কিনে নিত। পরে সরকারি টাকা এলে চালকলকে তাদের পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হত। এ বার চাষিদের চেকে টাকা দেওয়ার কথা। তাই, চালকলগুলির আগের ‘পদ্ধতি’ কাজে লাগবে না।
এ দিকে, মন্ত্রী এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে ধান কেনা শুরুর আগেই জেলার ৩৪টি চালকল ৫০ হাজার ৯০৩ কুইন্টাল ধান কিনে নিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে অন্ধকারে ছিল জেলা পরিষদ। এমনকী, শাসকদলের কয়েক জন বিধায়কও জানতেন না যে তাঁদের এলাকা থেকে ধান কেনা শুরুর হয়েছে। ডেবরা থেকেও প্রায় ৩ হাজার কুইন্টাল ধান কেনা হয়েছে। কিন্তু, এই ধান কাদের কাছ থেকে কেনা হল, সে নিয়ে অন্ধাকারে স্থানীয় পঞ্চায়েতগুলি। এলাকার বিধায়ক তৃণমূলের রাধাকান্ত মাইতি’র বক্তব্য, “৩ হাজার কুইন্টাল ধান কেনা হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু, আগে কিছু জানানো হয়নি।” রাধাকান্তবাবুই এ দিন জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, ডেবরার চালকল মালিকেরা চাষিদের কাছ থেকে কুইন্টাল পিছু অতিরিক্ত ৭ কেজি করে ধান চাইছেন। এর ফলে এলাকার চাষিদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। কেউই ধান বিক্রি করতে চাইছেন না। অভিযোগ পেয়েই নড়েচড়ে বসেন জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত। তাঁর নির্দেশেই অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) খড়্গপুরের মহকুমাশাসক ও ডেবরার বিডিও-র কাছে রিপোর্ট তলব করেন। তবে শুধু ডেবরা নয়, জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ। মূলত, অভাবি ধান বিক্রি বন্ধ করতেই প্রতি বছর এই সময়ে চাষিদের কাছ থেকে সহায়ক-মূল্যে ধান কেনে রাজ্য সরকার। এর ফলে, এক দিকে যেমন চাষিরা কিছুটা হলেও ন্যায্য দাম পান, তেমনই খোলাবাজারেও ফসলের দাম ঠিক থাকে। অসাধু ব্যবসায়ীরা সে ভাবে তৎপর হতে পারে না। এ বারও ধানের মূল্য বেঁধে দিয়েছে সরকার। সাধারণ ধানের মূল্য ১০৮০ টাকা প্রতি কুইন্টাল আর সরু ধানের মূল্য ১১৩০ টাকা প্রতি কুইন্টাল। অভিযোগ, সহায়ক-মূল্যে ধান কেনার সময়েই চাষিদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৭ কেজি করে ধান চাইছে চালকলগুলি। যাঁরা বাড়তি ধান দিতে চাইছেন না, তাঁদের থেকে ধান কেনাই হচ্ছে না! জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানানোর কথা মেনে ডেবরার বিধায়ক বলেন, “চাষিদের ক্ষোভের কথাই ওনাকে জানিয়েছি। চালকল বাড়তি ধান চাইতে পারে না।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.