|
|
|
|
জঙ্গলেও তল্লাশি চলছে |
মাওবাদীদের খোঁজে অভিযান নয়াচরেও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • হলদিয়া ও ঝাড়গ্রাম |
‘মাওবাদী’দের সন্ধানে এ বার তল্লাশি চলল হুগলি নদীর বুকে জেগে ওঠা দ্বীপ নয়াচরেও। ‘বহিরাগত মাওবাদী’দের সন্ধানে বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের ৫০ জনের একটি দল দিনভর তল্লাশি চালায় সেখানে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হলদিয়া) নীলাদ্রি চক্রবর্তী ও হলদিয়ার এসডিপিও অমিতাভ মাইতির নেতৃত্বে চলে এই তল্লাশি অভিযান। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি।
কেমিক্যাল হাব নয়, নতুন সরকার নয়াচরে ‘পরিবেশ বান্ধব’ শিল্প গড়ার অনুমতি দিয়েছে শিল্পপতি প্রসূন মুখোপাধ্যায়ের ‘ইউনিভার্সাল সাকসেস’ গোষ্ঠীকে। বিশ্বমানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠার কথা সেখানে। পরে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরিরও পরিকল্পনা রয়েছে ওই শিল্পগোষ্ঠীর। কিন্তু নয়াচরের ‘আইনশৃঙ্খলা’ পরিস্থিতি নিয়ে এর মধ্যেই চিন্তা শুরু হয়েছে পুলিশ-প্রশাসনের। বাইরে থেকে লোকজনের আনাগোনা ইদানীং বাড়ছে বলে খবর পাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। সেই ‘বহিরাগত’দের মধ্যে মাওবাদীরা বা মাওবাদী-ঘনিষ্ঠরাও রয়েছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রের খবর। ওই ‘বহিরাগত’রা পর্যটন কেন্দ্র, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার বিরুদ্ধে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের সংগঠিত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও খবর। আশপাশে থানা বা পুলিশ ফাঁড়ি না থাকার সুযোগেই নদীপথে, বিশেষত দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা থেকে লোকজন নয়াচরে যাতায়াত করছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
আবদুল রোশন মোল্লা নামে এক জনের হোগলার ঘরে কয়েক জন ‘মাওবাদী’ আত্মগোপন করে রয়েছে খবর পেয়েই বুধবার অভিযান চালায় পুলিশ। বড়খাল, বাবলাতলা, খেজুরতলা-সহ নয়াচরের বিস্তীণর্র্ এলাকায় তল্লাশি চলে। এ ছাড়াও মনসুরের ঘাট, নন্দীগ্রামের দিকের দু’টি ঘাট, দক্ষিণ ২৪ পরগনার দিকের ঘাটেও অভিযান চালানো হয়। পুলিশের দাবি, গ্রামবাসীরা জেরায় জানিয়েছেন, কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিদের আনাগোনা রয়েছে এলাকায়। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন ছাত্রছাত্রীও দু’দিন আগে এসেছিলেন। পুলিশ জেনেছে, ওই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মাওবাদী-ঘনিষ্ঠ ‘মাতঙ্গিনী মহিলা সমিতি’র কেউ কেউ ছিলেন। নতুন শিল্প-প্রকল্পের বিরোধিতা করে তাঁরা এলাকাবাসীর মধ্যে প্রচারও চালিয়েছেন। এসডিপিও অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘সোমবার ওখানে কয়েক জন এসেছিলেন। আমাদের কাছে একটু দেরিতে খবর পৌঁছয়। বুধবার আর তাঁদের কাউকেই পাওয়া যায়নি।” এ দিকে, মাওবাদী শীর্ষনেতা কিষেণজি নিহত হওয়ার পর জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের আরও কোণঠাসা করতে জোরদার তল্লাশি চলছে। ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া ও বাঁধগোড়া অঞ্চল থেকে জনগণের কমিটির ৪ সমর্থককে গ্রেফতার করে বুধবারই ঝাড়গ্রাম এসিজেএম আদালতে হাজির করা হয়েছিল। ভাঙচুর-লুঠে অভিযুক্ত দু’জনের জামিন মঞ্জুর করে আদালত। খুনের মামলায় অন্য দু’জনকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক। জঙ্গলমহলকে ‘মাওবাদী-মুক্ত’ রাখতে মাওবাদী-ঘনিষ্ঠদের গ্রেফতারের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে পুলিশ। জামবনির বুড়িশোলের জঙ্গলে গত ২৪ নভেম্বর যেখানে পড়েছিল কিষেণজির দেহ, বুধবারই সেই জায়গা পরিদর্শনে আসেন |রাজ্য ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির অধিকর্তা ধূর্জটিপ্রসাদ সেনগুপ্তর নেতৃত্বে বিশেষজ্ঞ দল। শালগাছে লাগা গুলির দাগ পর্যবেক্ষণ করেন তাঁরা। |
|
|
|
|
|