মাঠে বাংলা ওপেনার রোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের তলপেটে চোট লাগা এবং তাঁকে চেয়ারে করে বাইরে আনা নিয়ে তুমুল জলঘোলা চললে কী হবে, সিএবি কর্তারা হাত ধুয়ে ফেলছেন। বলা হচ্ছে, ভবিষ্যতে ক্রিকেটাররা গুরুতর চোট পেলেও ইডেনের বাউন্ডারি লাইনের ধারে থাকবে না কোনও স্ট্রেচার। মাঠের ভিতরেও রাখা হবে না অ্যাম্বুলেন্স। উল্টে পরিষ্কার জানানো হচ্ছে, যা হয়েছে আইসিসি-র নির্দেশিকা মেনেই হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও একই নীতি অনুসরণ করা হবে।
মঙ্গলবার ইডেনে হাতের কাছে স্ট্রেচার না থাকায় চেয়ারে বসিয়ে বাংলা ওপেনারকে মাঠ থেকে সিএবি-র ভিতরে আনা হয়। পরে অবশ্য স্ট্রেচারে করেই তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। কিন্তু প্রশ্ন ওঠে যে, ফুটবল মাঠে যদি স্ট্রেচার মাঠের মধ্যে থাকতে পারে, তা হলে ইডেনে থাকবে না কেন? বিতর্ক আরও জোরালো হয় বুধবার ডাক্তারি বয়ানের পর। রোহনকে যাঁর তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে, সেই ডাক্তার সব্যসাচী সেন-ই জানাচ্ছেন, রোহনের যেখানে চোট লেগেছে সেখানে চেয়ারে বসিয়ে আনা ঝুঁকি হতে পারত। বলছিলেন, “কপাল ভাল যে রোহনের বড়সড় কিছু হয়নি। কিন্তু হতে পারত। ওর ভবিষ্যত নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারত। তলপেটে চোট পেলে সব সময় স্ট্রেচার ব্যবহার করা উচিত।”
সিএবি কর্তাদের আবার বক্তব্য, আইসিসি-র নির্দেশিকাতে কোথাও বলা নেই যে মাঠের মধ্যে স্ট্রেচার রাখা বাধ্যতামূলক। ব্যাপারটা নিয়ে অহেতুক জলঘোলা হচ্ছে বলে গতদিন দাবি করেছিলেন সিএবি প্রেসিডেন্ট ডালমিয়া। কিন্তু বিতর্কের শুরু সচিব বিশ্বরূপ দে-র মন্তব্যকে ঘিরে। যিনি এ দিন উত্তেজিত হয়ে বলেন, “আইসিসি বলছে মেডিক্যাল ইউনিটে স্ট্রেচার থাকবে। আর মাঠ সংলগ্ন এলাকায় থাকবে অ্যাম্বুলেন্স। সেগুলো জায়গাতেই আছে। আর কোনও অবস্থাতেই ভবিষ্যতে এর বদল হবে না।” পাল্টা প্রশ্ন ওঠে ক্রিকেটারদের সুরক্ষা আগে, না নিয়ম আগে? বড় দুর্ঘটনা ঘটলে তখন কী হবে? কর্তাদের এ বার যুক্তি, আন্তর্জাতিক ম্যাচেও তো মাঠের মধ্যে স্ট্রেচার থাকে না। মাঠের ভিতর ঢোকে না অ্যাম্বুল্যান্স। তা হলে দোষটা কোথায়? রাতের দিকে আবার শোনা গেল, বোর্ড কর্তারা অপেক্ষা করছেন ম্যাচ রেফারির রিপোর্টের জন্য। তার ভিত্তিতেই ঠিক হবে বোর্ড এই ব্যাপারে কোনও ব্যবস্থা নেবে কি না। গত রাতে একটু সুস্থ ছিলেন রোহন। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে তাঁর প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত বেরোতে থাকে। ডাক্তাররা জানাচ্ছেন, ভয়ের কিছু না থাকলেও এখনই মাঠে নেমে পড়াটা ঠিক হবে না রোহনের। কারণ, একই জায়গায় ফের চোট পেলে তাঁর ক্রিকেট-কেরিয়ার নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। টিম ম্যানেজমেন্টের কেউ কেউ আবার উল্টো রাস্তায় হাঁটছেন। তাঁদের ধারণা, রোহনের পক্ষে ব্যাট করা মুশকিল হবে না। বৃহস্পতিবার তাঁকে ছাড়ার কথা। যা খবর, তাতে রোহনের অবস্থা দেখে সৌরভ-রামন ঠিক করবেন তাঁকে নামানো হবে কি না। |