আজ মোহনবাগান-মহমেডান
শুরুতে শুধু ওডাফা, ব্যারেটো নামবেন পরে
ধূসর কুয়াশায় দূরের ছবিগুলো অস্পষ্ট লাগলেও মাঠের চার পাশ দিয়ে গোল করে একজন অনবরত পাক খাচ্ছেন, সেটা বুঝতে বিন্দুমাত্র অসুবিধা হল না। তিনি ওডাফা ওকোলি। প্রায়শই দেরিতে প্র্যাক্টিসে আসা ভারতীয় ফুটবলের গোলমেশিন আলস্য ভেঙে মোহন-ড্রেসিংরুমের দরজা খোলার আগেই বুধবার অনুশীলনে নেমে পড়েছেন!
কখনও পরামর্শদাতা। কখনও অনুগত ছাত্র। বুধ-সকালের অনুশীলনে হোসে ব্যারেটোর যে ঝলক পাওয়া গেল, তাতে ফুটে উঠল সেই পরিচিত দায়বদ্ধতার ছবি।
ওডাফা-ব্যারেটোর শরীরী ভাষাতেই স্পষ্ট, আর-পাঁচটা সাধারণ ম্যাচের মতো নয়, বৃহস্পতিবারের মহমেডান ম্যাচকে এখনও ডার্বি হিসেবেই দেখছেন বাগানের দুই সুপারস্টার।
ব্যারেটো-ওডাফা। বুধবার প্র্যাক্টিসে। ছবি: উৎপল সরকার।
এ তো গেল মাঠের ভেতরের ছবি। মাঠের বাইরেও মোহন কোচ প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সতর্কবাণী, “মহমেডান ম্যাচ মানেই বড় ম্যাচ। পরিসংখ্যানের বিচারে না হলেও আবেগের বিচারে তো বটেই। আরে, প্রয়াগ ইউনাউটেড ম্যাচের তুলনায় তিনগুণ দর্শক তো মাঠে হবেই!”
কলকাতা লিগের তথাকথিত বড় ম্যাচ খেলতে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগে চরম তৎপরতা মোহনবাগানে। সেট পিস থেকে টিম করে ম্যাচ প্র্যাক্টিসসবেতেই শেষ মুহূর্তের তুলির টান দিতে ব্যস্ত টিডি সুব্রত ভট্টাচার্য। তিনিও ‘বড় ম্যাচ’ বলে আধ ঘণ্টা বেশি অনুশীলনও করালেন!
কিন্তু সত্যিই কি মহমেডানকে বড় দল আর বলা যায়? মোহনবাগানে যখন প্রস্তুতি তুঙ্গে, মহমেডানে জোড়া-তাপ্পির কাজ চলছে। মোহনবাগান ম্যাচের মাত্র চার দিন আগে ফুটবলারদের গণ-ছাটাই হলে যা হয় আর কী! প্রথম এগারো বাছতেই এখন কালঘাম ছুটে যাচ্ছে কোচ অলোক মুখোপাধ্যায়ের। আই লিগ তো দূর অস্ত্, জাতীয় লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনেও ঠাঁই নেই শতাব্দীপ্রাচীন সাদা-কালো জার্সির। অলোক সটান বলে দিলেন, “এই ম্যাচে আমার প্রধান লক্ষ্য যত কম গোল খাওয়া যায়।” এহেন প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে তা হলে এত প্রস্তুতির ধুম কেন ব্যারেটোদের? বিনা যুদ্ধে আপসের প্রবণতা তো আগাম পরাজয় মেনে নেওয়ারই নামান্তর। যেটা অলোকের মন্তব্যে ধরা পড়ছে।
আর হবে না-ই বা কেন? মরসুমের শুরু থেকে যাঁকে নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাতামাতি হল মহমেডানে। বেশির ভাগ ম্যাচের শেষে মহমেডান কোচ যাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন, সেই কোরিয়ান মিডফিন্ডার হ্যান উক হঠাৎই ছাটাই। কোনও খোঁজখবর নেই। কর্তাদের অবাক করা ব্যাখ্যা, “ওর কোনও পারফরম্যান্স নেই।” কিন্তু যাঁরা আছেন, তাঁদেরই বা পারফরম্যান্স কী? অলোক নিজেই ধাঁধায়, ওডাফা-ব্যারেটোদের আটকাতে কোন ফুটবলারের উপর ভরসা করবেন!
সতর্ক মোহনবাগান অবশ্য কোনও ক্রটি রাখছে না। মহমেডানকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে আই লিগে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে আঁটঘাট বেঁধে নামছে সুব্রত-ব্রিগেড। অসীম বিশ্বাসের জ্বর আর হাদসন লিমার চোট বাদ দিলে বাকি সবাইকে এই ম্যাচে পাচ্ছে মোহনবাগান। তবে শুরুতে হয়তো ব্যারেটো থাকছেন না। ফরোয়ার্ডে ওডাফা একাই শুরু করবেন। স্টপারে কিংশুক আর আনোয়ারের দু’পাশে সুরকুমার-ধনরাজন। মাঝমাঠে মণীশ মৈথানি-ড্যানিয়েল-রাকেশ মাসি। দু’টো উইং হাফ স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং কলকাতা লিগে বাধ্যতামূলক অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবলারঅভিনাশ রুইদাস। গোলে সংগ্রাম। প্রশান্ত বলছিলেন, “আমরা ঠিক করেছি প্রথমে ওডাফা শুরু করবে। পরে ব্যারেটোকে নামাব।” যদিও সুব্রতর অনুশীলনে ব্যা-ও জুটিই সারাক্ষণ খেলে গেলেন।
পরিসংখ্যানের বিচারে হোক কিংবা আবেগ, বৃহস্পতিবারের ম্যাচে নিঃসন্দেহে এগিয়ে মোহনবাগান। আর সব প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে মহমেডান জিতলে সেটা অঘটনের তালিকাতেই জায়গা পাবে।
মোহনবাগান-মহমেডান মানে এখন এ রকমই ডার্বি!

বৃহস্পতিবারে: কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে
মোহনবাগান: মহমেডান (যুবভারতী, ২-১৫)।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.