|
|
|
|
দলের ছাত্র সংসদে ‘অনাস্থা’ টিএমসিপি-রই অন্য গোষ্ঠীর |
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
এই প্রথম মেদিনীপুর কলেজের ছাত্র-সংসদ দখল করেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)। সংসদ গঠিত হয়েছে সবেমাত্র। এরই মধ্যে নিজেদের ছাত্র-সংসদের বিরুদ্ধে ‘অনাস্থা’ আনতে টিএমসিপি-রই অন্য গোষ্ঠী আসরে নেমে পড়েছে! পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা-সদরের কলেজে দলীয় সংগঠনের এই অন্তর্দ্বন্দ্বে শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলা তৃণমূলে। সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যেও ‘টিএমসিপি’ নিয়ে নানা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। টিএমসিপি-র জেলা চেয়ারম্যান রমা গিরির অবশ্য দাবি, “সংগঠনে কোনও মতপার্থক্য নেই। কেউ কেউ অপপ্রচার করছেন।”
গত ২৯ নভেম্বর মেদিনীপুর কলেজে ছাত্র-সংসদের ভোট হয়। ভোট পড়েছিল অবশ্য নামমাত্র, ১৭.৬ শতাংশ। প্রতি বছর যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ ভোট পড়ে, সেখানে কেন এ বার এত কম ভোট পড়ল, সে নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এসএফআই, ছাত্র পরিষদের মতো সংগঠনগুলি অভিযোগ করে, এ বার কলেজে ভোটের পরিবেশই ছিল না। তারা টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগও করে। মেদিনীপুর কলেজে মোট ৮৭টি আসন। এর মধ্যে ওই দিন ভোটগ্রহন হয় ৬৪টি আসনে। বাকি ২৩টি আসনে পরে ভোট নেওয়া হবে। ৬৪টি আসনের মধ্যে ৫৫টি পায় টিএমসিপি, ৮টি ডিএসও ও একটি ছাত্র পরিষদ। ২৩টি আসনে ভোটাভুটি বাকি থাকতেই সংসদ গঠনে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়ে যায় টিএমসিপি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় নীতি-নির্দেশ মেনেই ভোটের পর নতুন সংসদ গঠন হয়। সংসদের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন টিএমসিপি-র রাকেশ সাহা।
কিন্তু, তার আগেই তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দেয়। কে সংসদের সাধারণ সম্পাদক, কে সভাপতি বা কারা অন্যান্য পদ পাবেন--সে নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়। দু’পক্ষের মধ্যে বচসাও বাধে। অবস্থা বেগতিক বুঝে শেষমেশ হস্তক্ষেপ করেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ২ ডিসেম্বর দু’পক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয়। আলোচনার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত হয়, দু’পক্ষ সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একটি করে নাম প্রস্তাব করবে। ভাটাভুটি হবে। যে সব থেকে বেশি ভোট পাবে, সেই সাধারণ সম্পাদক হবেন। সেই মতো এক গোষ্ঠী রাকেশের নাম প্রস্তাব করে। অন্য গোষ্ঠী তুহিন রায় নামে অন্য এক ছাত্রের নাম প্রস্তাব করে। ভোটাভুটির দিন ৫২ জন নির্বাচিত টিএমসিপি ছাত্র প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। ভোট শেষে দেখা যায়, তুহিনের পক্ষে ২৫টি ভোট পড়েছে। অন্য দিকে, রাকেশের পক্ষে ২৭টি ভোট পড়েছে। এরপর যথারীতি রাকেশই ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক হন। তবে, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তাতেও থামেনি। বিক্ষুদ্ধ গোষ্ঠী ইতিমধ্যেই সদ্য গঠিত সংসদের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার তোড়জোড় শুরু করেছে। এই গোষ্ঠীর বক্তব্য, কঠিন সময়ে যাঁরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করেছেন, সংগঠনের পাশে থেকেছেন, সংসদ গঠনের সময় তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
ছাত্র সংসদের এই বিতর্ক অশান্তি ছড়িয়েছে দল তৃণমূলের অন্দরেও। আর এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি খুশি এসএফআই। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তারা ইতিমধ্যেই ‘পরিবর্তনের ফল’ নিয়ে বিদ্রূপাত্মক প্রচার শুরু করেছে। |
|
|
|
|
|