প্রতি বছর নিয়ম করে বিভিন্ন সম্মেলন, বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বিশ্বের তাবড় নেতা-নেত্রীরা সেই আলোচনাচক্রে যোগ দেন। সেখান থেকে কখনও সমাধানসূত্র বের হয় কখনও বা নিজের দেশের স্বার্থ বজায় রাখতে গিয়ে গোটা আলোচনাটাই যায় ভেস্তে। কিন্তু এত চেষ্টা সত্ত্বেও পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। আর এই উষ্মায়নের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে পৃথিবীর আবহাওয়া আর বাস্তুতন্ত্রের উপর। কখনও হঠাৎ বন্যা কখনও বা তীব্র খরা। পরিবেশের ভারসাম্যে বিঘ্ন ঘটছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে ২৮ নভেম্বর থেকে আবহাওয়া পরিবর্তন সংক্রান্ত সম্মেলন শুরু হয়েছে। সেখানে উঠে এসেছে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। রাষ্ট্রপুঞ্জের পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচির (ইউএনইপি) সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিশ্ব উষ্ণায়নের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে মহিলাদের উপর। বিশেষত উন্নয়নশীল দেশের পার্বত্য অঞ্চলের মেয়েরা সব থেকে বেশি বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হচ্ছেন। ওই সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ১৯৯৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত শুধু এশিয়াতেই একশো কোটি মানুষ বন্যায় প্রত্যক্ষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমেরিকা, আফ্রিকা ও ইউরোপে এই সংখ্যা যথাক্রমে দু’কোটি আশি লক্ষ, দু’কোটি কুড়ি লক্ষ, এবং চল্লিশ লক্ষ। রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে বলা হয়েছে, খাদ্য সুরক্ষায় এবং পরিবারকে সংগঠিত করতে মেয়েদের ভূমিকা ছেলেদের থেকে অনেক বেশি। অথচ এই সব প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ঘরবাড়ি সর্বস্ব হারিয়ে মানুষ যখন পথে বসে তখন মেয়েদের সুরক্ষাই সব থেকে বিঘ্নিত হয়। অভাব মেটাতে বেশির ভাগ সময়েই মেয়েদের বিক্রি করে দেওয়া হয়। আর এদের অধিকাংশেরই ঠাঁই হয় যৌনপল্লিতে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী নেপালে ১৯৯০ থেকে এখনও পর্যন্ত প্রতি বছর গড়ে বারো থেকে কুড়ি হাজার মানুষ পাচার হয়ে যান। যার অধিকাংশই নারী ও শিশু। ইউএনইপি-র কার্যনির্বাহী অধিকর্তা অ্যাখিম স্টেনার বলেন, “উন্নয়নশীল দেশগুলির সরকারের নারী ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া উচিত। আর সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে কি না, সে বিষয়েও সরকারের লক্ষ রাখা দরকার।” |