সিপিএমের এক লোকাল কমিটির সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতারণা করার অভিযোগ দায়ের করলেন সিপিএমেরই পঞ্চায়েত প্রধান।
ঘটনাটি ওন্দা থানার মেদিনীপুর এলাকার। অভিযুক্ত লক্ষ্মণ ধল্লো সিপিএমের ওন্দা লোকাল কমিটির সদস্য। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন মেদিনীপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের মানিক রায়। সরকারি প্রকল্পে গাছ বিক্রির টাকা পঞ্চায়েতকে কম দেওয়া হয়েছে বলে লক্ষ্মণবাবুর বিরুদ্ধে শনিবার ওন্দা থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। লক্ষ্মণবাবু ওন্দা থানার মদনমোহনপুরের বাসিন্দা। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, “এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মেদিনীপুর পঞ্চায়েত একটি প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগের তদন্ত চলছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক।”
মেদিনীপুর পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৫-’০৬ সালে স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার যোজনা প্রকল্পে মদনমোহনপুর গ্রামে কয়েকশো ইউক্যালিপটাস গাছ লাগানো হয়েছিল। লক্ষ্মণবাবু-সহ এলাকার বেশ কয়েক জন বাসিন্দার জমিতে গাছগুলি পঞ্চায়েত থেকে লাগানো হয়। পঞ্চায়েতের সঙ্গে চুক্তি হয়, গাছগুলি বিক্রি করে যা আয় হবে, তার চার ভাগের এক ভাগ পঞ্চায়েতের প্রাপ্য। চলতি বছরের ১১ নভেম্বর লক্ষ্মণবাবু তাঁর জমিতে বেড়ে ওঠা গাছগুলি এক ব্যবসায়ীকে বিক্রি করেন। পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগ, “গাছগুলি ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়েছে বলে লক্ষ্মণবাবু আমাদের জানিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী পঞ্চায়েতকে ২০ হাজার টাকা দেবেন বলে তিনি জানান। গাছ কাটা শুরু হওয়ার পরে তিনি আমাদের ১০ হাজার টাকা দেন। পরে বাকি টাকা দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা দেননি। ইতিমধ্যে কানাঘুষো শোনা যায়, লক্ষ্মণবাবু গাছগুলি বিক্রি করে অনেক বেশি টাকা পেয়েছেন। পঞ্চায়েতের কাছে তা গোপন করা হয়েছে। লক্ষ্মণবাবু যে ব্যবসায়ীকে গাছগুলি বিক্রি করেছিলেন তাকে জিজ্ঞাসা করে জানা যায়, গাছ গুলি বিক্রি করে লক্ষ্মণবাবু দু’লক্ষ টাকা পেয়েছেন। এরপরেই পঞ্চায়েতে সর্বদল বৈঠক ডেকে লক্ষ্মণবাবুর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।”
ওন্দার বিডিও অঞ্জন ঘোষ বলেন, “মেদিনীপুর পঞ্চায়েত এলাকার এক ব্যক্তি গাছ বেশি দামে বিক্রি করে পঞ্চায়েতে কম টাকা দিয়ে প্রতারণা করেছে বলে একটা অভিযোগের কথা শুনেছি। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ তদন্ত করছে।” জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, লক্ষ্মণবাবু এলাকায় নেই। এ দিন চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে সিপিএমের ওন্দা জোনাল কমিটির সম্পাদক তরুন সরকার বলেন, “অভিযোগের কথা শুনেছি। পুলিশ আশাকরি নিরপেক্ষ ভাবেই তদন্ত করছে। কারও চাপে প্রধান এই অভিযোগ করেছেন কি না তাও খতিয়ে দেখা দরকার।” ওই পঞ্চায়েতের মোট সদস্য সংখ্যা ১১। তার মধ্যে সিপিএমের ৭ জন, ফরওয়ার্ড ব্লক ও তৃণমূলের ২ জন করে সদস্য রয়েছেন।
পঞ্চায়েত প্রধান বলেন, “কারও চাপে নয়, এলাকার বাসিন্দারা ঘটনার কথা জানতে পেরে আমাদের জানিয়েছিলেন। আমাদেরও মনে হয়েছে গোলমাল হয়েছে। তাই পুলিশের কাছে সত্য উদ্ঘাটনের জন্য অভিযোগ করা হয়েছে।” |