করলায় মাছ মড়ক, নদী পরীক্ষায় প্রতিনিধি দল
বিষক্রিয়ায় মাছের মড়কের পরে করলা নদীর জলের ‘স্বাস্থ্য’ পরীক্ষা করে দেখতে জলপাইগুড়িতে আসছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দল। চলতি সপ্তাহেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলটি আসবে বলে জানা গিয়েছে। মাছের মড়কের পরে দেড় সপ্তাহেরও বেশি সময় কেটে যাওয়ার পরে জলের পরিস্থিতি কী রয়েছে তা খতিয়ে দেখতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দলটি ফের জলপাইগুড়িতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান সুদীপ বরাট বলেন, “বর্তমানে নদীর জলের পরিস্থিতি কেমন রয়েছে সেটা খতিয়ে দেখতেই ফের জলপাইগুড়ি যাওয়া হবে। বিষাক্ত কীটনাশকের প্রভাব না কাটলে যে মাছগুলি এখনও বেঁচে রয়েছে তারাও বিপন্ন হয়ে পড়বে। সে কারণেই জলের পরীক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি।” গত ২৮ নভেম্বর জলপাইগুড়ি শহরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া করলা নদীতে মাছের মড়ক শুরু হয়।
ছবি: সন্দীপ পাল।
তারপরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিনিধি দল গিয়ে জলের নমুনা পরীক্ষা করে জানায়, এন্ডোসালফান নামে একটি নিষিদ্ধ কীটনাশক জলে অতিমাত্রায় মিশিয়ে দেওয়াতেই হাজার হাজার মাছের মৃত্যু হয়। পরবর্তীতে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পরীক্ষাতেও এন্ডোসালফান-সহ সাত রকমের কীটনাশকের প্রমাণ পাওয়া যায়। পর্ষদ সূত্রেও জানানো হয়, কীটনাশকগুলির মধ্যে এন্ডোসালফানের মাত্রাই ছিল সবচেয়ে বেশি। নদীর জলকে বিষমুক্ত করতে ফটকিরি, চুনের মিশ্র ছেটানো হয়। বিষাক্ত কীটনাশকগুলিকে দ্রবীভুত তথা নিষ্ক্রিয় করতে করলা নদীতে তিস্তার জল নিয়েও ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। করলা নদীর জলকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে বেশ কয়েকটি সুপারিশও করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। মূল যে ব্যবস্থাটি গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে, সেটি হল, করলা নদীর জলে সমস্ত রকমের আবর্জনা বা বর্জ্য ফেলা নিষিদ্ধ করতে হবে। বিশেষত প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য ফেললে নদীর স্বাভাবিক গতি যেমন ব্যাহত হয় তেমনই নদীর জলে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষজ্ঞ দলের প্রধান সুদীপবাবু বলেন, “বিষক্রিয়ার এত বড় ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে করলাকে অত্যন্ত সংবেদনশীল ভাবে যত্ন নিতে হবে। না-হলে পরে ছোট কোনও দূষণের ফলেও মারাত্মক বিষক্রিয়া হতে পারে। সে কারণেই আমাদের প্রস্তাব, নদীতে সব রকমের আবর্জনা ফেলা বন্ধ করা এবং নদী বক্ষে জমে থাকা জঞ্জাল, আগাছা, চর কেটে সরিয়ে দেওয়া।” জেলা প্রশাসন ও পুরসভার তরফে নদীর জলকে বিষমুক্ত করে তোলার কাজ বুধবারেও হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র বলেন, “আগামী জানুয়ারি মাসে তিস্তা ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ করলা নদীতে কিছু জল ছাড়বেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। পাশাপাশি প্রশাসন নিয়মিত ভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।” করলা নদীর দূষণ ঠেকাতে সচেতনতা প্রসারে উদ্যোগী হয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিও। জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক রাজা রাউত বলেন, “সচেতনতা প্রসারের কাজ শুরু হবে। শহরের সব স্তরের নাগরিকদের নিয়ে সভা করা হবে। করলা নদীর দুই পাড়ে ছবি-সহ ব্যানার, প্ল্যাকার্ড লাগানোর ব্যবস্থাও করা হবে। তবে সবার আগে শহরবাসীকে নিয়ে একটি সচেতনতা সভা করতে উদ্যোগী হয়েছি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.