জোনাল কমিটির সম্মেলন
বাদ পড়া সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দুর্নীতি, স্বজন-পোষণের

তুন কমিটিতে ঠাঁই পেলেন না আগের কমিটির অনেকেই। হাওড়ার জগৎবল্লভপুরে গত ৫ ডিসেম্বর নতুন করে জোনাল কমিটি তৈরিতে বাদ পড়লেন অনেকে। বাদ পড়া সদস্যদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় স্তরেই দুর্নীতি এবং স্বজন-পোষণের অভিযোগ উঠেছিল।
জগৎবল্লভপুরে সিপিএমের দু’টি পৃথক জোনাল কমিটি ছিল। পরবর্তীকালে দু’টি কমিটিকে মিলিয়ে দিয়ে একটি কমিটি গড়া হয়। কমিটির সদস্যসংখ্যা ছিল ৩১। নতুন কমিটিতে তা দাঁড়িয়েছে ১৫য়। বাদ পড়েছেন ১৬ জন। বাদ পড়াদের মধ্যে রয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির দু’জন প্রাক্তন সভাপতি। একজনের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জমি ঠিকাদারদের বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। অন্য জনের বিরুদ্ধে উঠেছিল স্বজন-পোষণের অভিযোগ। যে সব এলাকা থেকে তাঁরা জোনাল কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন সেইসব পঞ্চায়েতে সিপিএম ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কার্যত মুছে গিয়েছে। একই ফল হয়েছে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও।
সিপিএমের নেতৃত্বে তেভাগা আন্দোলনে যে এলাকা এক সময় জেলায় উল্লেখযোগ্য স্থান নিয়েছিল সেই ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত, লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম মুছে গিয়েছে। এখান থেকে জোনাল কমিটির যে দু’জন সদস্য ছিলেন তাঁদেরও এ বার বাদ দেওয়া হয়েছে। এঁদের একজনের বিরুদ্ধে ঠিকাদারদের কাছ থেকে তোলা আদায়ের অভিযোগ উঠেছিল। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছিল সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের কাছেও। পাশপাশি বাদ দেওয়া হয়েছে এমন এক সদস্যকে, একইসঙ্গে যিনি একটি লোকাল কমিটির সম্পাদকও ছিলেন। পেশায় ওই সদস্য প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক হলেও তাঁর বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষিকা অভিযোগ ছিল দিনের পর দিন স্কুলে কামাই করার। প্রতিবাদ করা হলে তিনি হুমকি দিতেন বলে প্রধান শিক্ষিকার অভিযোগ। সিপিএমের দলীয় নেতৃত্ব তো বটেই জেলা প্রাথমিক স্কুল শিক্ষা সংসদের কাছেও এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন ওই প্রধান শিক্ষিকা। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। যে এলাকা থেকে তিনি জোনাল কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব করতেন সেই গ্রাম পঞ্চায়েতেও সিপিএম কার্যত মুছে গিয়েছে।
সিপিএমের দলীয় সদস্যদের একাংশের বক্তব্য, বিভিন্ন মহল থেকে এ সব অভিযোগ তোলা হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগগুলিকে আমল না-দিয়ে বছরের পর বছর ওই সব নেতাকে জোনাল কমিটির সদস্য করে রাখা হয়েছিল। ফলে জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। পঞ্চায়েত, লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে জগৎবল্লভপুরে সিপিএমের যে ভরাডুবি হয় তার পিছনে এ সব কারণ অন্যতম বলে দলীয় কর্মীদের একাংশ মনে করেন।
দলের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার অবশ্য বলেন, “আমরা এখন বিরোধী দলে রয়েছি। ফলে দ্রুত যাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় সেই কারণেই জোনাল কমিটিগুলিকে আয়তনে ছোট করার জন্য রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তা ছাড়া, জগৎবল্লভপুর জোনাল কমিটি আয়তন অনেকটাই বড় ছিল। ফলে অর্ধেকের বেশি সদস্য বাদ পড়েছেন। জেলার অন্যান্য জোনাল কমিটিগুলিতেও দু’চার জন করে পুরনো সদস্য বাদ পড়েছেন।”
বাদ পড়া কয়েকজন সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং স্বজন-পোষণের অভিযোগ অস্বীকার করে বিপ্লববাবু বলেন, “যদি কোনও নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে তা হলে তাঁকে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা দলের গঠনতন্ত্রেই রয়েছে। কমিটির সদস্যপদ থেকে বাদ দেওয়ার সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। আসলে দলের ওইসব সদস্যদের মধ্যে অনেকেরই বয়স হয়ে গিয়েছে। তাঁরা নিজেরাই জানিয়েছিলেন সদস্য হিসাবে দলের জন্য সময় তাঁরা দিতে পারবেন না। সেই কারণে তাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.