হিংলোয় ‘বিতর্কিত রাস্তা’ পরিদর্শনে সেচ দফতর
রাস্তা নয়, হিংলো নদীর উপরে মাটি ফেলে অস্থায়ী বাঁধ তৈরি করা হচ্ছিল বলে সেচ দফতরের কাছে দাবি করলেন কিছু বাসিন্দা। দুবরাজপুরের পলাশডাঙা গ্রামে বুধবার সকালে ওই ‘বিতর্কিত বাঁধ’ পরিদর্শনে আসেন এসডিও (হিংলো সেচ) বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, ওই এলাকায় খোলামুখ কয়লা খনির জন্য মাটি ফেলে নদীর গতি আটকে রাস্তা তৈরির অভিযোগ উঠেছে ‘পাবলিক-প্রাইভেট পাটর্নারশিপ’-এ (পিপিপি) গড়া সংস্থার ডিভিসি-এমটার বিরুদ্ধে। সোমবার এলাকা ঘুরে নদীর গতিপথ ‘মুক্ত’ করতে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত। যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রকল্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্মল সরকার। তাঁর যুক্তি ছিল, “সংস্থা নয়। গ্রামবাসীদের অনুরোধ মেনে ওই রাস্তায় মাটি ফেলা হচ্ছে।”
নদীর গতিপথ ‘মুক্ত’ করার জন্য সুভাষবাবু প্রশাসনের কাছে যে অনুরোধ করেছিলেন তারই ভিত্তিতে বুধবার এসডিও (হিংলো সেচ) বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ওই ‘বাঁধ’ পরিদর্শনে আসেন। সেই সময় অবশ্য নির্মলবাবুর বক্তব্যকে সমর্থন করে এগিয়ে আসেন পলাশডাঙা গ্রামের বেশ কয়েক জন কৃষক। তাঁরা বলেন, “রাস্তা নয়, রবি শস্যের জন্য জল পেতে নদীতে আমরা অস্থায়ী বাঁধ দিচ্ছিলাম। ওই সংস্থা বিনা পয়সায় শুধু মাটির জোগান দিয়েছে।” তবে বিদ্যুৎবাবু এ দিন কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, “যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলব।”
স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী দুবরাজপুরের লোবা পঞ্চায়েতের লোবা-সহ ১০টি মৌজার প্রায় ৩,৫০০ একর জমিতে একটি খোলা মুখ কয়লা খনি গড়ে ওঠার কথা। সে জন্য জমি কেনা শুরু করেছে ডিভিসি-এমটা। দু’-একটি মৌজা থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে অল্প কিছু জমি কিনে খননের কাজও শুরু করেছে তারা। দিন পনেরো আগে ওই সংস্থার তরফে পলাশডাঙা গ্রাম এবং পলাশডাঙা চরের মধ্যে হিংলো নদীর উপরে রাস্তা বানানোর জন্য মাটি ফেলতে দেখে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ বাধা দেন। দেখতে দেখতে প্রায় ১৫০ মিটার দীর্ঘ এবং ফুট চারেক উঁচু রাস্তা তৈরি হয়ে যায়। কাজ বাকি রয়েছে সামান্যই।
তাঁদের বক্তব্য ছিল, এ ভাবে নদীর গতিপথ আটকে রাস্তা করলে ভবিষ্যতে বন্যা কবলিত হতে পারে তাঁদের এলাকা। একই বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্র ও পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্ত।
তবে যাঁরা এ দিন বাঁধ তৈরিকে সমর্থন করেছেন তাঁদের মধ্যে পরীক্ষিৎ ঘোষ, মানিক ঘোষরা দাবি করেন, “হিংলো নদী পলাশডাঙা গ্রামের পরে কিছু দূর গিয়ে অজয় নদে মিশেছে। বর্ষার পরে এই নদীতে যেহেতু জল কমে যায়, তাই প্রতি বছর আমরা নদীতে বালির বাঁধ দিয়ে জল আটকে শীতের ফসল চাষ করি। এ বার ওই সংস্থা খনির জন্য মাটি কাটছে। তাই ওই মাটি দিয়েই বাঁধ বানাচ্ছিলাম।” এই যুক্তি মানতে নারাজ কৃষি জমি রক্ষা কমিটির নেতা জয়দীপ মজুমদার। তিনি বলেন, “বালির বাঁধ আর মাটির বাঁধ এক নয়।” তাঁর দাবি, “আসলে ওই সংস্থা এলাকার কিছু জমি কিনে মাটি তোলা শুরু করেছে। সেই মাটি সরানোর জন্যই নদীর উপরে মাটি ফেলে একটি রাস্তা তৈরি করছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.