ভরাট হল রাস্তার ফাটল, খনি বন্ধই
সের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত পাণ্ডবেশ্বরের শোনপুর বাজারি প্রকল্প এলাকার রাস্তাটি সংস্কার করলেন ইসিএল কর্তৃপক্ষ। বুধবারই সেই রাস্তা দিয়ে পরিবহণ চালু করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ওই প্রকল্প এলাকায় ধসের জেরে রাস্তার নানা জায়গায় ফাটল তৈরি হয়। ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, শোনপুর বাজারির খোলামুখ খনি থেকে কয়লা কাটার আগে পাথর ও মাটি তুলে জমা করে রাখা হয়েছিল অনেক দিন আগে। এর পরে ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে পাশেই আর একটি প্যাচ চালু হয়। তার জন্য কাটা পাথর-মাটিও ফেলা শুরু হয় আগে থেকে জমে থাকা ওই সব পদার্থের উপরেই। ওই এলাকাতেই হরিপুর ১ নম্বর ইনক্লাইনের ডোবরানা কয়লা স্তরে কাজ চলছে। ওই দিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ হঠাৎ জমে থাকা ওই সব পাথর-মাটি বসতে শুরু করে। এর জেরেই পরিবহণ রাস্তার তিনশো মিটার এলাকা জুড়ে ফাটল দেখা দেয়। ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০টি ফাটল তৈরি হয়। এমনকী, রাস্তাটি যেখানে গিয়ে উঠেছে সেই ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের খানিকটা দূরেও ফাটল দেখা গিয়েছিল। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে রাস্তার পাশের ১৭টি বিদ্যুতের খুঁটি। এর জেরে হরিপুর কোলিয়ারির ১ নম্বর ইনক্লাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। কর্মরত শ্রমিকেরা ভূগর্ভ থেকে উপরে উঠে আসেন। কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার ধসে ফুটিফাটা হয়েছিল কয়লা খনির রাস্তা। বুধবার দুপুরের মধ্যেই তা
সারিয়ে গাড়ি চলার উপযোগী করা হয়েছে। পাণ্ডবেশ্বরে ওমপ্রকাশ সিংহের তোলা ছবি।
বুধবার সকাল থেকেই ওই রাস্তা সারানোর কাজ শুরু করে ইসিএল। ডোজার দিয়ে মাটি ভরাট করে রাস্তা সমান করার কাজ হয়। দুপুর ১টা থেকে ওই রাস্তা দিয়ে ফের পরিবহণ চালু করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসিএল। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিপর্যস্ত হওয়ায় এ দিনও হরিপুর কোলিয়ারির ১ নম্বর ইনক্লাইনে কাজ শুরু করা যায়নি। খনিতে বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার ধসের ঘটনার পরে পাথর-মাটির ‘ওভার বার্ডেন’-ই এ জন্য দায়ী বলে দাবি করেছিল বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। ইসিএল কর্তৃপক্ষও কার্যত স্বীকার করে নেন, ‘ওভার বার্ডেন’-এর জন্যই এমন ঘটনা। শ্রমিক নেতারা অভিযোগ তুলেছিলেন, কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই ধস ও ফাটল হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইসিএলের এক আধিকারিকও এ দিন জানান, ‘ওভার বার্ডেন ডাম্পিং’ বিধি মানা হয়নি। তিনি বলেন, “জমা করা মাটি-পাথরের উচ্চতা বেশি হয়ে যাওয়া তার চাপে ভূমিস্তর আড়াআড়ি সরে গিয়েছে। যেখানে জমি দুর্বল, সেখানে বেশি ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা। কতটা জমিতে এর প্রভাব পড়েছে, তা খতিয়ে দেখা দরকার। কারণ, নীচে হরিপুর খনি রয়েছে। উপরে ফাটল ধরে খনিতে কোনও ভাবে হাওয়া পৌঁছলে বিপদের সম্ভাবনা থেকে যায়।” ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরী সচিব নীলাদ্রি রায় অবশ্য জানান, সমস্ত রকম প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নীরিক্ষা করা হয়েছে। হরিপুর কোলিয়ারির ১ নম্বর ইনক্লাইনের কোনও ক্ষতি হয়নি। খনিগর্ভ সুরক্ষিত রয়েছে।
এ দিন আইএনটিইউসি নেতা ভক্তিপদ চক্রবর্তী জানান, বেশ কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে একজোট হয়ে কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কয়লা পরিবহণের জন্য বিকল্প রাস্তা হিসেবে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক ব্যবহার করা যাবে না। কারণ প্রতি দিন দু’শোরও বেশি কয়লা বোঝাই গাড়ি প্রকল্প এলাকার রাস্তাটি দিয়ে যাতায়াত করে। তা জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে চলাচল শুরু করলে বিপজ্জনক দশা হবে। ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, পরিবহণের রাস্তা সারিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই বিকল্প হিসেবে জাতীয় সড়ক ব্যবহারের প্রশ্নই নেই।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.