জঙ্গলমহলে রাতে ট্রেন নয় এখনই |
মাওবাদী নাশকতা অব্যাহত। তাই জঙ্গলমহল দিয়ে রাতের ট্রেন চলাচলের সম্ভাবনা আবার পিছিয়ে গেল। রেল, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও রাজ্য সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ে পর্যালোচনা কমিটি সব কিছু খতিয়ে দেখে জানিয়েছে, কবে থেকে ওই এলাকায় রাতে ট্রেন চলাচল শুরু হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ফলে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দূরপাল্লার বেশ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রীদের দুর্ভোগও বহাল থাকল। এক মাস পরে ফের বসবে রিভিউ কমিটি। জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতার পর দিন থেকেই ওই লাইনে রাতে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তার পর দেড় বছরেরও বেশি কেটে গিয়েছে। খড়্গপুর-টাটানগর মেন লাইনে তেমন কোনও বড় হামলা না হলেও, কয়লা ও লোহার আকরিক ভর্তি মালগাড়ির উপরে মাওবাদীরা হামলা চালিয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ওই শাখা এবং ঝাড়খণ্ডে গ্র্যান্ড কর্ড শাখায় এ পর্যন্ত ২০ বার হামলা চালিয়েছে মাওবাদীরা। সম্প্রতি গ্র্যান্ড কর্ড শাখার ধানবাদ ডিভিশনে ৪ ডিসেম্বর ফের রেল লাইনে হামলা হয়। বিস্ফোরণে আপ ও ডাউন লাইনের কয়েক ফুট উড়ে যায়। প্রায় ৯ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে কেন্দ্র ও রাজ্য দু’পক্ষই এখন কোনও ঝুঁকি নিতে চাইছে না। যে সব এলাকায় রাতের ট্রেন বন্ধ, তার প্রায় ৮০ ভাগই মাওবাদী অধ্যুষিত। সেখানে ট্রেন চালাতে গেলে প্রচুর নিরাপত্তা রক্ষী প্রয়োজন। এমনিতেই তিন রাজ্যে মাওবাদী দমনে যৌথ বাহিনী রয়েছে। তার ওপর কয়েক’শো কিলোমিটার রেল লাইনের প্রহরা দিতে যত নিরাপত্তারক্ষী লাগবে, তা রেলের হাতে নেই। এমনিতেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি জানিয়েছে রেল। ফলে আপাতত কেন্দ্র, রাজ্য বা রেল কেউই দিতে পারছে না অতিরিক্ত বাহিনী। রেল অবশ্য জঙ্গলমহলে রেল লাইনের নিরাপত্তা বাড়াতে নতুন ধরনের ‘প্যানড্রোল ক্লিপ’ লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় রেল লাইনে প্রায় ৩৫ হাজার ওই ধরনের ক্লিপ বসানো হয়েছে।
|
শনি-রবিতেও কিছু আদালতে কাজ চায় রাজ্য |
রাজ্যের সব স্তরের আদালতেই মামলার পাহাড় জমেছে। এই অবস্থায় মামলার চাপ কমাতে শনি ও রবিবার সব জেলায় একাধিক আদালত খুলে রাখতে চাইছে রাজ্য সরকার। বার কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনার পরেই এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আইন ও বিচার মন্ত্রী মলয় ঘটক জানান। মন্ত্রী বলেন, “ওই আদালত অনেকটা ‘কনজিউমার কোর্ট’ (ক্রেতা আদালত)-এর মতো। যেখানে আইনজীবীরা সংশ্লিষ্ট বিচারকের অনুমতি নিয়ে মামলা স্থানান্তরিত করতে পারবেন। সেই কারণে একে বলে ‘শিফট কোর্ট’। এতে মামলার চাপ অনেকটাই কমবে।” কেন এই উদ্যোগ? আইন ও বিচার দফতরের এক অফিসার জানান, শনিবারেও বহু আদালতে অভিযুক্তদের হাজির করে পুলিশ। রবিবার আদালত খোলা থাকলে পুলিশ-প্রশাসন, এমনকী সাধারণ মানুষকেও বিচার-পরিষেবা দেওয়া যাবে। তাই এই ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়েছে।
|
সঙ্গীতা-রেখার গল্প ২০১৩-র পাঠ্যবইয়ে |
সময়াভাবে আগামী বছরের পাঠ্যসূচিতে না হলেও ২০১৩ সালের প্রাথমিক শিক্ষাতে অবশ্যই স্থান পেতে চলেছে রেখা কালিন্দী, আফসানা খাতুন, মুক্তি মাঝিদের লড়াইয়ের কাহিনি। পরিবারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে চায়নি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া জেলার এই মেয়েরা। অদম্য সেই জেদকে সম্মান জানান রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলও। এ বার সেই জেদি মেয়েদের কাহিনি আসতে চলেছে পাঠ্যপুস্তকেও। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকেই প্রাথমিকে রেখা কালিন্দী, বীণা কালিন্দী, আফসানা খাতুন, সঙ্গীতা বাউরি, মুক্তি মাঝি, সুনীতা মাহাতো এই ছয় কন্যার লড়াইয়ের কথা পড়ানো হবে। কিন্তু আজ রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, আসন্ন শিক্ষাবর্ষের বই ছাপানো হয়ে গিয়েছে। তাই রেখাদের কথা পড়ানো হবে ২০১৩ থেকে। কাল রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার কথা আছে এই মেয়েদের। নিজেদের কাহিনি পাঠ্যবইয়ে দেখে কেমন লাগবে? মুক্তি জানায়, “আমাদের গল্প যদি বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে অন্যদের সাহায্য করে তা হলেই লড়াই সার্থক হবে।” |