দাবিমতো বাপেরবাড়ি থেকে টাকা এনে না দেওয়ায় এক বধূকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগে তাঁর স্বামীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার রাতে হাড়োয়ার মোহনপুরের বাছড়া-কালীবাড়ি পাড়ার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা মাণিক্যের (২০) মৃত্যু হয়। তাঁর বাবা পরিতোষ সানা পুলিশের কাছে মেয়ের স্বামী সত্যব্রত, শাশুড়ি মালতি মাণিক্য-সহ শ্বশুরবাড়ির পাঁচ জনের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ দায়ের করেন থানায়। সোমবার সত্যব্রতকে গ্রেফতার করা হলেও বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতকে মঙ্গলবার বসিরহাট এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিন জেল হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর সাতেক আগে গোপালপুরের পুকুরিয়া গ্রামের প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে সত্যব্রতের বিয়ে হয়। তাঁদের ৬ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। প্রিয়াঙ্কার বাপেরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, বিয়েতে চাহিদা মতো যৌতুক দেওয়া সত্ত্বেও আরও টাকার দাবিতে প্রিয়াঙ্কার উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাচ্ছিলেন তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। সম্প্রতি বাড়ি করার জন্য শ্বশুরের কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন সত্যব্রত। কিন্তু এই দাবি মেটানো সম্ভব নয় জানানোয় প্রিয়াঙ্কার উপরে অত্যাচারের মাত্রা বাড়ে। মারধরের পাশাপাশি, খেতে না দেওয়া, গায়ে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেওয়া চলছিল।
গত শুক্রবার প্রিয়াঙ্কার মা চায়নাদেবী মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে যান। তাঁর সামনেই মেয়েকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শনিবার সত্যব্রত ও তাঁর পরিবারের লোকজন গ্রামবাসীদের জানান, গলায় গামছার ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। সন্দেহ হওয়ায় গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। পরিতোষবাবু পুলিশের কাছে দাবি করেছেন, তাঁর নাতনি জানিয়েছে, বাবা-মায়ের বচসা হচ্ছিল। ঠাকুমা-সহ কয়েক জন তার মাকে মারেন। তার পরে সকলে মিলে বালিশ চাপা দিয়ে মেরে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে দেয় দেহটি।
এসডিপিও (বসিরহাট) আনন্দ সরকার জানিয়েছেন, অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বধূর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ বোঝা সম্ভব নয়। |