|
|
|
|
বিদ্যাসাগর সেতু |
নতুন বছরে নতুন আলোকসজ্জা |
অশোক সেনগুপ্ত |
নতুন বছরের গোড়াতেই বিদ্যাসাগর সেতুর আলোকসজ্জার কাজ শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স (এইচআরবিসি)। ‘ভারতের প্রথম আধুনিক আলো-ব্যবস্থায়’ সাজানো হচ্ছে সেতুটি। যার জন্য খরচ হচ্ছে চার কোটি টাকা।
ঘড়ি ধরে গঙ্গার সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি সপ্তাহেই পূর্বাঞ্চলীয় সেনা-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে সবিস্তার আলোচনার পরিকল্পনা করেছেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। কলকাতাকে লন্ডনের মতো এবং লন্ডনের টেম্স নদীর আদলে গঙ্গাকে সাজানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সে পরিকল্পনা রূপায়ণের প্রাথমিক কাজও চলছে। বিদ্যাসাগর সেতুর আধুনিক আলো-ব্যবস্থার পরিকল্পনা হয়েছিল অবশ্য বাম-সরকারের আমলের শেষ দিকে। বিধানসভা ভোটের আগে ৭ জুলাই প্রকল্পটির উদ্বোধন করেছিলেন তৎকালীন পরিবহণমন্ত্রী রঞ্জিত কুণ্ডু। |
|
মুম্বইয়ের যে সংস্থা এই আলোকসজ্জার কাজ করছে, তাদের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার অসীম দত্ত জানান, বান্দ্রা-ওরলির সমুদ্র সেতুর চেয়েও বিদ্যাসাগর সেতুর আলো-ব্যবস্থা হবে অনেক আধুনিক এবং আকর্ষণীয়। তিনি বলেন, “ক্ষণে ক্ষণে বদলে যাবে এই আলোর রং এবং আদল। পরিবর্তন হবে এত ধীরে যে কী ভাবে হচ্ছে, তা ধরাই যাবে না। বৈচিত্র বাড়াতে লাইট এমিটিং ডায়োড (এলইডি)-এর পাশাপাশি থাকবে জেনন এবং মেটাল হ্যালাইড বাতি। ভারতের কোনও সেতুর উপরে এত আধুনিক ও আকর্ষণীয় আলো-ব্যবস্থা হয়নি।” প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ বান্দ্রা-ওরলির সমুদ্র সেতুর আলোকসজ্জার কাজও করেছে তাঁদের সংস্থা।
এখন ৮২২.৯৬ মিটার দীর্ঘ বিদ্যাসাগর সেতুতে এক লক্ষ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ লাগে। যার জন্য বছরে খরচ হয় ২৭ লক্ষ টাকা। নয়া আলোক-ব্যবস্থায় লাগবে ২০ হাজার কিলোওয়াট। কার্বন নির্গমনের হারও কমবে। গোটা ব্যবস্থা কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত হবে বলে ওই সংস্থা সূত্রে খবর।
চলতি বছরের ৭ অক্টোবর এই কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তা হয়নি। সমস্যাটি কোথায়? অসীমবাবু বলেন, “বিভিন্ন সিদ্ধান্তের পরে কাজের ছাড়পত্র দিতে এইচআরবিসি অস্বাভাবিক সময় নিচ্ছে। আমরা পৃথিবীর অনেক বড় আলো-প্রকল্পের কাজ করি। এ রকম দেখিনি।” কথা মতো টাকাও তাঁরা এইচআরবিসি-র কাছ থেকে পাননি বলে অভিযোগ। এইচআরবিসি-র ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “সিদ্ধান্ত কার্যকরী করতে যা সময় লাগার কথা, তা-ই লাগছে। আগামী জানুয়ারির গোড়ায় আলোর কাজ শেষ হয়ে যাবে। বলতে পারেন, এটি হবে শহরবাসীকে নববর্ষের উপহার।”
১৯৯২ সালের ১০ অক্টোবর উদ্বোধন হয় বিদ্যাসাগর সেতুর। গোড়ার দিকে এর অপ্রতুল আলো নিয়ে কথা ওঠে। পরে এইচআরবিসি সেখানে সোডিয়াম বাষ্পের বাতি বসায়। ২০১০-এর মাঝপর্বে সিদ্ধান্ত হয়, ‘ইনটেলিজেন্ট ডায়নামিক লাইটিং’ নামে আধুনিক আলো-ব্যবস্থায় সেতুর আকর্ষণ বাড়ানো হবে। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় আপত্তি জানিয়ে একটি সংস্থা আইনি প্রশ্ন তুলে আদালতের স্থগিতাদেশ নেওয়ায় গোড়াতেই কাজে বিঘ্ন ঘটে। জটিলতা কাটার পরে ফের শুরু হয় কাজ। |
|
|
|
|
|