খেলার টুকরো খবর
(বীরভুম)

হারিয়ে যাচ্ছে ঝুপ-ঝাল্লুর
মাটির দিকে ঝুঁকে থাকা স্বল্প উচ্চতার গাছের ডালে রাম ভক্তের মতো ঝুলে কিংবা পা ছড়িয়ে বসে রয়েছে এক দল কচিকাঁচা। আচমকা তাদেরই এক জন ঝুপ করে লাফিয়ে পড়ে মাটিতে। তখন বাকিরা এক সঙ্গে ঝাল্লুর বলে চেঁচিয়ে ওঠে। এই খেলার প্রচলিত নাম ‘ঝুপ-ঝাল্লুর’ বা ‘ঝরোল ঝাপ’। কবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের ‘বনবাস’ কবিতাতে ওই খেলার উল্লেখ আছে। কবি লিখেছেন, ‘কোথা আম গাছে ঝুপ-ঝাল্লুর, কোথা বট গাছে ঝুলব।’ নানা কারণে আজ এই খেলা বিলুপ্তির পথে। ঝুপ-ঝাল্লুর-এ ছেলে-মেয়ে এক সঙ্গে কিংবা আলাদা আলাদা ভাবে খেলা হয়। ওই খেলার জন্য প্রয়োজন কম উচ্চতায় মাটির দিকে ঝুঁকে থাকে গাছের শক্ত ডাল। আম, জাম, পেয়ারা বা ঝুরি বিশিষ্ট বট গাছ এই ধরনের খেলায় বেশি ব্যবহৃত হয়। ওই সব গাছ থেকে ২৫-৩০ ফুট দূরত্বে আরও একটি অপেক্ষাকৃত ছোট গাছ প্রয়োজন। সেই ছোট গাছটিকে খেলার ভাষায় ‘বুড়ি’ বলা হয়। উবু-দশ-কুড়ি-তিরিশ-চল্লিশ-পঞ্চাশ-ষাট-সত্তর-আশি-নব্বই-শ হিসেবে খেলোয়াড়দের মধ্যে গণনার মাধ্যমে এক জন ‘মোড়’ নির্বাচিত হয়। মোড় নির্বাচিত খেলোয়াড় ছাড়া বাকিরা অপেক্ষাকৃত বড় গাছে উঠে মাটিতে ঝুপ করে লাফিয়ে পড়ার জন্য প্রস্তুত থাকে। আর ‘মোড়’ চিহ্নিতকে ‘বুড়ি’ ছুয়ে ছুটে আসতে হয় বড় গাছের নীচে। তার ছুটে আসার মুহূর্তে কেউ যদি ঝাল্লুর বলে মাটিতে লাফিয়ে পড়তে পারে তা হলে ফের ‘বুড়ি’ ছুঁয়ে আসতে হয় মোড়ধারী খেলোয়াড়কে।
যদি লাফিয়ে পড়ার সম্ভব না হয় তা হলে মোড়ধারী বড় গাছের চারপাশে ঘুরে বেড়ায়। লাফিয়ে বা গাছে উঠে অন্যদের ছোঁয়ার চেষঅটা করে। যাকে ছুঁতে পারবে তাকেও একই প্রক্রিয়া মোড় খাটতে হয়। আর প্রথম মোড়ধারী গাছে উঠে অন্যদের সঙ্গে সামিল হয়। আবার গাছ থেকে লাফিয়ে পড়া খেলোয়াড়কে মোড়ধারী দ্বিতীয় বার বুড়ি ছুঁয়ে আসার আগেই ক্ষিপ্রতার সঙ্গে গাছে উঠতে হয়। যতক্ষণ না আর কেউ লাফ দিচ্ছে ততক্ষণ গাছ কামড়ে তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। অন্য কেউ লাফ দেওয়ার পরে মোড়ধারী বুড়ি ছুঁয়ে আসার ফাঁকে গাছে ওঠার সুযোগ পান গাছ কামড়ে থাকা খেলোয়াড়। ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া স্কুলের শিক্ষক জীতেন্দ্রনাথ সরখেল, ঢেকার সন্তোষ মণ্ডল বলেন, “এখন ওই খেলার উপযুক্ত গাছই নেই। নেই গাছে ওঠার ক্ষমতাও। আবার গাছ থেকে পড়ে হাত-পা ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কায় অভিভাবকেরা ছেলেমেয়েদের এই খেলা খেলতে দেন না।”

(পর্ব-২)

বোলপুর মহকুমা ক্রীড়া
বোলপুর স্টেডিয়ামে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।
বোলপুর পশ্চিমচক্র ও নিবিড় চক্রের ব্যবস্থাপনায় ২ ডিসেম্বর বোলপুর স্টেডিয়ামে হয়ে গেল বোলপুর মহকুমা আন্তঃপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল। প্রতিযোগিতায় মহকুমার ১৭৫টি প্রাথমিক এবং শিশু শিক্ষাকেন্দ্রের ২৭৫ জন প্রতিযোগী ৩৮টি ইভেন্টে যোগ দিয়েছিল। এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেছিলেন বীরভূম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রাজা ঘোষ। খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন এশিয়াড সোনাজয়ী ক্রীড়াবিদ পিঙ্কি প্রামাণিক, বোলপুর মহকুমাশাসক প্রবালকান্তি মাইতি, বিডিও অমল সাহা-সহ আরও অনেকে। যুগ্ম আহ্বায়ক মানবেন্দ্র ঘোষ ও মিলন রায় জানান, প্রতিটি ইভেন্টে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীরা জেলা স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেবে।

প্রিমিয়ার লিগ
ইলামবাজার আলাপী সঙ্ঘের পরিচালনায় ৪ ডিসেম্বর থেকে স্থানীয় পশুহাট সংলগ্ন মাঠে শুরু হয়েছে ৬ দলীয় প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল স্থানীয় এম জি রয়েলস ও অক্টোপাস। টসে জিতে অক্টোপাস প্রথমে ব্যাট করে। নির্ধারিত ১০ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে ১৪৪ রান করে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে এম জি রয়েলস ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান তোলে। ১৮ ডিসেম্বর ওই প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা হবে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। আয়োজক সংস্থার কোষাধ্যক্ষ বাবলু সাহানা জানিয়েছেন, ট্রফি-সহ প্রতিযোগিতায় জয়ী ও রানার্স দলকে যথাক্রমে ২০ ও ১৫ হাজার টাকা পুরস্কার বাবদ দেওয়া হয়েছে।

রামপুরহাটে স্কুল ক্রীড়া
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ আয়োজিত রামপুরহাট মহকুমা আন্তঃবিদ্যালয় বার্ষিক ক্রীড়া কমিটির পরিচালনায় ২ ডিসেম্বর ওই মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার মাঠে হয়ে গেল মহকুমাস্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। স্থানীয় ১২টি চক্রের প্রাথমিক স্কুল, শিশু শিক্ষাকেন্দ্র এবং মাদ্রাসার ৪৪৩ জন প্রতিযোগী ৩৮টি ইভেন্টে যোগ দিয়েছিল। প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেছিলেন রামপুরহাটের পুরপ্রধান নির্মল বন্দ্যোপাধ্যায়। স্টেডিয়ামে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হরেকৃষ্ণ পাল, জেলা প্রাথমিক স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজা ঘোষ প্রমুখ। যুগ্ম আহ্বায়ক অনঙ্গ মোহন আলিপাত্র এবং কিশোর মণ্ডল জানান, প্রতিটি ইভেন্টের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানাধিকারীরা জেলা স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দেবে।

সিউড়িতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা
সিউড়ি সদর ওয়েস্ট সার্কেল ও সিউড়ি সেন্ট্রাল সার্কেলের যৌথ পরিচালনায় ২ ডিসেম্বর সিউড়িতে জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠে হয়ে গেল মহকুমা স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। স্থানীয় ১২টি চক্রের প্রাথমিক, নিম্নবুনিয়াদি, শিশু শিক্ষাকেন্দ্র ও মাদ্রাসার তিন শতাধিক প্রতিযোগী ৩৮টি ইভেন্টে যোগ দিয়েছিল। যুগ্ম আহ্বায়ক কাকলি জোয়ারদার এবং সুমন মণ্ডল জানিয়েছেন, প্রতিটি ইভেন্টে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থানাধিকারীরা জেলা স্তরের প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে।

সিধোর স্মরণে খেলা
সাঁওতাল বিদ্রোহের নেতা সিধোর স্মরণে ১ ও ২ ডিসেম্বর রাজনগরের বাঁশবোনা মাঠে হয়ে গেল আদিবাসী ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। স্থানীয় আদিবাসী মাজহী গাঁওতার পরিচালনায় দু’দিনের এই প্রতিযোগিতায় ৪৩টি গ্রামের দুই শতাধিক প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিলেন। ১০টি ইভেন্টে ১০-১৫ বছর বয়সী ছেলে-মেয়েদের মধ্যে হাইজাম্প, লংজাম্প, দৌড়-সহ নানা প্রতিযোগিতা হয়। মাঠে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ। আয়োজন সংস্থার সভাপতি কালীপদ মুর্মু বলেন, “এই উপলক্ষে প্রয়াত নেতার মূর্তির আবরণ উন্মোচন করা হয়।”

সংক্ষেপে
রাজ্য যুব কল্যাণ দফতরে উদ্যোগে এবং জেলা যুব করনের ব্যবস্থাপনায় বোলপুর স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে দু’দিনের পঞ্চায়েত যুব ক্রীড়া ও খেল অভিযান (পাইকা) প্রকল্পের গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ওই প্রতিযোগিতায় বোলপুর ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েতের ৫০০ জন প্রতিযোগী ৫টি ইভেন্টে যোগ দিয়েছেন। উপস্থিত ছিলেন সংস্থার আহ্বায়ক গৌতম সাহা, বিডিও অমল সাহা, বিশ্বভারতীর ক্রীড়া বিভাগের সহঅধিকর্তা অভিজিৎ থান্দার, বিদ্যালয় ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিশ্বজিৎ মণ্ডল।
৯ ডিসেম্বর সিউড়ির পুরন্দরপুর স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত হবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ আয়োজিত জেলা স্তরের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। যোগ দেবে মহকুমা স্তরের প্রতিটি ইভেন্টের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীরা।
৮ ডিসেম্বর শেষ হল ময়ূরেশ্বরের লোকপাড়া আমরা ক’জন পরিচালিত ১৬ দলীয় নক আউট ক্রিকেট প্রতিযোগিতার প্রথম রাউন্ডের খেলা। ১০ নভেম্বর স্থানীয় কলেজ মাঠে ওই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। আগামী ১৫ ডিসেম্বর প্রতিযোগিতার ফাইনাল।
ময়ূরেশ্বর ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি ও সংশ্লিষ্ট ব্লক যুব কল্যাণ দফতরের যৌথ উদ্যোগে ৪ ডিসেম্বর কোটাসুর স্কুল মাঠে হয়েছে পঞ্চায়েত খেল প্রতিয়োগিতা (পাইকা)। ভলিবল, কবাডি, তীরন্দাজি-সহ ১০টি ইভেন্টে ১৫০ জন প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিলেন।
৫ ডিসেম্বর সাঁইথিয়া ব্লক যুব কল্যাণ দফতরের উদ্যোগে আমোদপুরে অনুষ্ঠিত হল ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। ১২টি ইভেন্টে দুই শতাধিক প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিলেন। উদ্বোধন করেন সাঁইথিয়ার যুগ্ম বিডিও দিব্যজ্যোতি দাস। উপস্থিত ছিলেন ব্লক যুব কল্যাণ আধিকারিক মলয় মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.