মহরমের দিনে জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল আফগানিস্তান। প্রথমে কাবুল। তার খানিক পরেই মাজার-এ-শরিফ। দু’টি ঘটনায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬০ জন। আহত ১৬৪। বেশির ভাগই মহিলা ও শিশু।
মধ্য কাবুলের মুরাদখানি এলাকায় একটি শিয়া মসজিদের গায়েই আবুল ফজল আব্বাস বেদি। তার সামনে সকালে জমায়েত হয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। তার মধ্যেই আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটে। সরকারি হিসেবে শুধু কাবুলেই নিহত ৫৪ জন। মাজার-এ-শরিফে তুলনামূলক ছোট বিস্ফোরণে নিহত ৬ জন। কন্দহর শহরেও একটি হামলার চেষ্টা হয়। পুলিশের তৎপরতায় তা ব্যর্থ হয়েছে।
অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী আহমেদ ফাওয়াদের কথায়, “হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ। চোখ বুজে বসে পড়লাম। চোখ খুলে দেখি চারপাশে বহু লোক আর্তনাদ করছে।” সইদ জাকি নামে আর এক প্রত্যক্ষদর্শীর মতে, “প্রচণ্ড ভিড়ের মাঝখানে বিস্ফোরণ ঘটে। যে রকম ভিড় ছিল, তাতে আমি নিশ্চিত যে আত্মঘাতী জঙ্গি পায়ে হেঁটেই ভিড়ে ঢুকে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।” |
সাম্প্রতিক কালে কাবুলে বেশ কয়েকটি জঙ্গি হামলা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে ভারতীয় দূতাবাস, ব্রিটিশ কাউন্সিল, মার্কিন দূতাবাস ও একটি বড় হোটেলে হামলার ঘটনা। কিন্তু এমন একটি ধর্মীয় দিনে হামলার উদাহরণ এর আগে প্রায় নেই। আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে জার্মানির বনে গিয়েছিলেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। আজ বার্লিন থেকে তিনি বলেন, “আফগানিস্তানে কোনও পবিত্র দিনে এমন ভয়াবহ হামলা এর আগে কখনও ঘটেনি।”
প্রাথমিকভাবে সন্দেহের তির ছিল আল কায়দা এবং তালিবান জঙ্গিদের দিকেই। বিস্ফোরণস্থলে দাঁড়িয়েই কয়েক জন যুবক আল কায়দা ও তালিবানের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেন। কিন্তু এই সংগঠনগুলি হামলার দায় স্বীকার করেনি। তার পর বিকেলের দিকে তালিবান মুখপাত্র জাবিহুল্লা মুজাহিদ এক ই-মেল বিবৃতি দিয়ে বলেন, “আজকের অমানবিক হামলার নিন্দা করছি।” ফলে গোয়েন্দা-পুলিশ এখন মনে করছে, শিয়া-সুন্নি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেই এই হামলা।
আজ ইরাকের কির্কুক শহরে একটি মসজিদের সামনেও বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনায় নিহত হন এক সাধারণ মানুষ। আহত আট। |