রক্ত না-মেলার অভিযোগে ভাঙচুর করা হল ব্লাড ব্যাঙ্কে। এক চিকিৎসক-সহ চার স্বাস্থ্যকর্মীকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার গভীর রাতে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। গ্রেফতার করা হয় রোগীর ছেলেকে। রাতে ওই রোগীর মৃত্যুর পরে তাঁর ছেলে উত্তেজিত হয়ে দলবল নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার নিমাইচাঁদ দেবনাথের অভিযোগ, “দু’টি এলাইজা রিডার, চারটি কম্পিউটার, রক্ত রাখার রেফ্রিজারেটর-সহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। বেশ কয়েক লক্ষ টাকার জিনিসপত্র নষ্ট হয়েছে।” তাঁর দাবি, এর জন্য ব্লাড ব্যাঙ্কের পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে না। পুলিশ জানিয়েছে, ব্লাড ব্যাঙ্কে ভাঙচুর করা ও মারধরের ঘটনার অভিযোগে মৃত রোগীর ছেলে অলক মালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। |
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওন্দার মল্লিকপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাবল মালের (৫২) কাশির সময় মুখ থেকে রক্ত বের হচ্ছিল। ২৫ নভেম্বর আত্মীয়েরা তাঁকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে ভর্তি করেন। শুক্রবার রাতে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। চিকিৎসক তাঁর বড় ছেলে অলককে এক প্যাকেট রক্ত (বি পজিটিভ) জোগাড় করতে বলেন। রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত চাইতে গেলে ওই গ্রুপের রক্ত নেই বলে জানান হয়। তাঁদের ওই গ্রুপের এক জন রক্ত দাতাকে নিয়ে আসতে বলা হয়। ওয়ার্ডে ফিরে অলক দেখেন, তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, আধ ঘণ্টা পরে অলক ৮-৯ জনকে নিয়ে গিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্কের ভিতরে হামলা চালান। সেই সময় ব্লাডব্যাঙ্কে মেডিক্যাল অফিসার সুদর্শন সোরেন-সহ চার জন স্বাস্থ্যকর্মী ছিলেন। ল্যাবরেটরির ভিতরে ঢুকে দু’টি এলাইজা রিডার, একটি রেফ্রিজারেটর ও কাউন্টারে চারটি কম্পিউটার ভাঙা হয়। জানলার কাচ, চেয়ার-টেবিলও ভাঙচুর করে। সুদর্শনবাবুর অভিযোগ, “বাধা দিতে যাওয়ায় ওরা আমাদের চার জনকে মারধর করে।” পুলিশকর্মীরা গিয়ে অলককে পাকড়াও করে। বাকিরা পালায়।
হাবলবাবুর দেহ এ দিন দুপুরে তাঁর আত্মীয়েরা নিয়ে যান। পরিবারের এক সদস্যের অভিযোগ, “রক্ত পেলে হয়তো তাঁকে বাঁচানো যেত। বাবার মৃত্যুর পরে অন্য লোকেরা অলককে উত্তেজিত করে। সে ভাঙচুর করেনি।” হাসপাতাল সুপার পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “বাবার মৃত্যুর পরেই অলক দলবল নিয়ে হামলা চালান। পুলিশের কাছে দু’টি অভিযোগ করা হয়েছে।” তিনি জানান, এলাইজা রিডারের সাহায্যে রক্তে এইচআইভি, হেপাটাইটিস বি এবং ম্যালেরিয়ার পরীক্ষা করা হয়। আপাতত একটি এলাইজা রিডার দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। |