দশ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স চ্যালেঞ্জ হকিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সামনে দাঁড়িয়ে ভারত। ২০০১-এ প্রথম টুর্নামেন্টেই জেতার পর এই প্রথম ফাইনালে উঠল ভারত। সাফ কাপ ফুটবলে ফেভারিট হয়েও প্রথম ম্যাচেই আটকে গেলেন সুনীল ছেত্রীরা। সে দিনই হকিতে আশার আলো জ্বাললেন ভরত ছেত্রীরা।
জো’বার্গে শনিবার সেমিফাইনালে ভারত দাপটের সঙ্গে খেলে আয়োজক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল ৪-২ গোলে। পেনাল্টি কর্নারে অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়ে। চারটের মধ্যে তিনটি গোলই ভারত করেছে পেনাল্টি কর্নার থেকে। দু’টো সন্দীপ সিংহের। অন্যটা রঘুনাথের। একমাত্র ফিল্ড গোলটি সরবনজিৎ সিংহের। রবিবার ট্রফি জিততে ভারতকে টপকাতে হবে বেলজিয়ামকে। যারা অন্য সেমিফাইনালে পেনাল্টি শুটআউটে ৫-৪ হারিয়েছে আর্জেন্তিনাকে।
গ্রুপ লিগেও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বড় জয় পেয়েছিল ভারত। ৭-৫ গোলে। সেই ম্যাচের মতো সেমিফাইনালও ছিল উত্তেজনাপূর্ণ। আট মিনিটেই টিমোথি ড্রামন্ডের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ছ’মিনিটের মধ্যেই সেই গোল শোধ করেন রঘুনাথ রামচন্দ্র। পেনাল্টি কর্নার থেকে। কন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে আবার এগিয়ে দেন থর্নটন ম্যাকডেড। এর পর দু’দলই বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করেছিল। কিন্তু গোল মুখে দিশা হারিয়ে এগিয়ে যেতে পারছিল না কেউই। |
দ্বিতীয়ার্ধটা ছিল অবশ্য ভরত ছেত্রীদেরই। বাংলার গোলকিপার প্রথমার্ধে দু’গোল খেলেও বিরতির পরে দশ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচে ফেরার আশা শেষ করে দেন তাঁর সতীর্থরা। প্রথমে সরবনজিৎ দারুণ গোল করে ২-২ করেন। মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই ফের পেনাল্টি কর্নার পায় ভারত। এই সময়েই নিজের সেরাটা বের করে আনেন ড্র্যাগ-ফ্লিক বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সিংহ। ৩-২ করেন তিনি। কিছু পরে ফের পেনাল্টি কর্নার। এ বারও সন্দীপের হিট আটকাতে ব্যর্থ হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪-২ এগিয়ে যাওয়ার পরে আর ঘরের মাঠেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ দেয়নি ভারত।
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ভাল ম্যাচ প্র্যাক্টিস পাননি সন্দীপ-ভরতরা। কিন্তু বছরের শেষটা ভাল করার সুযোগ এসে গিয়েছে তাঁদের সামনে। এখন দেখার অস্ট্রেলীয় কোচ নবসের অধীনে হকিতে ভারত একটা মোটামুটি বড়মাপের আন্তর্জাতিক ট্রফি জিততে পারে কি না। অন্য দিকে এ দিনের হারে দক্ষিণ আফ্রিকার কপাল পুড়েছে। তারা কিছু দিন আগে আফ্রিকান নেশনস হকি জেতায় আন্তর্জাতিক হকি সংস্থা প্রথমে জানিয়েছিল, ওই পারফরম্যান্সের নিরিখে দক্ষিণ আফ্রিকা ২০১২ অলিম্পিকের টিকিট পেযে যাবে। কিন্তু পরে নিজেদের সিদ্ধান্ত পাল্টে জানায়, আফ্রিকান কাপের মান খারাপ। ফলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে লন্ডনের টিকিট পাওয়ার জন্য চ্যাম্পিয়ন্স চ্যালেঞ্জ হকির অন্তত ফাইনালে উঠতে হবে। না হলে জাপানে অলিম্পিক কোয়ালিফায়ার খেলতে হবে। সেমিফাইনালে হারায় তাদের এখন সেটাই করতে হবে। ভারতকেও অবশ্য দিল্লিতে কোয়ালিফায়ার খেলে লন্ডন অলিম্পিকের ছাড়পত্র পেতে হবে, কাল এই ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হলেও। |