কোনওটা হলুদ-নীল পালকে ঝলমল করছে। কেউবা গোলাপী আভার উপরে সবুজ ছোপে উজ্জ্বল। তাদের কারও আবাস সুদূর আমাজন-অরণ্য, কারও ঠিকানা ফিলিপিন্সের সমুদ্র ঘেঁষা ম্যানগ্রোভের জঙ্গল।
আমাজন-ম্যাকাও থেকে রেডভেন্টটেড কাকাতুয়া, আফ্রিকান গ্রে-প্যারট থেকে অস্ট্রেলিয়ান গালা, বিভিন্ন বয়সের এমনই ২৪টি ভিনদেশি পাখি খাঁচা-বন্দি হয়ে পাচার হওয়ার মুখে শনিবার মালদহের কালিয়াচকের কাছে ধরা পড়ল শুল্ক-কর্তাদের হাতে। তাঁদের হাতে ধরা পড়েছে দুই পাচারকারীও। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে উদ্ধার হওয়া ওই পাখিগুলি বন দফতরের হাতে তুলে দিয়েছে শুল্ক দফতর। নিজেদের চেনা ঠিকানার বদলে ওই পক্ষিকুলের আপাতত ঠাঁই হয়েছে মালদহের আদিনা ডিয়ার পার্কে।
বন দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানান, পাখিগুলির কোনওটাই ‘সিডিউল-ভূক্ত’ বা দেশের বন-আইনে বিপন্ন প্রজাতির অন্তর্ভূক্ত নয়। কাজেই তাদের দেশের কোনও বনাঞ্চলে ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্ন নেই। সম্ভবত চিড়িয়াখানার বন্দি জীবনেই তাদের বাকি জীবনটা কাটাতে হবে। বন কর্তারা জানান, পাখিগুলির আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। |
শুল্ক দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বাতানুকুল গাড়িতে অত্যন্ত সংকীর্ণ খাঁচায় পাখিগুলিকে একটির ঘাড়ে অন্যটিকে চাপিয়ে পাচার করা হচ্ছিল। টহলদারি দেওয়ার সময়ে শুল্ক কর্তাদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁরা গাড়িটিতে তল্লাশি চালাতেই বেড়িয়ে পড়ে পাখির খাঁচাগুলি। জেরা করে স্পষ্ট কোনও উত্তর না মেলায় ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয় রাজেশ রায় ও বিপ্লব ভট্টার্চায নামে দু-জনকে। দু-জনেই দক্ষিণ দিনাজপুরের সীমান্ত-শহর হিলির বাসিন্দা।
বন দফতরের ডিএফও (মালদহ) অজয় কুমার দুবে বলেন, “উদ্ধার করা পাখিগুলি সবই ভিন দেশি। আন্তর্জাতিক বাজারে তাদের দাম যথেষ্ট। পখিগুলির মধ্যে অস্ট্রেলিয়ান ম্যাকাও, গালা, রেডভেন্টেড কাকাতুয়া, আফ্রিকান গ্রে-প্যারট রয়েছে।” শুল্ক দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অর্জুনলাল জাট বলেন, “সম্ভবত বাংলাদেশ থেকে ওই পাখিগুলি পাচার করা হচ্ছিল কলকাতার কোনও ঠিকানায়। এ ব্যাপারে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” |