কোজাগরী পূর্ণিমা বহু দিন পূর্বেই চলিয়া গিয়াছে বটে, কিন্তু এখন যেহেতু অধিকাংশ গৃহস্থই ফ্যাব্রিক কালারে আলপনা আঁকিয়া থাকেন, তাই ঘরে লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ এখনও থাকিয়া যাওয়া আশ্চর্য নহে। বৌদ্ধ, জৈন, ইসলাম কোনও ধর্মই পায়ের ছাপহীন নহে। পুরাণের গল্পেও পায়ের ছাপ প্রচুর। গয়াসুরের বুকে কৃষ্ণের পায়ের ছাপ হইতে ভরতের মস্তকবাহিত পাদুকায় রামচন্দ্রের পদচিহ্ন ভক্তিরস কম পড়ে নাই। বস্তুত, পায়ের ছাপ খুঁজিয়া বেড়ানো ভারতীয়দের অতি প্রিয় এক অভ্যাস। কারণ, পায়ের ছাপ জিনের সংকেতের ন্যায়। তাহা প্রজন্ম হইতে প্রজন্মান্তরে মাহাত্ম্য বহন করিয়া চলে। পদচিহ্ন যাঁহার দখলে, মহাপুরুষের তখ্ত-ও তাঁহারই। এই বৎসর যেমন ভারত অণ্ণা হজারের মধ্যে গাঁধীর পদচিহ্ন খুঁজিয়া পাইয়াছে। এবং, পাওয়ামাত্র তাঁহাকে গান্হি মহারাজের অবতার হিসাবে বরণ করিয়া ষোড়শ উপাচারে পূজা আরম্ভ করিয়াছে। সেই পূজায় যাঁহারা বিন্দুমাত্র চমকান নাই, বালির পুকুরঘাটে শীতলার পদচিহ্ন পাইয়া স্থানীয় মানুষ তাহার পূজা করিলে তাঁহারা কোন নৈতিক অধিকারে নাসিকা কুঞ্চিত করিয়া অভক্তি দর্শাইতেছেন? আঁতেল বাঙালির দ্বিচারিতা বই আর কী? |