রাজ্য সরকারের নির্দেশিকাকে উপেক্ষা করে ফের স্কুলের সময়ে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া হল নাবালক পড়ুয়াদের। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ফেল তুলে দেওয়ার প্রতিবাদে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে কলেজ স্কোয়ার থেকে দেশপ্রিয় পার্ক পর্যন্ত এসইউসি মিছিল করে। সেই মিছিলেই অংশগ্রহণ করে অনেক কচিকাঁচা। যারা স্কুলের ছাত্রছাত্রী। তাদের মধ্যে অনেককেই দেখা গিয়েছে স্কুলের পোশাকে।
এসইউসি-রই ছাত্র সংগঠনের একটি কর্মসূচিতে ছাত্রদের যোগদান ঘিরে বিতর্কের প্রেক্ষিতে সম্প্রতি রাজ্য নির্দেশিকা জারি করেছে, স্কুল চলাকালে শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবেন না। ওই নির্দেশিকা জারির পর এ দিনই প্রথম কোনও রাজনৈতিক দল তা ভঙ্গ করল। এসইউসি-র অবশ্য দাবি, অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে ও স্কুলে অনুপস্থিত থেকে নাবালক পড়ুয়ারা মিছিলে গেলে ওই নির্দেশিকার জোরে তাকে আটকানো যায় না। বস্তুত, সরকারের ওই নির্দেশিকা বাস্তবায়িত করায় যে সমস্যা আছে, এ দিনের ঘটনা থেকেই তার ইঙ্গিত মিলেছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের যুক্তি।
এসইউসি-র রাজ্য কমিটির ডাকে ওই মিছিলে এ দিন বিভিন্ন জেলা থেকে দলীয় কর্মী-সমর্থকেরা এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে স্কুলশিক্ষক এবং অভিভাবক যেমন ছিলেন, তেমনই নাবালক পড়ুয়ারাও ছিল। বিতর্ক শিক্ষক এবং নাবালক পড়ুয়াদের নিয়েই। অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ফেল তুলে দেওয়া-সহ কয়েকটি শিক্ষা সম্পর্কিত বিষয়ের প্রতিবাদে এসইউসি-র ছাত্র সংগঠন ডিএসও ৮ সেপ্টেম্বর ধর্মতলায় সমাবেশ করে। সেখানে বেহালা থেকে স্কুল চলাকালীন নাবালক ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আসা নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। অভিযোগ ওঠে, ডিএসও কর্মসূচিতে ভিড় বাড়াতে অভিভাবকদের না-জানিয়ে এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের অগোচরে ওই পড়ুয়াদের স্কুল থেকে বার করে আনে। যদিও ডিএসও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছিল। ওই ঘটনাকে হাতিয়ার করে রাজ্য স্কুল চলাকালীন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকদের যোগ দেওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কলকাতা হাইকোর্টেও হলফনামা দিয়ে রাজ্য তাদের অবস্থান জানায়। এসইউসি-ডিএসও বলেছিল, ওই ‘অগণতান্ত্রিক’ নিষেধাজ্ঞা তারা মানবে না। এসইউসি এ দিন তা ‘করেও দেখিয়েছে’! |
সইউসি-র রাজ্য সম্পাদক সৌমেন বসু বলেন, “পুরুলিয়া থেকে কিছু শিশু-কিশোর এসেছিল। অন্যান্য দূরের জেলা থেকেও এসেছিল। তাদের বামা-মায়েদের সায় ছিল। অনেকের বাবা-মা সঙ্গে এসেছিলেন। ওই বাচ্চারা স্কুলেও যায়নি। স্কুলে গিয়ে বেরিয়ে মিছিলে যাওয়ার অভিযোগ তোলা যাবে না। অনেকের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ায় স্কুল ছুটি ছিল। সরকারি নির্দেশিকায় ওদের কী ভাবে আটকানো হবে? আর যদি আটকানো যায়, তা হলে কোনও বাচ্চা স্কুলে অনুপস্থিত থেকে বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে বেড়াতে গেলেও তো সরকারি নির্দেশিকায় আটকাতে হবে!” স্কুলে অনুপস্থিত থেকে এবং বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে পড়ুয়া মিছিলে যাচ্ছে না অন্য কোথাও যাচ্ছে, তা কী ভাবে সরকার বা স্কুল নির্ণয় করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন আছেই। |