|
|
|
|
‘ঝুঁকি-ভাতা’ |
না পেয়ে ক্ষুব্ধ জঙ্গলমহলের গোয়েন্দা-কর্মীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
মাওবাদী প্রভাবিত এলাকায় কাজ করেও ‘ঝুঁকি-ভাতা’ পাচ্ছেন না পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা গোয়েন্দা-বিভাগের কর্মীরা। ফলে, ক্ষোভ ছড়িয়েছে তাঁদের মধ্যে। এক কর্মীর বক্তব্য, “ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হয় আমাদের। অথচ জঙ্গলমহলের থানাগুলিতে কর্মরত পুলিশকর্মীরা ঝুঁকি ভাতা পেলেও আমাদের তা জোটে না।” তাঁর কথায়, “আমাদের ক্ষোভের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও আশ্বাস মেলেনি।” জেলা পুলিশের কোনও কর্তা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে জেলা পুলিশেরই একটি সূত্রের বক্তব্য, গোয়েন্দা-কর্মীদের ক্ষোভের কথা জানানো হয়েছে রাজ্যস্তরে।
তিন বছর ধরে অশান্ত জেলার জঙ্গলমহল। রাজ্যে পালাবদলের পর জঙ্গলমহলের একাংশে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা দেখা গেলেও খুন-নাশকতায় পুরোপুরি ছেদ পড়েনি। বুধবারও বিনপুরে এক সিপিএম কর্মী খুন হয়েছেন। অভিযোগের তির সেই মাওবাদীদের দিকেই। শীর্ষ মাওবাদী নেতা কিষেণজির মৃত্যুর পর মাওবাদীরা বড়সড় প্রত্যাঘাত হানতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। গোয়েন্দা-বিভাগও সবাইকে সতর্ক করেছে। পুলিশের একাংশ মনে করছে, শীর্ষ নেতার মৃত্যুর পর মাওবাদীরা সাময়িক পিছু হটলেও অদূর ভবিষ্যতেই ফের মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করবে। কারণ, জঙ্গলমহলের বিভিন্ন এলাকায় তাদের ছোট-ছোট স্কোয়াড রয়েছেই।
একটা সময় জঙ্গলমহলে পোস্টিং হয়েছে শুনলেই পুলিশকর্মীরা বদলির জন্য ধরাধরি শুরু করতেন। তাঁদের পরিবারের লোকজনও চাইতেন না, ঘরের ছেলে জঙ্গলমহলে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ডিউটি করুক। কিন্তু আইনের শাসন বজায় রাখাটাও প্রশাসনের দায়িত্ব। তাই পুলিশকর্মীদের জঙ্গলমহলের কাজে উৎসাহিত করতে চালু হয় ‘ঝুঁকি ভাতা’। কিন্তু সেই ভাতার তালিকায় ঠাঁই হয়নি জেলা গোয়েন্দা-বিভাগের কর্মীদের। শুরুতে কয়েক জন অবশ্য এই ভাতা পেয়েছিলেন। ভোটের সময়েও দু’মাস ভাতা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তার পর থেকেই ‘ঝুঁকি ভাতা’ বন্ধ। ফলে, গোয়েন্দা-বিভাগের কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৮টি থানা। এর মধ্যে ১৪টি থানা এলাকাই ‘মাওবাদী প্রভাবিত’ বলে চিহ্নিত। প্রতি থানাতেই এক জন করে গোয়েন্দা-বিভাগের কর্মী রয়েছেন। যাঁদের ‘ওয়াচার’ বলা হয়। এ ছাড়া, মেদিনীপুর সদরে বিভাগীয় কার্যালয়েও বেশ কয়েক জন কর্মী রয়েছেন। প্রায় সময়ে তাঁদেরও জঙ্গলমহলে গিয়েই কাজ করতে হয়। এক গোয়েন্দা-কর্মীর কথায়, “জেলায় মন্ত্রী বা উচ্চপদস্থ কোনও কর্তা এলেই কাজ বেড়ে যায়। আমাদেরই সমস্যাসঙ্কুল এলাকায় আগে যেতে হয়। কিন্তু ভাতা পাই না।” ফলে, অসন্তোষ বাড়ছে। |
|
|
|
|
|