|
|
|
|
পাহাড় থেকে আকাশে ভাসবেন প্রতিবন্ধীরা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শুধু দৌড় বা সাঁতারেই থেমে থাকতে চান না তাঁরা। ‘প্যারা-গ্লাইডিং’ করে জয় করতে চান পাহাড়ও। সেই লক্ষ্যে দার্জিলিংয়ের পথে রওনা হলেন কলকাতার প্রতিবন্ধী সাত যুবক। যাঁদের মধ্যে ৬ জন দৃষ্টিহীন। বৃহস্পতিবার দার্জিলিং মেলে কলকাতা থেকে শিলিগুড়ি পৌঁছন তাঁরা। শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পাল তাঁদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবে নিয়ে যান। সেখানে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেদের কথা জানান মনোরঞ্জন, বিনোদ, প্রসোনজিৎরা। পরে সেখান থেকে গাড়িতে করে দার্জিলিংয়ের উদ্দ্যেশে রওনা হন। সেখানে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ তাঁদের অভ্যর্থনা জানাবেন। আগামী ৩ ডিসেম্বর দার্জিলিংয়ে প্যারা-গ্লাইডিংয়ে অংশ নেবেন তাঁরা নান্টু পাল বলেন, “প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে ওই সাত যুবক লড়াই করছেন। তাঁরা প্যারা গ্লাইডিং করতে পৌঁছে গিয়েছেন দার্জিলিংয়ে। এই মানসিকতা সবাইকে উদ্বুদ্ধ করবে। তাঁদের লড়াইয়ে আমরা পাশে রয়েছি। পাহাড়ের পর্যটনের বিকাশেও তাঁদের ওই কর্মসূচি সহায়তা করবে।” |
|
—নিজস্ব চিত্র। |
কলকাতার যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ওই সাতজনকে প্যারা গ্লাইডিংয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তাঁর কর্মকর্তা দেবজ্যোতি রায় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই আমরা প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছি। এখানে যারা প্যারা-গ্লাইডিংয়ে অংশ নিয়েছেন প্রত্যোকেই নানা খেলাধূলায় পারদর্শী। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সোনার পদকও পেয়েছেন একজন। প্রতিবন্ধী দিবসে আমরা এই বার্তাই পৌঁছে দিতে চাইছি যে তাঁরা কারও থেকে কম নয়।” সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার পুরোপুরি দৃষ্টিহীন মনোরঞ্জন পাল, রানা কর, রনবীর কুমার সিংহ, কুমারেশ শীল, আংশিক ভাবে দৃষ্টিহীন রবীন্দ্র কর্মকার, প্রসেনজিৎ আদক এবং বিনোদ কুমার সিংহ (দুটো হাত নেই)। ছয় জনের বয়স ৩০-এর মধ্যে। একমাত্র মনোরঞ্জনবাবুর বয়স ৪০-এর কোটায়। তাঁরা জানান, আন্তর্জাতিক সাঁতার প্রতিযোগিতা সহ প্রতিবন্ধীদে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় তাঁরা অংশ নিয়ে থাকেন। এর মধ্যে ২০০৮ সালে আন্তর্জাতিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় জার্মানের বার্লিন থেকে সোনা জিতেছেন বিনোদ। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দার্জিলিংয়ে পৌঁছে তাঁরা প্রশিক্ষণ নেবেন। শনিবার তাঁরা প্যারা-গ্লাইডিং-এ অংশ নেবেন। তাঁদের সঙ্গে ‘গাইড’ অবশ্য থাকবে। তাঁরা বলেন, “পাহাড়ে গিয়ে প্যারা গ্লাইডিংয়ে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা এটাই প্রথম। এবারের অনুভূতিটা একটু অন্যরকম। আশা করছি সফল হব।” সাত জন প্রতিবন্ধীর সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তিন সদস্যের একটি দল রয়েছে। তাঁদের যাতে কোনওরমক অসুবিধে না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখছেন ওই সদস্যরা। প্রতিবন্ধীদের অভ্যর্থনা জানান শিলিগুড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা প্রদীপ দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, “তাঁদের অভিযানের কথা শোনার পর থেকেই আনন্দ হচ্ছে।” বুধবার রাতে কলকাতা থেকে রওনা হওয়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়। |
|
|
|
|
|