|
|
|
|
কলকাতা লিগেও গাও অচল আধুলি |
রতন চক্রবর্তী • কলকাতা |
ইস্টবেঙ্গল ১ (সৌমিক)
সাদার্ন সমিতি ০ |
যিনি বিপক্ষে থাকলে ট্রেভর মর্গ্যান সমস্যায় পড়তেই পারতেন, সেই এডমিলসনকে দেখা গেল ম্যাচের পর ইস্টবেঙ্গল তাঁবুতে বসে আছেন!
চোট লুকিয়ে খেলার অভিযোগে তাকে কয়েক দিন আগেই তাড়িয়ে দিয়েছেন সদার্ন সমিতির কর্তারা। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার এখন নতুন চাকরির খোঁজে। কিন্তু কয়েক বছর আগে লাল-হলুদ জার্সিতে যিনি বহু গোল করেছেন, সেই এডু কি পুরোনো দলে চাকরির কোনও সন্ধান পেয়েছেন? কথা বলে বোঝা গেল না। তবে অ্যালান গাও-য়ের বৃহস্পতিবারের জঘন্য পারফরম্যান্স তাকে হয়তো ‘উৎসাহিত’ করেছে। কলকাতা লিগে জয়ের সিরিজ অক্ষত রাখার উৎসব নয়, ম্যাচের পর ইস্টবেঙ্গল তাঁবু কিন্তু ডুবে রইল স্কটিশ ফুটবলারটিকে নিয়ে আলোচনায়। লাল-হলুদ কোচ তাঁর আনা ফুটবলারটির পক্ষে ঢাল হয়ে দাঁড়ালেও, গ্যালারিতে গাওয়ের উদ্দেশে অবশ্য শুরু হয়ে গেছে তীব্র বিদ্রুপ। কথা বলে মনে হল কর্তারাও হতাশ।
আই লিগের ব্যর্থতার পর গাও যাতে টি আর পি বাড়াতে পারেন সে জন্য কলকাতা লিগেও নামিয়ে দিয়েছিলেন লাল-হলুদ কোচ। পঁয়তাল্লিশ মিনিট মাঠে ছিলেন গাও। কিন্তু সেখানেও যে তিনি অচল আধুলি। একে মন্থর, তার উপর বেশিরভাগ সময় দাঁড়িয়েই রইলেন তিনি। এ সব দেখেও মর্গ্যান বললেন, “চোটের জন্য ও নিজের খেলা খেলতে পারছে না!” কোচের গাড়িতে বাড়ি ফেরার সময় গাও আবার জানিয়ে দিলেন, “আমি স্পোটিং ক্লুবের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে গোয়া যাচ্ছি না।” |
|
বল দখলে আকাশ-যুদ্ধ। বৃহস্পতিবার ইস্টবেঙ্গল মাঠে। ছবি:উৎপল সরকার |
গাও-পর্ব কোন দিকে মোড় নেবে সেটা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। তবে লাল-হলুদের এই বিদেশিকে নিয়ে টানাপোড়েন টিমের পারফরম্যান্সের উপর প্রভাব ফেলছে। সাদার্ন সমিতির মতো একটা সাধারণ মানের দলকে হারাতে এ দিন জিভ বেরিয়ে গেল সাত কোটির টিমের। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সঞ্জু প্রধানের ক্রস সৌমিক গোলে না পাঠালে মর্গ্যানের টিমের কপালে দুঃখ ছিল। খারাপ খেলেও টিম জিতলে সব কোচই খুশি হন। ব্রিটিশ কোচও হয়েছেন। কিন্তু কোচ এবং বিদেশিহীন একটা টালমাটাল দলের বিরুদ্ধে জেতার জন্য কেন উৎকণ্ঠায় কাটাবে গ্যালারি, তা জানতে চাইলে রেগে যাচ্ছেন মর্গ্যান। যেমন ইদানীং চাপে পড়লে সহকারী বা চতুর্থ রেফারির দিকে আঙুল তুলে তেড়ে যাচ্ছেন তিনি। কলকাতার আর পাঁচটা কোচের মতোই!
গাও ছাড়া কোনও বিদেশি এ দিন নামেননি ইস্টবেঙ্গল জার্সি পরে। তবে পরের আই লিগের প্রস্তুতির দিকে তাকিয়ে কার্যত পুরো মাঝমাঠই নামিয়ে দিয়েছিলেন মর্গ্যান। সঞ্জু-ভাসুম-সুশান্তরা দেখালেন তাঁরা কত খারাপ খেলতে পারেন। দ্বিতীয়ার্ধে মেহতাব হোসেন নামার পর চিত্রটা সামান্য বদলালেও মর্গ্যান-ব্রিগেডকে এ দিন দেখে অন্তত মনে হল দিশাহীন একটা নৌকো। অসংখ্য মিস পাস, উইং প্লের দৈন্য, বিপক্ষের রক্ষণ ভেঙে-চুরে দেওয়ার লোককিছুই নেই। অনেক নেইয়ের মধ্যে জ্বললেন শুধু দুই বঙ্গসন্তান— সৌমিক দে এবং চোট সারিয়ে ক্রমশ স্বমহিমায় ফেরা মেহতাব হোসেন।
সাদার্ন মরসুমের শুরুতে খুব হইচই করে দল গনেছিল। এখন তাদের হাল খুব খারাপ। দলে কোচ নেই। ময়দানের সবথেকে জুনিয়র কোচ হিসাবে সেই সুযোগে আত্মপ্রকাশ করে ফেললেন ষষ্ঠী দুলে। যে দলকে আসিয়ান কাপ দিয়েছেন, সেই ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তিনি স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেছিলেন খুব বুদ্ধি করে। একেবারে ময়দানি ফর্মুলায়। রক্ষণকে আঁটোশাঁটো করে, বিপক্ষের মাঝমাঠকে ঘেঁটে দিতে ব্যবহার করলেন গাট্টাগোট্টা জামির আলি মণ্ডলকে। সামনে দুই টগবগে মিজো ছেলেনীলেন্দ্র আর জিকো। কোচ হিসাবে জীবনের প্রথম ম্যাচটা ‘ভারতের চ্যাপম্যান’ পয়েন্ট নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারতেনযদি তাঁর হাতে থাকত এডমিলসনের মতো কোনও স্ট্রাইকার।
|
ইস্টবেঙ্গল: সন্দীপ, সৈকত, গুরিন্দর, সুনীলকুমার, সৌমিক, ভাসুম, সঞ্জু (রবিন্দর), সুশান্ত (মেহতাব), গাও (রবিন), বলজিৎ, লেন। |
|
|
|
|
|