নদীর চরে মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য রুখতে পথে নামলেন তেহট্টের মহকুমাশাসক অচিন্ত্যকুমার মণ্ডল। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি তেহট্টের বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালান তেহট্টের মহকুমাশাসক। তিনি বলেন,‘‘ মহকুমার বেশ কিছু জায়গায় বিশেষ করে নদীর চরে মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য ক্রমেই বাড়ছিল।”
বেআইনিভাবে নদীর চরের মাটি কাটছিল বলে সাধারণ মানুষ অভিযোগও জানাচ্ছিলেন। ভূমি সংস্কার দফতরকে এই বিষয়ে বেশ কয়েকবার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও কার্যত তাঁরা কিছুই করেননি। ফলে বাধ্য হয়েই গত সপ্তাহ থেকে আচমকা কিছু জায়গায় তল্লাশি চালানো শুরু করে জেলা প্রশাসন। গত সপ্তাহে মাটি বোঝাই ১৩টি ট্র্যাক্টর আটক করে। তাদের মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এ দিনও আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে নদীর চর থেকে চালক-সহ একটি ট্র্যাক্টরকে আটক করা হয়।
মহকুমা প্রশাসন জানায়, জলঙ্গির তিরে তেহট্টের খাসপুর, বয়ারবাঁধা গ্রামগুলি ভাঙনপ্রবণ। কিন্তু গত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে সেই সব এলাকা থেকে বেআইনি ভাবে লাগাতার মাটি কাটা হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
তেহট্ট ১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় দত্ত বলেন, ‘‘খাসপুর, বয়ারবাঁধার মত ভাঙনপ্রবণ এলাকায় নদীর পার বাঁধানোর যখন চিন্তা ভাবনা করছে প্রশাসন তখন মাটি মাফিয়ারা ওই এলাকা থেকেই লাগাতার মাটি কাটছে।” তিনি বলেন, “এটা জানতে পেরে আমরা একাধিকবার ভূমি সংস্কার দফতরকে বিষয়টি জানাই। কিন্তু তাঁরা কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছিলাম।” তেহট্ট মহকুমার ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক দুলাল দাসের সাফাই,‘‘ নদীর চরে মাটি কাটা হচ্ছে বলে আমাদের কাছেও অভিযোগ এসেছিল। কিন্তু সমস্যাটা কোথায় জানেন, আমরা সকাল দশটায় অফিস খুলি। তারপরে ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়ে দেখি ততক্ষণে মাটি কেটে সাফ করে দিয়েছে।” সরকারি কাজকর্মের ‘দুলকিচাল’ এ থেকেই স্পষ্ট। তবে, মহকুমা জুড়ে বেআইনি ইটভাটার সংখ্যা যে বেড়েই চলেছে তা মেনে নিয়েছেন দুলালবাবু। এত দিন ব্যবস্থা নেননি কেন? দুলালবাবু বলেন, ‘‘ ব্যবস্থা যে একেবারেই নেওয়া হয়নি তা নয়। যেমন গত ২০০৯ সালে আমরা বেশ কিছু ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলাম।’’ ২০০৯ সালের পর দু বছরের মধ্যে আর কোন ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন? উত্তর মেলেনি। |