|
|
|
|
তৃণমূল সমর্থকের দেহ পুকুরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • আরামবাগ |
শনিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন এক তৃণমূল সমর্থক। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামেরই এক পুকুর থেকে উদ্ধার হল তাঁর দেহ।
ঘটনাটি আরামবাগের ডহরকুণ্ডু গ্রামের। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম তাপস ভৌমিক (৪১)। তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে হইচই শুরু করেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। পুলিশ কুকুর আনার দাবি তোলা হয়। প্রাথমিক ভাবে পুকুর থেকে তাপসবাবুর দেহ উদ্ধার করতে পুলিশকে বাধা দেন তাঁরা। পরে অবশ্য তৃণমূল নেতাদেরই মধ্যস্থতায় পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায়। তাপসবাবুর পরিবার মৌখিক ভাবে খুনের কথা বলেছিলেন। যদিও এ ব্যাপারে থানায় কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি তাঁরা। তাপসের ভাই শ্যামল বলেন, “দাদা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পরে আমরা ডায়েরি করেছিলাম। দাদাকে খুন করা হয়েছে কিনা, তা তদন্ত করে দেখার আর্জি জানিয়েছিলাম পুলিশের কাছে। এখন সত্যি সত্যিই ওঁর দেহ উদ্ধার হল। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছি পুলিশের কাছে।” প্রাথমিক ভাবে মৃতের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে দেহে পচন ধরেছিল। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে থানা থেকে জানানো হয়েছে। |
|
শোকার্ত পরিবার। ছবি: মোহন দাস। |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, তাপসবাবু মানসিক ভাবে খুব স্বাভাবিক ছিলেন না। মজুরির বিনিময়ে সাইকেলে করে মালপত্র বয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করতেন। কাজের সূত্রেই প্রতি সন্ধ্যায় ডোঙ্গলের আলুপট্টিতে যেতে হত তাঁকে। শনিবারও সন্ধে ৭টা নাগাদ সাইকেল নিয়ে বেরিয়েছিলেন। রাতে ফেরেননি। রবিবার সকালে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর বাড়ির লোকজন।
এ দিন সকালে গ্রামের মহিলারা স্থানীয় সামন্তদের পুকুরে তাঁর দেহ ভাসতে দেখেন। পুকুরটি ডহরকুণ্ডু থেকে ডোঙ্গল যাওয়ার গ্রামীণ রাস্তায় রামকৃষ্ণ রোডের গায়ে। রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে ওই ব্যক্তি কোনও ভাবে পুকুরে পড়ে গিয়েছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গ্রামের লোকের অভিযোগ, ইদানীং চোর-ডাকাতের উপদ্রব বেড়েছে এলাকায়। সেই সমাজবিরোধীরাই এই ঘটনায় জড়িত কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, তাপসবাবুর বাঁ হাতে টর্চ ধরা ছিল। ওই অবস্থাতেই দেহ উদ্ধার হয়। তবে সাইকেলের খোঁজ মেলেনি।
তাপসবাবুর ছেলে দীনেশ বলে, “বাবা সাদামাটা লোক ছিলেন। তেৃণমূলের অন্ধ ভক্ত। তবে ওঁর কোনও শত্রু ছিল বলে শুনিনি।” কিন্তু স্রেফ পুকুরে পড়ে গিয়ে ডুবে মারা গিয়েছেন তাপস, তা-ও মানতে রাজি নন গ্রামের মানুষ। কারণ, সাঁতার জানতেন ওই ব্যক্তি। |
|
|
|
|
|