|
|
|
|
হুগলি সিপিএম |
কমিটি নিয়ে বিবাদে হাতাহাতি সম্মেলনে |
গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় • চুঁচুড়া |
এমনিতেই জেলা সিপিএম গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে দীর্ণ। সেই হুগলি সিপিএমের গোষ্ঠী-কোন্দল লোকাল কমিটি স্তরে হাতাহাতিতে গড়িয়েছে বলে অভিযোগ!
হুগলি সিপিএমে অনিল বসু এবং রূপচাঁদ পালের (দু’জনেই প্রাক্তন সাংসদ) গোষ্ঠীর বিবাদ বহু দিনের। দলীয় কোন্দলের জেরেই এ বার চুঁচুড়া লোকাল কমিটির সম্মেলনে হাতাহাতি হয়েছে বলে সিপিএম সূত্রের খবর। গোলমালের কারণ, ‘অনৈতিক’ কাজে যুক্ত সদস্যদের কমিটিতে রাখার চেষ্টা। ওই কমিটির সম্মেলনে জেলা নেতৃত্বের তরফে অনিলবাবু ও রূপচাঁদবাবু, দু’জনেই ছিলেন।
সিপিএম সূত্রের খবর, চুঁচুড়ার শিশু বিজ্ঞান মঞ্চে গত ২৭ নভেম্বর ওই লোকাল কমিটির সম্মেলনে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ভোটাভুটি চেয়েছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, ভোটাভুটি এড়িয়ে যান সম্মেলনে ‘পরিদর্শক’ হিসাবে উপস্থিত অনিলবাবু, রূপচাঁদবাবু-সহ অন্যেরা। ‘অনৈতিক’ কাজে যুক্ত, এমন দুই সদস্যকে নতুন লোকাল কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে নেতাদের মধ্যে ‘গোপন বোঝাপড়া’য়, এই অভিযোগকে কেন্দ্র করেই গোলমাল বাধে। সভা ছেড়ে চলে যান বেশ কিছু সদস্য। তাঁরা বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্বকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অন্তত ৫০ জন দায়িত্ব থেকে ‘অব্যাহতি’ও চেয়েছেন।
দলীয় সম্মেলন যাতে যথাযথ আত্মসমালোচনার মঞ্চ হয়, তা চেয়েছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বই। কিন্তু একই সঙ্গে সম্মেলনের রূপরেখায় তাঁরা বলেছেন, সম্মেলন ঘিরে দল কখনও ‘বিতর্ক-সভা’ হয়ে উঠতে পারে না। কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, লোকাল কমিটি স্তরের সম্মেলনগুলি ‘বিতর্ক-সভা’ও ছাপিয়ে প্রায় ‘রণক্ষেত্র’ হয়ে উঠছে! দলীয় নেতৃত্বের পরামর্শ যা-ই হোক না কেন।
জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনিলবাবু অবশ্য চুঁচুড়ায় ওই গোলমালের কথা মানতে চাননি। তাঁর দাবি, “আমাদের দলীয় গণতন্ত্রের ভিত্তি মজবুত। সকলেই কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন। কেউ বঞ্চিত হননি। কোনও গোলমাল হয়নি। যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা একটি সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত।” একই দাবি চুঁচুড়া জোনাল কমিটির সম্পাদক মাখন সিংহ রায়েরও। দলীয় সদস্যদের দায়িত্ব থেকে ‘অব্যাহতি’ চাওয়ার কথা তিনি মানেননি। তাঁর বক্তব্য, “সদস্যদের মধ্যে কোনও গোলমাল হয়নি। কারও দায়িত্ব ছাড়ার প্রশ্নই নেই।”
ওই সম্মেলনে সিপিএমের অন্তত ২৩০ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। প্রথামাফিক সম্মেলনের শুরুতে আগের কমিটির কাজ পর্যালোচনা করা হয়। এর পরে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর পক্ষে নতুন কমিটির জন্য ১৩ সদস্যদের একটি তালিকা পেশ করা হয়। সেই তালিকায়দুই সদস্যকে নিয়ে আপত্তি তোলেন সম্মেলনে উপস্থিত অনেকেই। পাল্টা তালিকা দিয়ে ভোটাভুটির জন্য সম্মেলনের পরিদর্শকদের কাছে আর্জি জানান তাঁরা। কিন্তু তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ দলেরই একাংশের। এর পরই সভায় দু’পক্ষের বচসা হাতাহাতিতে গড়ায়।
চুঁচুড়া লোকাল কমিটির এক সদস্য বলেন, “এ বার দলের কঠোর নির্দেশ ছিল, কোনও ঠিকাদার এবং প্রোমোটারকে কমিটিতে রাখা যাবে না। কিন্তু আগের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর পক্ষে এমন তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে এক জন প্রোমোটার এবং এক জন ঠিকাদার আছেন। সেই জন্যই আমরা তীব্র বিরোধিতা করেছিলাম বিষয়টির। কিন্তু আমাদের আবেদন শোনা হয়নি।” |
|
|
|
|
|