ত্রিপুরায় নামী বেসরকারি স্কুলেও এখন থেকে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির সময়ে ২৫ শতাংশ আসন বিপিএল শ্রেণিভুক্ত ছাত্রছাত্রীর জন্য সংরক্ষিত রাখা বাধ্যতামূলক হল। সরকারি ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্কুলেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। রাজ্যের স্কুল শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী জানান, কেন্দ্রীয় শিক্ষা অধিকারের বিধি অনুসারেই এই সিদ্ধান্ত।
নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকেই এই নিয়ম চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য সরকার। কেন্দ্রীয় শিক্ষা অধিকারের বিধি অনুসারে, সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলিতে প্রথম শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রী ভর্তির সময়ে ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত রাখতে হবে আর্থিক ও অন্যান্য ক্ষেত্রে অনগ্রসর শ্রেণির জন্য। এই ২৫ শতাংশ আসনে বিপিএল শ্রেণিভুক্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা রাজ্যের সমস্ত ধরনের স্কুলেই ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে। স্বভাবতই তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি, অন্য অনগ্রসর শ্রেণি ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিপিএল তালিকাভুক্ত ছাত্রছাত্রীরাও এই সুযোগ পাবে। যে কোনও নামী স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির সময় সংশ্লিষ্ট স্কুলের এক-দেড় কিলোমিটারের মধ্যে যাদের বাস, তেমন প্রার্থীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।
সরকারি নির্দেশ ঠিকঠাক কার্যকর হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য রাজ্যের স্কুল পরিদর্শকদের তো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছেই। পাশপাশি, স্থানীয় কর্তৃপক্ষও বিষয়টি দেখভাল করবেন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলতে বোঝানো হয়েছে নির্বাচিত পুরপরিষদ, গ্রাম পঞ্চায়েত, নগর পঞ্চায়েত এবং টিটিএডিসি-র (ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়াজ অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল) গ্রাম সমিতিগুলি। এ সব প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই এলাকার স্কুলগুলিতে সরকারি নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে কি না, তা দেখবেন। এ ক্ষেত্রে কোনও জটিলতা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট জেলা বা ব্লকের স্কুল পরিদর্শক স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা বলে তা নিরসনের ব্যবস্থা করবেন।
এই নতুন সরকারি সিদ্ধান্তের জেরে বেসরকারি স্কুলগুলির পরিচালনার ক্ষেত্রে যে কিছু সমস্যা হতে পারে সে কথা স্কুল শিক্ষামন্ত্রী তপন চক্রবর্তী স্বীকার করে নিয়েছেন। মন্ত্রী জানান, বেসরকারি স্কুলগুলিতে তদারকি বা স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে ‘বাইরের হস্তক্ষেপ’ নিয়ে কোনও কোনও ক্ষেত্রে আপত্তি উঠতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিনিধির সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তা মেটানোর চেষ্টা করা হবে। তপনবাবু আরও জানান, বেসরকারি স্কুলগুলিতে বিপিএল ছাত্রছাত্রীদের জন্য আর্থিক দায়ভার রাজ্য সরকারই গ্রহণ করবে। |