গোড়াতেই গলদ। তৈরির সময়েই যন্ত্রাংশে ত্রুটি থাকলে তাপ্পি দিয়ে যে বেশি দিন চালানো যায় না, তা হাড়ে হাড়ে এখন টের পাচ্ছেন মেট্রো রেলের কর্তারা। আর সেই গলদের মাসুল গুনছেন যাত্রীরা। নিত্যদিনই গোলমাল লেগে থাকায় বাতানুকূল মেট্রো রেকগুলি যেখানে সেখানে আটকে যাচ্ছে। আর হয়রানি হচ্ছে যাত্রীদের।
বৃহস্পতিবারও ঘটেছে একই ঘটনা। অফিসের ব্যস্ত সময়ে একটি বাতানুকূল রেক প্ল্যাটফর্মে এনেও চালানো যায়নি। প্রায় ২৫ মিনিট ধরে প্ল্যাটফর্ম জুড়ে ট্রেনটি দাঁড়িয়ে থাকার পরে সেটিকে আবার মেরামত করে চালু করা হয়। তত ক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। প্রায় ২৫ মিনিট ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডাউন লাইনে দমদম থেকে পরপর স্টেশনগুলিতে থিকথিকে ভিড়।
মেট্রো সূত্রের খবর, এসি রেকটি আটকে যাওয়ায় মেট্রো-কর্তৃপক্ষ ডাউনে লাইনে পরপর তিনটি ট্রেন বাতিল করেন। দুপুর সওয়া ১২টার পরে ডাউন লাইনে বাতানুকূল রেকটি গন্তব্যে রওনা দেয়। ফলে ওই লাইনে ট্রেন দেরি করায় আপ লাইনেও পরপর তিনটি ট্রেন বাতিল করতে হয়। ফলে এ দিন ওই সময়ে যাত্রীরা প্রচণ্ড দুর্ভোগে পড়েন। মেট্রোর জনসংযোগ আধিকারিক প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, “প্ল্যাটফর্মে আনার পরে ট্রেনটিতে সামান্য গোলমাল দেখা দিয়েছিল। তাই দেরি হয়েছে।” |
কী ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি? প্রত্যুষবাবু জানিয়েছেন, ট্রেনে ‘ভ্যাকুয়াম’-এর চাপ বাড়ানো যাচ্ছিল না।
মেট্রোকর্তাদের একাংশের অভিযোগ, যে চারটি বাতানুকূল রেক আনা হয়েছে, তাতে তৈরির সময়েই প্রচুর ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। তাই রোজ রোজ এই সমস্যা। তাঁদের আরও দাবি, এই রেকগুলি তড়িঘড়ি নিয়ে আসা হয়েছিল। ফলে সময়ের অভাবে অনেক কিছুই ভাল করে দেখে নেওয়া যায়নি। তা ছাড়া, যেখানে ওই বাতানুকূল রেক তৈরি হয়, সেখানে পরীক্ষামূলক দৌড় করানো যায় না।
পেরাম্বুরের যে কারখানায় ওই রেকগুলি তৈরি হয়, সেখানে কলকাতা মেট্রোর মতো তৃতীয় রেল দিয়ে বিদ্যুৎ সরবারহ করা হয় না। ফলে কলকাতায় যে রেক চালানো হবে, তা সেখানে পরীক্ষা করা যায় না। ওই রেক তৈরির পরে এখানেই পরীক্ষা করতে হয়। ফলে, ত্রুটি থাকলেও তা পড়ে না। মেট্রোকর্মীদের একাংশের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ বিষয়গুলি জেনেও চুপ করে রয়েছেন। এ ব্যাপারে মেট্রো-কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |