কালাঝরিয়া জলপ্রকল্পে বিভিন্ন উন্নয়মূলক কাজের জন্য একটি দরপত্র ডাকা নিয়ে অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে আসানসোল পুরসভায়। এই অভিযোগ তুলে ঘটনার তদন্ত চেয়ে পুর কমিশনারের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান কংগ্রেসের শিবদাস চট্টোপাধ্যায়। অভিযোগ মনগড়া বলে দাবি করেছেন জল দফতরের মেয়র পারিষদ রবিউল ইসলামও।
আসানসোল পুরসভায় ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস ও তৃণমূল জোট। পুরসভার তৃণমূল চেয়ারম্যান জিতেন্দ্রবাবু দরপত্র ডাকার পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় জোটের মধ্যেই চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কালাঝরিয়া জল প্রকল্পটির কিছু উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রায় ৪৪ লক্ষ টাকার দরপত্র ডাকা হয়েছে। এই কাজগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল একটি ট্রান্সফর্মার বসানো, সাবমার্সিবল পাম্প থেকে বিদ্যুতের সাবস্টেশন পর্যন্ত কেব্ল বসানো, একটি নতুন সাবমার্সিবল পাম্প বসানো, একাধিক ওয়ার্ডে জলের পাইপ বসানো এবং কল লাগানো।
এই সব কাজের জন্য ডাকা দরপত্রের পদ্ধতি নিয়েই আপত্তি তুলেছেন তৃণমূল চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তাঁর অভিযোগ, টেন্ডার কমিটির তরফে দরপত্র ডাকার কোনও বিজ্ঞপ্তি তাঁর কাছে পাঠানো হয়নি। এমনকী দরপত্র ঝোলানোর নোটিস বোর্ডেও তা লাগানো হয়নি। জিতেন্দ্রবাবু আরও অভিযোগ করেন, ব্যক্তিগত কোনও স্বার্থেই গোপনে এই দরপত্র ডাকা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অবশ্য তিনি বলেন, “আমি কিছু বলব না। যা জানানোর, চিঠিতে জানিয়েছি।” জিতেন্দ্রবাবুর পাঠানো অভিযোগপত্র পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন আসানসোল পুরসভার কমিশনার বিশ্বজিৎ দত্ত। তিনি বলেন, “অভিযোগের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব। এর বেশি আপাতত কিছু বলা সম্ভব নয়।”
এ দিকে পুরো ঘটনা নিয়ে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে পুরসভার কাউন্সিলরদের মধ্যে। বেশ কয়েক জন তৃণমূল কাউন্সিলরের অভিযোগ, কালাঝরিয়া জলপ্রকল্পের এই উন্নয়নমূলক কাজগুলি অনেক আগেই পুর কর্তৃপক্ষ নিজেদের পছন্দসই ঠিকাদারকে দিয়ে করিয়ে নিয়েছে। এখন তারই লোক দেখানো দরপত্র ডাকা হচ্ছে।
দরপত্র ডাকার পদ্ধতিতে কোনও গলদ নেই বলে অবশ্য দাবি করেছেন টেন্ডার কমিটির চেয়ারম্যান শিবদাস চট্টোপাধ্যায়। তবে তিনি বলেন, “জিতেন্দ্রবাবু যদি সরাসরি এই অভিযোগ আনেন তবে আমরা দরপত্রগুলি বাতিল করে দেব।” পুরসভার জল দফতরের মেয়র পারিষদ কংগ্রেসের রবিউল ইসলামেরও দাবি, “ওঁর এই অভিযোগ মনগড়া।” আসানসোল পুরসভার মেয়র তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। |