|
|
|
|
কোচবিহারে সিপিএমের জোনাল সম্মেলন, ফব’কে তুলোধোনা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
লোকাল সম্মেলনের প্রতিবেদনে শরিকদলের সমালোচনা নিয়ে কোচবিহারে বাম অনৈক্য প্রকাশ্যে আসায় জোনাল সম্মেলনের প্রতিবেদনে নাম না-করে ফরওয়ার্ড ব্লকের তুলোধোনা করল সিপিএম। ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রধানদের সরাসরি কংগ্রেস ও তৃণমূল সমর্থিত পঞ্চায়েত প্রধান বলে তোপ দাগা হয়েছে। রবিবার দিনহাটার নৃপেন্দ্রনারায়ণ স্মৃতি পাঠাগারে সিপিএমের দিনহাটা-১ জোনাল কমিটির সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনের প্রতিবেদনে নাম না-করে ফরওয়ার্ড ব্লকের দখলে থাকা গোসানিমারি- ২, ভেটাগুড়ি- ১, দিনহাটা ভিলেজ- ২ এবং পুঁটিমারি- ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদের মহাজোটের প্রতিনিধি বলা হয়েছে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বেণুবাদল চক্রবর্তী বলেন, “ওই সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান নির্বাচনের সময় বামফ্রন্টের ঘোষিত নীতি মানা হয়নি। যতক্ষণ ওই প্রধানদের পরিবর্তন না হচ্ছে ততক্ষণ তাঁরা মহাজোটের প্রতিনিধি।” সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, দিনহাটার গোসানিমারি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১১টি আসনের মধ্যে সিপিএম ৫টি, ফরওয়ার্ড ব্লক ৫টি এবং কংগ্রেস ১ আসন দখল করে। ২০০৮ সালের ওই ফলাফলের নিরিখে বামফ্রন্টের সিদ্ধান্ত মেনে বোর্ড তৈরির কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ৬-৫ ভোটে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সিপিএম প্রার্থীকে পরাজিত করে। ভেটাগুড়ি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিএম এবং ফরওয়ার্ড ব্লক ৪টি করে আসন দখল করে। কংগ্রেস ১টি আসন পায়। প্রধান নির্বাচনে এখানেও ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী সিপিএম প্রার্থীকে ৫-৪ ভোটে পরাজিত করে। দিনহাটা ভিলেজ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিএম ৫টি, ফরওয়ার্ড ব্লক ৫টি, তৃণমূল ২টি আসন দখল করে। প্রধান নির্বাচনে ৭-৫ ভোটে জয়লাভ করে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী। পুঁটিমারি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৩টি আসনের মধ্যে ফরওয়ার্ড ব্লক ৩টি, সিপিএম ৫টি, কংগ্রেস ৫টি আসন দখল করে। সিপিএমকে পরাজিত করে প্রাধানের আসন দখল করে ফরওয়ার্ড ব্লক। সিপিএমের দিনহাটা-১ জোনাল কমিটির সম্মেলনের প্রতিবেদনের ৯ নম্বর পাতায় পঞ্চায়েত নির্বাচন ২০০৮ আলোচনায় লেখা হয়েছে ‘একদিকে সিপিএম। অন্যদিকে মহাজোট। আমাদের জোন এলাকার ক্ষেত্রে এটা ছিল অসম লড়াই। তৎসত্বেও কমরেডরা বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করেন। খুব সামান্য ভোটে কয়েকটি আসন হেরে যাওয়ায় ভেটাগুড়ি-১, ভেটাগুড়ি-২, পুঁটিমারি-১, দিনহাটা ভিলেজ-২ ওই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রশাসন হাতছাড়া হয়। গোসানিমারি-২, ভেটাগুড়ি-১, পুঁটিমারি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে, দিনহাটা ভিলেজ-২-তে তৃণমূলের সমর্থন নিয়ে মহাজোট প্রধান দখল করে।’ প্রতিবেদনের ১২ নম্বর পাতায় বিধানসভা নির্বাচন-২০১১ বিষয়ে আলোচনায় দিনহাটা কেন্দ্রে কংগ্রেস ও তৃণমূলের ছন্নছাড়া, দ্বিধা বিভক্ততার জন্য বাম প্রার্থীর জয় সহজ হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। সিতাই কেন্দ্রে বামেদের হারের জন্য প্রার্থী মনোনয়নে মতান্তরকে দায়ী করে নাম না-করে ফরওয়ার্ড ব্লককে কটাক্ষ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের ১৮ নম্বর পাতায় পঞ্চায়েত পরিচালনা অধ্যায়ে প্রার্থী মনোনয়নের সময় জয়লাভের সম্ভাবনা বেশি রয়েছে এটা বিচার করতে গিয়ে প্রার্থীর শ্রেণি দৃষ্টিভঙ্গি আছে কিনা সেটা চাপা পড়ে যাচ্ছে। দলের প্রধানদের ঘুরিয়ে মহাজোটের প্রধান বলায় ক্ষুব্ধ ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব। দলের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “সিপিএমের মুখে নীতি কথা মানায় না। প্রতিবেদন ভাল করে পড়ে ওই দলের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব।” পাশাপাশি উদয়নবাবু জানান, ফরওয়ার্ড ব্লকের ঘোষিত সিদ্ধান্ত ছিল যেখানে সম্ভব প্রধান পদে দল লড়াই করবে। তবে ডানপন্থীদের সমর্থন করবে না। কিন্তু কেউ সমর্থন করলে আপত্তি নেই।” এ দিকে কোচবিহারের খাগরাবাড়ি লোকাল কমিটির সম্মেলনে ফরওয়ার্ড ব্লকের নাম করে কড়া সমালোচনায় ভরা প্রতিবেদন বিলি করা হলেও সিপিএম জেলা নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তা প্রত্যাহার করে বিতর্কিত বক্তব্য কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই লোকাল কমিটির সম্পাদক সমীর ভট্টাচার্য প্রতিবেদনের বিষয়ে মুখ খোলেননি। কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “নজরে আসার পরে ফরওয়ার্ড ব্লক সম্পর্কে বিতর্কিত বক্তব্য বাদ দিয়ে প্রতিবেদন পেশ করা হয়েছে।” |
|
|
|
|
|