ব্যাঙ্কের গাড়ি থেকে ২০ লক্ষ টাকা লুঠ করে পালাল দুষ্কৃতীরা। নিরাপত্তা রক্ষী ছাড়াই গাড়িটি সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের জলপাইগুড়ির সদর অফিস থেকে হলদিবাড়ির শাখা কার্যালয়ে যাচ্ছিল। সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে জলপাইগুড়ির কোতোয়ালি থানার সর্দারপাড়ায়।
ওই ব্যাঙ্কের হলদিবাড়ি শাখার ম্যানেজার সুবীর চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের নিয়ম অনুযায়ী ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আনা-নেওয়া করার ক্ষেত্রে নিরাপত্তা রক্ষী রাখা হয় না। তার চেয়ে বেশি পরিমাণের টাকা হলে এক জন সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষী রাখা হয়। এ দিন সেভাবেই টাকা আনা হচ্ছিল।” পুলিশ অবশ্য ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষের যুক্তিতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার সুগত সেন বলেন, “দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। নিরাপত্তা রক্ষী ছাড়া এ ভাবে টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কেন, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” যে গাড়িতে টাকা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তার চালককে পুলিশ জেরা করছে। পাশাপাশি, লুঠের পিছনে অসমের কোনও জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে কি না, তা-ও পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই রাজ্য পুলিশের ডিজি নপরাজিত মুখোপাধ্যায় অসমে ঢোকার রাস্তায় প্রতিটি গাড়ি থামিয়ে তল্লাশির নির্দেশ দিয়েছেন। ডিজির নির্দেশে বিএসএফকেও বিষয়টি জানিয়ে সতর্ক করেছেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে হলদিবাড়ি শাখার দুই কর্মী জলপাইগুড়ি থেকে ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে রওনা হন। ধাপগঞ্জ পার হওয়ার পর একটি ইস্পাত রঙের ছোট গাড়ি ব্যাঙ্কের গাড়ির সামনে চলে আসে। কিছুক্ষণের মধ্যে ব্যাঙ্কের গাড়ির পিছনে পৌঁছে যায় দু’টি মোটরবাইক। শহর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে কোনপাকুড়ি সর্দারপাড়ায় সামনের গাড়িটি রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে পড়ে। ব্যাঙ্কের ছোট গাড়িটি থামতে বাধ্য হয়। তখনই পিছনের বাইক থেকে ৪ জন এবং সামনের গাড়ি থেকে ১ জন নেমে গিয়ে পিস্তল দেখিয়ে গাড়ির চালকের চাবি কেড়ে নেয়। গাড়ির পিছনের দরজা খুলে টাকা ভর্তি ট্রাঙ্ক এবং একটি ব্যাগ বের করে নেয় দুষ্কৃতীরা। টাকা ভর্তি ট্রাঙ্কটি একটি মোটরবাইকে বসিয়ে চম্পট দেয় তারা। |
গাড়িতে থাকা ব্যাঙ্কের দুই কর্মী সমরেশ ভট্টাচার্য, চন্দ্রমোহন রায় এবং গাড়ির চালক সফিকুল ইসলাম জানান, মোটর সাইকেলে ৫ জন দুষ্কৃতী ছোবারহাটের দিকে চলে যায়। ছোট গাড়িটি নিয়ে এক দুষ্কৃতী হলদিবাড়ির দিকে পালিয়ে যায়। সফিকুল জানান, গাড়ির সামনের আসনে তিনি এবং সমরেশবাবু বসে ছিলেন। পিছনের আসনে টাকা ভর্তি ট্রাঙ্ক এবং চন্দ্রমোহনবাবু ছিলেন। সফিকুল বলেন, “ছোট গাড়িটি গাড়িটি এমন ভাবে দাঁড়িয়ে পড়ল যে আমি যেতে পারছিলাম না। আচমকা পাঁচ জন আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে গাড়ির চাবি নিয়ে নেয়। পিছনের দরজা খুলে ট্রাঙ্ক বের করে নেয়।”
যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে তার একপাশে ফাঁকা মাঠ। কিছুটা দূরে জনবসতি থাকলেও তা গাছপালা দিয়ে ঢাকা। ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, “আমি দেখলাম কালো কাপড়ে মুখ ঢাকা কয়েকজন লোক গাড়ি থেকে একটি ট্রাঙ্ক বের করে মোটরবাইকে তুলছে। গায়ের জ্যাকেট দিয়ে ট্রাঙ্কটি ঢেকে ধাপগঞ্জের দিকে চলে যায় তারা। এক জনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।” |