কারণ: বনধে রাস্তায় না নামা
একাধিক রুটের বাস আটকানোর অভিযোগ
মাওবাদীদের ডাকা দু’দিনের বন্ধের সময় বাস না নামানোয় সোমবার পুরুলিয়া থেকে বলরামপুর হয়ে বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার একাধিক বেসরকারি আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। নিত্যযাত্রী ও বাসের মালিক-কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, এ দিন সকালের দিকে পুরুলিয়া-জামশেদপুর ৩২ নম্বর জাতীয় সড়কে বলরামপুর থানা এলাকার ছোট উরমা মোড়ে বেশ কিছু বাস আটকে দেন এলাকার তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
পুরুলিয়া জেলা বাস মালিক সংগঠন এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। শেষ পর্যন্ত জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর হস্তক্ষেপে মীমাংসা হয়। বাস আটকানোর অভিযোগ অবশ্য মানেননি শান্তিরামবাবু। তাঁর মতে, গোটা ঘটনাই ‘ভুল বোঝাবুঝি’।
বলরামপুর ছুঁয়ে বাঘমুণ্ডি, বরাবাজার, বান্দোয়ান বা ঝালদা পর্যন্ত যে-সব বেসরকারি বাস প্রতিদিন যাতায়াত করে, সেগুলির অধিকাংশই পথে নামেনি শনি ও রবিবার মাওবাদীদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার বন্ধের কারণে। এই দু’দিন ওই রুটের দূরপাল্লার বাস অবশ্য যথারীতি রাস্তায় নেমেছিল। বন্ধ ব্যর্থ করতে মিছিল করে তৃণমূলও। ওই দু’দিন বলরামপুরে জনজীবন স্বাভাবিক থাকলেও স্থানীয় রুটের বেসরকারি বাস পরিষেবা বন্ধ ছিল। এ দিন সকালে ছোট উরমা মোড়ে পুরুলিয়া-ঝালদা, পুরুলিয়া-বরাবাজার, পুরুলিয়া-বান্দোয়ান সহ বেশ কিছু রুটের একাধিক বাস তৃণমূল আটকে দেয় বলে অভিযোগ।
ভুক্তভোগী এক যাত্রী বলেন, “আমাদের তৃণমূলের লোকজন বলে দেয়, ‘আপনারা যেতে পারেন। বাস আর যাবে না’। কেন যাবে না, খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, মাওবাদী বন্ধের দিনে যেহেতু এই বাস চলেনি, তাই বাস আটকে দেওয়া হয়েছে।” পুরুলিয়া-বরাবাজার রুটের একটি বেসরকারি বাসের মালিক বলেন, “আমি এ দিন আমার বাসেই বসেছিলাম। ছোট উরমায় বাস আটকে তৃণমূলের কর্মীরা বলল, বন্ধের সময় বাস না চলায় এ দিনও চলবে না। বাধ্য হয়ে বাস থামাতে হল। যাত্রীদের প্রচণ্ড হয়রানি হয়েছে।”
বাঘমুণ্ডির বাসিন্দা অরুণ কৈবর্ত সিকিমে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন। পুরুলিয়া স্টেশন থেকে বর্ধমানগামী ট্রেন ধরে সেখান থেকে দার্জিলিং মেলে তাঁর যাওয়ার কথা ছিল এ দিন। অরুণবাবু বলেন, “বাস বলরামপুরে পৌঁছনোর আগেই শুনি বাস আটকে দেওয়া হচ্ছে উরমা মোড়ে।” অরুণবাবুর মতো একাধিক যাত্রী বাসটি অন্য রুট দিয়ে পুরুলিয়া নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেন। অরুণবাবুর কথায়, “বাসটি বরাবাজারের বামুনডিহা হয়ে ঘুরপথে পুরুলিয়া পৌঁছয়। কোনও রকমে বর্ধমানের ট্রেন পেয়েছি।” জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের ক্ষোভ, সংগঠন কোনও বাসকে রাস্তায় নামতে বাধ্য করতে পারে না। তা ছাড়া, সব বন্ধেই বেসরকারি স্থানীয় বাস বন্ধ থাকে। কিন্তু তৃণমূল স্রেফ এই কারণে কেন বাস আটকাল, তার যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা মিলছে না।
সিপিএমের বলরামপুর জোনাল কমিটির সদস্য ত্রিলোচন দাস বলেন, “আমরা যখন ক্ষমতায় ছিলাম, তখনও বহুবার মাওবাদী বন্ধ হয়েছে। আমরাও বন্ধ ব্যর্থ করতে সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু সেই সময়ও বেসরকারি বাস রাস্তা নামেনি। তা বলে এ ভাবে বাস আটকে দিয়ে মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলিনি। আজ তৃণমূল ওই কাজ করে গণতন্ত্র বিরোধী কাজ করল।” বাস মালিক সংগঠনের জেলা সভাপতি প্রতিভারঞ্জন সেনগুপ্তের কথায়, “এ দিন বিভিন্ন রুটের ১৮-১৯টি বাস আটকানো হয়। আমাদের কাছে বিভিন্ন বাসের মালিকেরা অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। তখন আমরা শান্তিরামবাবুকে সমস্ত ঘটনা বলি। দুপুরের পরে অবশ্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায়।”
শান্তিরামবাবুর অবশ্য দাবি, “একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বাস মোটেই আটকানো হয়নি। বাস থামিয়ে আবেদন করা হচ্ছিল যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতিতে যাত্রিবাহী বাস চালানো হয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.