অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের সঙ্গে বিবাদের জেরে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ খেলার মাঠে ঘেরাও করে রাখলেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। সোমবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার বাদুড়িয়া থানার কাটিয়াহাট ফুটবল মাঠে। বিক্ষোভের জেরে ছাত্রছাত্রীদের বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বাদুড়িয়া পূর্বচক্রের অধীন ৭৪টি প্রাথমিক ও নিম্ন বুনিয়াদি এবং ২০টি শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের ছাত্রছাত্রীদের বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। খেলা পরিচালনায় ছিলেন শ’দুয়েক শিক্ষক-শিক্ষিকা। প্রতিযোগিতার শেষে মঙ্গলবার স্কুলে ছুটি ঘোষণা করার কথা বলেন তাঁরা। অভিযোগ, সে কথা শুনে হঠাৎই খেপে ওঠেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক সত্যজিৎ মণ্ডল। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্দেশে তিনি কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। ‘অপমানিত’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা মাঠের মধ্যেই সত্যজিৎবাবুকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন।
ইতিমধ্যে, পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অভিভাবক ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যোগদানকারী পড়ুয়ারাও অশান্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে সন্ধ্যে সাড়ে ৬টা নাগাদ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। শিক্ষকদের পক্ষে দীপঙ্কর সরকার, গণেশ ঘোষ বলেন, “ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পর দিন ছুটি দেওয়াটা নিয়মের মধ্যে পড়ে। সেই কারণেই ছুটি চাওয়া হয়েছিল। ছুটির কথা শুনে উনি আমাদের ‘আনাড়ি’ বলে অপমান করলেন। আগেও এ ধরনের কথা উনি বলেছেন।”
অন্য দিকে, সত্যজিৎবাবুর বক্তব্য, আগে অনেক স্কুল পঞ্চায়েত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য ছুটি নিয়েছে। তারা বাদে বাকিদের ছুটি দেওয়া হবে বলা হয়েছিল। তাতেই উত্তেজিত হয়ে ওঠেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তখন কথার কথা হিসাবেই আনাড়ি শব্দটি ব্যবহার করেছিলাম। কাউকে আঘাত দেওয়ার জন্য ও কথা বলিনি। তারই জেরে আমাকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হল।”
সত্যজিৎবাবুর বক্তব্য, বিক্ষোভের জেরে বাধ্য হয়ে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়। সে জন্য সকলের কাছে তিনি ‘ক্ষমা’ও চেয়ে নেন বলে জানিয়েছেন। বিদ্যালয় পরিদর্শকের কথায়, “অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসাবে আমার একটা দায়িত্ব আছে। যে ভাবেই হোক সফল প্রতিযোগীদের বাড়িতে পুরস্কার পাঠিয়ে দেব।” |